ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোংলা ইপিজেডে বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ গুণ

১০ বছরে রফতানি বেড়েছে ১৬ গুণ

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ৭ জানুয়ারি ২০১৯

 ১০ বছরে রফতানি বেড়েছে ১৬ গুণ

আহসান হাবিব হাসান, মোংলা ॥ মোংলা ইপিজেডে গত ১০ বছরে ১৬ গুণ রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনিয়োগ বেড়েছে ১১ গুণ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার মানুষের। বিগত দশ বছরে আমূল পরিবর্তন হয়েছে মোংলা ইপিজেডের। বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়া অঞ্চল বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৯৮ সালে ২৮৯ একর জমির ওপর মোংলা ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। এরপর বিগত দশ বছরে এ ইপিজেডের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ইপিজেডের কারণেই মোংলা বন্দর সচল হয়েছে। ইপিজেডের ১৯২ শিল্প প্লটের মধ্যে ১৬৫টি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে ১২৮ কারখানা বর্তমানে চালু আছে। ১৫টি কারখানা চালু হওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইপজেডে বর্তমানে সাড়ে ৪ হাজার নারী-পুরুষ কর্মরত আছেন। ২০০৮ সালে মোংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ হয়েছিল ৪৫ কোটি টাকা, আর ২০১৮ সালে বিনিয়োগ হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা। বিগত দশ বছরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ গুণ। ২০০৮ সালে ইপিজেড থেকে রফতানি হয়েছিল ২৯৫ কোটি টাকার পণ্য। ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়েছে। রফতানি বৃদ্ধির হার বেড়ে এখন ১৬ গুণে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও জানান, আগে মোংলা এলাকার অর্থনীতি ছিল কৃষি (ধান) ও মাছ নির্ভর। এখন ওয়ার্কাররা টয়োটা গাড়ির হিটিং প্যাড, ভিআইপি লাগেজ ব্যাগ, নর্থ আমেরিকার টাওয়েল, ফ্যাশন উইক, পাটজাত পণ্য, সুপারি পণ্য, মার্বেল পাথর সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত আছেন। এসব পণ্য ভারত, চীন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডস, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোংলা-রামপালের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক জনকণ্ঠকে বলেন, মোংলা বন্দরের আশপাশে যাতে শিল্পায়ন হয়, বন্দর যাতে গতিশীল হয় সেই বিবেচনায় ১৯৯৮ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোংলা ইপিজেডের কার্যক্রম শুরু করেন। ২০০১ সাল বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইপিজেড ও বন্দর অচল হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আবারও ইপিজেড এবং বন্দর সচল হয়। এখন ৪/৫ হাজার নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে এ ইপিজেডে। এই অঞ্চলের জন্য ইপিজেড অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে এ অঞ্চল আলোকিত হবে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ট্রাফিক ম্যানেজার মোঃ সোহাগ জনকণ্ঠকে বলেন, মোংলা ইপিজেড সৃষ্টি করা হয়েছিল মোংলা বন্দর সচল করার জন্যই। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ইপিজেডে খালি প্লট খুবই কম। ইপিজেডে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়েছে। কাঁচামাল মোংলা বন্দর দিয়ে আনা-নেয়া হচ্ছে। এর ফলে মোংলা বন্দরের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচএম দুলাল জনকণ্ঠকে বলেন, ইপিজেডে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইপিজেড়ের কারণে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। মোংলা ইপিজেডে কর্মরত নারী শ্রমিক রাবেয়া বেগম জনকণ্ঠকে বলেন, আগে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হতো। স্বামীর আয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালানো যেত না। এখন আমি ইপিজেডে কাজ করি, দশ হাজার টাকা বেতন পাই। আমার এবং স্বামীর দুইজনের আয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া-জামা-কাপড় এবং দৈনন্দিন বাজারের সব খরচ পূরণ করতে পারছি।
×