ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিবিএসে সিসির বক্তব্য প্রচার নিয়ে বিতর্ক

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

সিবিএসে সিসির বক্তব্য প্রচার নিয়ে বিতর্ক

সিবিএস টেলিভিশন নেটওয়ার্ক জানিয়েছে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসির একটি সাক্ষাতকার প্রচার না করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মিসরীয় রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ উপেক্ষা করেছে তারা। সাক্ষাতকারের একপর্যায়ে সিসি নিশ্চিত করেন যে মিসরীয় সেনাবাহিনী সিনাই পর্বতমালায় জঙ্গীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইলী বাহিনীর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। বিবিসি। ২০১৩ সালে মিসরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে চালানো সহিংস অভিযানকেও সমর্থন করেন সিসি। মিসরে কোন রাজনৈতিক বন্দী থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। সিবিএস জানিয়েছে সাক্ষাতকারটি রেকর্ড করার কিছুক্ষণ পরই তাদেরকে অনুরোধ করা হয় যেন সেটি প্রচার না করা হয়। তবে এ বিষয়ে তৎক্ষণাৎ কোন মন্তব্য করেনি মিসর সরকার। সিসির সঙ্গে সাক্ষাতকারের অনুলিপি প্রকাশ না করলেও সিবিএস বলেছে, ২০১৩ সালে সিসির নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সেই অভিযানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসা মোহাম্মদ মোরসির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, সেই অভিযানকে সমর্থন করেছেন সিসি। ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট নিরাপত্তা রক্ষীদের দ্বারা কায়রোর রাবা আল-আদাউইয়া স্কয়ার ও নাহদা স্কয়ারে বিক্ষোভরত মানুষকে ছত্রভঙ্গ করার সময় ৯শ’র বেশি মানুষ মারা যায়। দুইদিন পর রামসেস স্কয়ারে মারা যায় আরও ১২০ জন। সে সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সিসিকে সিবিএস জিজ্ঞাসা করে যে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছোড়ার নির্দেশ তিনিই দিয়েছিলেন কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘৪০ দিনের বেশি সময় ধরে সেখানে হাজার হাজার সশস্ত্র বিক্ষোভকারী অবস্থান নিয়েছিল। আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করার সব ধরনের শান্তিপূর্ণ পদ্ধতি চেষ্টা করেছি।’ এই ঘটনা সম্পর্কে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে সেখানে কিছু সশস্ত্র মানুষ ছিল, আর বিক্ষোভ দমনের পদ্ধতি দেখে ধারণা করা যায় যে ওই সহিংসতা পূর্ব-পরিকল্পিত ছিল এবং এটিকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। ২০১৩ সাল থেকে মিসরে অন্তত ৬০ হাজার মানুষকে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে আটকে রাখা হয়েছে- এই প্রশ্নের জবাবে সিসি বলেন, ‘আমি জানি না তারা এই সংখ্যা কোথা থেকে পেল। যখনই সংখ্যালঘু কোন গোষ্ঠী তাদের চরমপন্থী মতবাদ সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে তখনই আমরা তাদের দমন করি।’ সিবিএস কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘দ্য সিক্সটি মিনিটস’ নামের অনুষ্ঠানটির কর্মীদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মিসরীয় রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয় যেন সেটি প্রচার না করা হয়। কিন্তু সিবিএস রবিবার রাতে অনুষ্ঠানটি প্রচার করবে বলে জানিয়েছে। রাষ্ট্রদূতের নাম প্রকাশ না করলেও সিবিএস বলেছে সরকারবিরোধী মতবাদে বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে মিসরে যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়, ওই ধরনের খবর ‘প্রচারিত হোক তা সিসির সরকার চায় না।’ ইসরাইলের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করার খবরটিও মিসরে বিতর্ক তৈরি করতে পারে। ১৯৭৯ সালে শান্তিচুক্তি করার আগে চারটি যুদ্ধ হয় মিসর ও ইসরাইলের মধ্যে।
×