ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএলের শুরুতেই তারার মেলা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

 বিপিএলের শুরুতেই তারার মেলা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) ষষ্ঠ টি২০ আসর। এবারের আসরে সবচেয়ে বড় আকর্ষণের নাম অস্ট্রেলিয়ার দুই ক্রিকেটার স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার একেবারে শুরু থেকেই মাঠে নামবেন। কারণ গত মার্চে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং কা-ে জড়িয়ে এ দু’জন হয়েছেন এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ। ওয়ার্নার সিলেট সিক্সার্সের অধিনায়ক হিসেবেই খেলবেন, আর সাবেক অসি অধিনায়ক স্মিথ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে নামবেন মাঠে। এছাড়া আরেকটি বড় নাম দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলতে আসবেন কয়েকদিন বাদেই। আজ আসছেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। এ কয়েকজন এবার বিপিএলকে বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। এমনটা বলছেন অন্য তারকা ক্রিকেটাররাই। অন্য তারকাদের মধ্যে ইতোমধ্যেই এসেছেন ইংল্যান্ডের এ্যালেক্স হেলস ও ইয়ান বেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরন পোলার্ড, নিকোলাস পুরান, এভিন লুইস, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন ও আন্দ্রে ফ্লেচার, পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ ইরফান, দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির ও রাইলি রুশো, নেপালের সন্দ্বীপ লামিচান, আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শাহজাদ ও হল্যান্ডের রায়ান টেন ডয়েশ্চেট। এছাড়া জিম্বাবুইয়ের একঝাঁক তারকা ক্রিকেটার যোগ দিয়েছেন আগেভাগেই। এর আগে বিপিএলে সাম্প্রতিক ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী দারুণ জনপ্রিয় কিংবা বড় মাপের ক্রিকেটার খুব কমই এসেছেন। এবার সেটার ব্যতিক্রম। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচিত অস্ট্রেলিয়ার দুই নিষিদ্ধ ক্রিকেটার স্মিথ ও ওয়ার্নার শুরু থেকেই যোগ দিয়েছেন এবারের আসরে। এ বিষয়ে রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, ‘আগেরবার যারা এসেছে তার থেকে গুণগত মানসম্পন্ন এবং বিশ্বক্রিকেটের ইনফর্ম খেলোয়াড়রা এই মুহূর্তে আছে। তো হয়তো বা টুর্নামেন্টের গ্রাফটা ওপরের দিকে যাবে আশা করছি।’ ঢাকা ডায়নামাইটসের অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলও এ বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী। তিনি মনে করছেন এতে করে এবারের বিপিএল হয়ে গেছে ‘স্পেশাল’ কিছু। তিনি বলেন, ‘খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে। এই ছেলেগুলো (স্মিথ, ওয়ার্নার. ভিলিয়ার্স) টুর্নামেন্টে বিশেষ কিছু ব্যাপার টেনে এনেছে। দিনশেষে তারা মানুষ, তবে তারা বিশেষ কিছু। বিশেষ করে এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং ডেভিড ওয়ার্নার- আমরা সবাই জানি তারা কতটা ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠতে পারেন। ভিলিয়ার্স কিংবা ওয়ার্নারের ব্যাটিং যত দীর্ঘ হবে ততই ক্ষতিসাধন করবে তারা। এই ধরনের ছেলেদের বিরুদ্ধে খেলার জন্য আমাদের কিছু চরম পরিকল্পনা নিতে হবে এবং কিছুটা বাড়তি কৌশলী হতে হবে। এই ছেলেগুলো এই টুর্নামেন্টের জন্য খুবই ভাল।’ এছাড়া ইংল্যান্ডের বিধ্বংসী ওপেনার এ্যালেক্স হেলস শুরু থেকেই যোগ দিয়েছেন রংপুরে। তার সঙ্গে প্রোটিয়া তারকা রুশোও যোগ দিয়ে রংপুরের ব্যাটিং বিভাগকে অন্য যে কোন দলের জন্য ভয়ঙ্কর করে তুলেছেন। কারণ এই দলটিতে আজই যোগ দেবেন ক্যারিবীয় ওপেনার গেইল। কয়েকদিন বাদেই আসবেন ভিলিয়ার্স। সবমিলিয়ে ব্যাটিং শক্তিতে টি২০ ফরমেটে এবার অন্য দলগুলোর চেয়ে সেরা রংপুর। আবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই দল গড়েছে তারা মাশরাফির নেতৃত্বে। মাশরাফিও মনে করছেন ব্যাটিং বিভাগের সঙ্গে স্থানীয়দের বোলিংটা জ্বলে উঠলে দারুণ কিছু করা সম্ভব হবে। কুমিল্লায় স্মিথের সঙ্গে আছেন ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস। ব্যাট হাতে ভয়ঙ্কর এ ওপেনার আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটে দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তার স্ট্রাইকরেট ১৬৩.৭৫। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে ৮৯ রানের বিধ্বংসী একটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ দলটিতে পরবর্তীতে যোগ দেবেন শাহীন শাহ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক ও থিসারা পেরেরার মতো টি২০ স্পেশালিস্টরা। ঢাকা ডায়নামাইটসে ইতোমধ্যেই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার নারাইন, পোলার্ড ও রাসেল যোগ দিয়েছেন। ইংলিশ টপঅর্ডার ইয়ান বেলও যোগ দিয়েছেন। শুধু খুলনা টাইটান্স ও চিটাগং ভাইকিংস কিছুটা তারকাশূন্য। খুলনায় বিদেশীদের মধ্যে বড় তারকা শ্রীলঙ্কার পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। তিনিও যোগ দেবেন পরে। ইতোমধ্যেই অবশ্য ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কার্লোস ব্রেথওয়েট যোগ দিয়েছেন এবং জিম্বাবুইয়ের তারকা ব্রেন্ডন টেইলর এসেছেন। আর চিটাগংয়ে আফগান বিধ্বংসী ওপেনার শাহজাদ ছাড়া জিম্বাবুইয়ের সিকান্দার রাজাই বড় বিদেশী তারকা। কিন্তু সিলেটে ওয়ার্নারের সঙ্গে ফ্লেচার ও পুরান ছাড়াও আছেন নেপালের বিস্ময় বালক লামিচান। মেলবোর্ন স্টারসের হয়ে বিগব্যাশ খেলা ১৮ বছর বয়সী এ লেগস্পিনার ইতোমধ্যেই সিলেটে যোগ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ লেগস্পিনার তাহিরের সঙ্গে। রাজশাহী কিংস সবচেয়ে কম বয়সী অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছে। তার দলে বিদেশী তারকাদের মধ্যে হাফিজ ও ডাচ ডয়েশ্চেট। তবে দলের কোচ ল্যান্স ক্লুজনার বলেছেন, ‘উপমহাদেশ থেকে বেশ কিছু খেলোয়াড়ের সংমিশ্রণে আমাদের দল গড়ে উঠেছে এবং তাদের নিয়ে আমরা সবকিছু ঠিকঠাক করে নেয়ার চেষ্টা করতে পারব। আমাদের খুব কম পরিমাণে বাইরে থেকে এসেছে (খেলোয়াড়)। আশা করছি এটাই আমাদের জন্য ভাল পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে, কারণ আমার মনে হয় যারা আছে তাদের এই কন্ডিশনে খেলার মতো যথেষ্ট ভাল জ্ঞান আছে। আমাদের খুব ভাল বোলিং আক্রমণ আছে। শুধু সঠিক সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়াটাই আসল। আমাদের প্রচুর পরিমাণে বৈচিত্র্য আছে এবং এটাই আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধাজনক কিছু।’
×