নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝালকাঠি, ৬ জানুয়ারি ॥ নলছিটিতে চুরির অপবাদে সেলিম বেপারি (২০) নামে এক যুবককে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে ২০ ঘণ্টা আটকে রেখে সাবেক এক ইউপি সদস্য রাতভর নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় পুলিশ গিয়ে নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষ থেকে নির্যাতিত ওই যুবককে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য নান্না মিয়ার ভাই নজরুল ইসলাম চুন্নুর একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার বিষখালী নদীর তীর থেকে চুরি হয়। রবিবার বিকেলে সদর উপজেলার দেউরী গ্রামে বিষখালী নদীর তীর থেকে ট্রলারটিসহ সেলিম বেপারি নামে এক যুবককে আটক করে নান্না মিয়া, তার ভাই চুন্নু ও তাদের সহযোগীরা। যুবককে আটক করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে তাকে নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রেখে রাতভর লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ওই যুবক। খবর পেয়ে নলছিটি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজ কক্ষের তালা ভেঙ্গে যুবককে উদ্ধার করে। আহত সেলিম বেপারি নলছিটির ভবানীপুর গ্রামের সুলতান বেপারির ছেলে।
মারধরের কথা অস্বীকার করে নান্না মিয়া বলেন, চুরি করার অপরাধে তাকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তাকে এ পরিষদের কটি কক্ষে রাখা হয়। রাতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কারা তার সঙ্গে আছে। সে কারও নাম বলেনি। সকালে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, চুরির সকল তথ্য প্রমাণসহ এক যুবককে পরিষদে নিয়ে আসা হয়। আমি রাতে তাকে পরিষদেই রাখতে বলেছি। ছেলেটা নেশা করে মনে হয়। চুরির সঙ্গে জড়িত অন্য কারও নাম বলেনি সে। কিন্তু আমার বিশ্বাস এ ঘটনায় আরও লোকজন জড়িত। এই চক্রটি বের করার জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। পরে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। আটক যুবকের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
নলছিটি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজ জানান, সেলিমকে চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল হালিম তালুকদার বলেন, আমরা রাতেই খবর পেয়েছি। তাকে পরিষদে রাখা হয়েছিল, সকালে গিয়ে পুলিশ নিয়ে আসে। আটক যুবকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
