অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হয়েছেন নতুন জাহাজ ‘এমভি বাংলার অর্জন’। গত ৩০ ডিসেম্বর চীন থেকে জাহাজটি বিএসসির পরিচালনায় ‘স্টিল বার’ পরিবহনের জন্য কোরিয়ার ইনসন বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সেখান থেকে পণ্য বোঝাই শেষে জাহাজটি যাবে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বন্দরে। ‘বাংলার অর্জন’ জাহাজে মাস্টার শেখ সাদি আহমেদের নেতৃত্বে বিএসসির ৩৩ জন কর্মকর্তা ও নাবিক রয়েছেন।
এ নিয়ে বিএসসির বহরে যুক্ত হলো তিনটি খোলা পণ্যবাহী (কার্গো) সমুদ্রগামী জাহাজ। এর আগে যুক্ত হয়েছিল নতুন জাহাজ ‘এমভি বাংলার জয়যাত্রা’ ও ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’। বর্তমানে জাহাজ দুইটি পণ্য নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকায় রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই বহরে যুক্ত হবে অয়েল ট্যাংকার ‘এমটি বাংলার অগ্রযাত্রা’।
বিএসসির নির্বাহী পরিচালক (কারিগরি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, ‘বাংলার অর্জন’ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ‘এমটি বাংলার অর্জন’ জাহাজটি আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এরপর কয়েকদিন সি-ট্রায়াল দেয়া হয়। সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর জাহাজটি কোরিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। তিনি জানান, নতুন তিনটি জাহাজ থেকে দৈনিক বিএসসির আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ডলার।
বিএসসি সূত্র জানায়, ‘এমভি বাংলার জয়যাত্রা’ নামের নতুন পণ্যবাহী জাহাজটি ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) বিএসসিকে বুঝিয়ে দেয়। এরপর ১০ অক্টোবর বুঝিয়ে দেয়া হয় ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি। চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় ১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএসসি’র জন্য জাহাজগুলো নির্মাণ করছে চীনের জিয়াংশু নিউ ইয়াংজি শিপবিল্ডিং কোম্পানি লিমিটেড। এর মধ্যে চীন সরকার দিচ্ছে ১ হাজার ৪৪৮ কোটি এবং বিএসসি দিচ্ছে ৩৯৫ কোটি টাকা। সব জাহাজই ৩৯ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার (ডিডব্লিউটি)।
‘জয়যাত্রা’ চীন থেকে বাংলাদেশে খালি না এনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজায়রা বন্দর থেকে একাধিক আমদানিকারকের ৩৭ হাজার ৫০০ টন নুড়ি পাথর নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। সেখানে থাকা অবস্থায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাহাজটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেটি ভারতের অন্ধপ্রদেশের কাকিনাড়া বন্দরে যায়, সেখান থেকে চাল নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার আবিদজান বন্দরে পৌঁছায়।
‘সমৃদ্ধি’ ডেলিভারি নেয়ার পর চীন থেকে স্টিলজাতীয় পণ্য নিয়ে মালয়েশিয়ার সামালাজো বন্দরে পৌঁছে। এরপর সেটি থাইল্যান্ডের কোচিন বন্দর চাল লোডের জন্য চলে আসে। চাল নিয়ে জাহাজটিও পশ্চিম আফ্রিকায় চলে যায়। ছয়টি নতুন জাহাজের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বিএসসির বহরে যুক্ত হবে ‘এমটি বাংলার অগ্রযাত্রা’, ‘এমটি বাংলার অগ্রদূত’ ও ‘এমটি বাংলার অগ্রগতি’।
২০১৮ সালের আগে বিএসসির বহরে জাহাজ যুক্ত হয়েছিল ১৯৯১ সালে ‘এমভি বাংলার শিখা’। নতুন তিনটি জাহাজের বাইরে বিএসসির বহরে রয়েছে দুইটি অয়েল ট্যাংকার। ‘এমটি বাংলার জ্যোতি’ ও ‘এমটি বাংলার সৌরভ’ নামের ট্যাংকার দুইটি ১৯৮৭ সালে নির্মিত হয়েছিল ডেনমার্কে। ট্যাংকার দুইটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমান বড় ট্যাংকার থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে পতেঙ্গার বিভিন্ন ডিপোতে নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: