ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

 সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণ

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কেসি রোড হয়ে একটু এগুলেই সবার চোখে পড়বে বিস্তীর্ণ জমি জুড়ে সরিষার আবাদ। হলুদে হলুদে ছেয়ে আছে জমি। যে দিকে তাকাবেন শুধুই সরিষা ফুলের সমারোহ। ফসলের মাঠে হলুদের সমারোহের এ এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। সরিষা ফুলে আকৃষ্ট হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছির দল। সরিষার জমিতে যেন মৌমাছিদের গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে। আর সেই সরিষা থেকে মধু আহরণে ছুটে এসেছেন বেশ কয়েকজন মৌচাষী। প্রাকৃতিক ভাবে সরিষার ফুলের মধু আহরণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৌচাষীরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে মধু উৎপাদনে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানে আগত মৌচাষীরা। জেলার শ্রীনগর উপজেলার কেসি রোডের দুই পাশেই সরিষা আবাদের বিস্তীর্ণ জমিতে মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরিষা ফুলের গন্ধে মৌমাছির দল গুঞ্জন করে চলেছে। সরিষা ফুলের হলুদের চোখ ধাঁধানো সেই দৃশ্য পথচারীকেও আকৃষ্ট করছে। সরিষা ফুলের গন্ধে মধু আহরণে কেসি রোডে ছুটে এসেছেন সাতগাঁও গ্রামের মৌছাষি মতি মিয়া। তিনি জানান, এখনই সরিষা ফুলের মৌমাছি থেকে মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। তাই এখন মধু সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছেন মৌচাষীরা। এবার সরিষা আবাদ ভাল হওয়ায় মধু আহরণও ভাল হবে। তাই তারা লাভের আশায় বুক বেঁধে আছেন। সরিষা চাষের পাশাপাশি মধু চাষীরাও লাভবান হচ্ছেন। উপজেলায় ভাল জাতের সরিষা আবাদ করা হচ্ছে। তার পাশাপাশি সরিষা ফুল থেকে ভাল মানের মধু চাষ করছে মধু চাষীরা। উপজেলায় এমন কয়েকজন মধু চাষী রয়েছেন। উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের সাতগাঁও, দয়হাটা মজিদপুর, ছয়গাঁও, কুকুটিয়ার পশ্চিম নওপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চাষীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এ বছর সরিষার আবাদ খুব ভাল হয়েছে। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তাছাড়া মধু উৎপাদনও ভাল। সরিষা চাষী খাইরুল ইসলাম, আবুল মিয়া, কাসেম, ইদ্রিস আলীসহ অনেকে বলেন এ বছর সরিষার আবাদ ভাল হয়েছে। সরিষা আবাদের জন্য সরকারীভাবে সরিষার বীজ ও সার পেয়েছি। আসা করছি বাম্পার ফলন হবে। তারা আরও জানান আমাদের সরিষা চাষের পাশাপাশি মধু চাষীরা ও বিভিন্ন জমির পাশে অস্থায়ীভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৌমাছির মাধ্যমে সরিষা ফুল থেকে মধু উৎপাদন করতে পারছেন। আলহাজ নূর-ইসলাম জানান, এবার বন্যা না হওয়ায় সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। তাই এবার সরিষা আবাদে চাষীরা লাভের মুখ দেখবেন। উপজেলা কৃষি অধিদফতরের কৃষিবিদ জিয়াউর রহমান জানান, কৃষি অধিদফতরের মাধ্যমে মৌচাষীদের এখানে এনে মধু সংগ্রহের আহ্বান জানানো হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার সান্ত¦না রানী বলেন, এ বছর উপজেলায় প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। এখানে প্রতি বছর যে পরিমাণ সরিষা আবাদ হয় তাতে মধু চাষে অর্থনৈতিক দিক থেকে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এই সম্ভাবনাটিকে কাজে লাগানোর জন্য খামারি ও সরিষা চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। সরিষা ক্ষেতে কোন প্রকার রাসায়নিক স্প্রে করতে নিষেধ করা হয়েছে। যাতে মৌমাছির কোন ক্ষতি না হয়। -মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ থেকে
×