ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিল্পকলায় বঙ্গলোকের ‘মর্তের অরসিক’ নাটকের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

শিল্পকলায় বঙ্গলোকের ‘মর্তের অরসিক’ নাটকের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের নাট্যাঙ্গনের অন্যতম চমক লাগানো তারুণদীপ্ত নাট্য সংগঠন বঙ্গলোক। এ সংগঠনের দ্বিতীয় এবং প্রশংসিত প্রযোজনা ‘মর্তের অরসিক’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় স্টুডিও থিয়েটার হলে নাটকটির ১৭তম মঞ্চায়ন হলো শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায়। তরুণ নির্দেশক শামীমা শওকত লাভলীর রচনা ও নির্দেশনায় ‘মর্তের অরসিক’ নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- রবিন বসাক, তানভীর হোসেন সামদানী, রাজীব রাজ, সিনথিয়া রহমান, শীষ, মোঃ রাসেল রানা (দোজা), শাহরান খান, উচ্ছ্বাস কুমার ঘোষ, অমিত আচার্য্য হিমেল এবং শামীমা শওকত লাভলী। ‘মর্তের অরসিক’ নাটকের মূল উপজীব্য সমসাময়িক অসঙ্গতি। দেশজ নাট্যধারায় নির্মিত এ নাটকের গল্পে দেখা যায় আপসহীন গোকুলনাথ, অনেক কষ্টে একটি চাকরি জোগাড় করতে পারলেও সত্যে অনড় থাকার কারণে চাকরিটা হারাতে হয়। জীবন সংগ্রামে গোকুল যখন হতাশাগ্রস্ত তখন রবিঠাকুরের কাছ থেকে স্বর্গে যাওয়ার প্রস্তাব পায়। শর্ত থাকে এই স্বর্গের সমস্ত তথ্য সে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জোগাড় করে আনবে, যার ভিত্তিতে তিনি লেখা তৈরি করবেন। মেঘের পালকিতে চড়ে গোকুলনাথ স্বর্গে পৌঁছায়। স্বর্গের রূপ দেখে বিমোহিত হয়ে পড়লেও সেখানকার অনিয়ম দেবতাদের স্বেচ্ছাচারিতা মেনে নিতে পারে না। স্বর্গের আরাম আয়েশে গা ভাসিয়ে না দিয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে সে উপলব্ধি করে যুগ যুগ স্বর্গ সস্পর্কে আমরা যা শুনেছি তা একই স্থানে স্থির হয়ে আছে। সে আরও বুঝতে পারে পৃথিবী প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে যার চাবিকাঠি মানুষের হাতে। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় পৃথিবীতেই সে ফিরে যাবে এবং পৃথিবীর পরিবর্তনের রূপকারদের সঙ্গে যোগ দেবে। এমনই ঘটনাচক্রে গড়ে উঠেছে বঙ্গলোকের নাটক ‘মর্তের অরসিক’। নাটকটি প্রসঙ্গে নাট্যকার ও নির্দেশক শামীমা শওকত বলেন, ২০১২ সাল। দেশে তখন গুম, খুনের তা-ব চলছে। শেয়ারবাজার ধসের কারণে কত মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে, আত্মহত্যা করেছে কেউ কেউ, এর কোন সুরাহা হয়নি। লাগামহীন পণ্য মূল্যের উর্ধগতি, ট্রাফিক জ্যাম, লোডশেডিং, গ্যাস না থাকা, সব মিলিয়ে শহরবাসীর জীবনবাস দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। এই প্রেক্ষাপটে বেছে নিলাম ব্যাঙ্গকৌতুক ‘অরসিকের স্বর্গপ্রাপ্তি’। ব্যাঙ্গকৌতুকটিকে সমসাময়িক করার চেষ্টা করেছি। আমি কৃতজ্ঞ আরণ্যকের ৮ম ব্যাচের সকলের কাছে। এরপর যখন দেশে শুরু হলো ব্লগার হত্যা এবং নাস্তিকতা নিয়ে হুল্লোড়, মানবতাবোধকে গলাটিপে হত্যার ষড়যন্ত্র, দেশব্যাপী মৌলবাদের উত্থান, আমার মনে হলো ‘মর্তের অরসিক’ এই প্রেক্ষিতে যথাপোযুক্ত নাটক। সমসাময়িকতাই এই নাটকের মূল উপজীব্য।
×