ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পৌষেই মরা গাঙ ॥ কমেছে মাছের আধার

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

পৌষেই মরা গাঙ ॥ কমেছে মাছের আধার

শুকনো নদী। মরা গাঙ। কমেছে মাছের আধার। জেলে পরিবারের অনিশ্চয়তা। মাঝ নদীতে তউড়া জাল ফেলে যে মাছ মিলছে জীবিকায় তা যথেষ্ট নয়। শিশু কিশোররা মাছ শিকারে ঠেলা জাল নিয়ে ঘুরছে। খুঁজছে জলাশয়। খালবিলেরও অনেকটা হেঁটে যেতে হচ্ছে। তারপর কাদার জলাশয়ে ঠেলছে জাল। যেখানে লুকিয়ে আছে শিং মাগুর খলসে ভ্যাদা গচি পুঁইয়েসহ নানা জাতের দেশীয় মাছ। দেশী মাছ কমে গিয়েছিল। মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের চেষ্টায় সেগুলো ফিরে আসছে। তবে শুকনো মৌসুমে নদী খাল বিল শুকিয়ে যাওয়ায় মাছের প্রজনন ও চলাচল স্বাভাবিক নেই। যমুনা ও বাঙালী তীরের জেলে পরিবারগুলো কোন রকমে দিন গুজরান করছে। গেল বর্ষায় আশা ছিল খেয়া জালে অনেক মাছ উঠবে। তা হয়নি। আষাঢ়ের শুরুতে নদী ভরে উঠেছিল। দিন কয়েক পরই পানি নেমে যায়। এরপর নদী আর ভরেনি। উল্টো শুকিয়েছে। যে কারণে মাছ তেমন মেলেনি। এই সময়টায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় নদীর গভীরতা কমে গিয়েছে। খেয়া জাল ফেলার জন্য যে পরিমাণ পানি দরকার তা নেই। কোন রকমে তউড়া জাল (হাতে বিশেষ কায়দায় জাল নিয়ে নদীতে ছুড়ে দেয়া) ফেলে মাছ ধরছে জেলেরা। নৌকায় গাছের ডাল লতাপাতা ভরে ডুবিয়ে দিয়ে দু’দিন পর নৌকা তীরে তুলে যে মাছ মিলতো তাও কমেছে। কাদায় ভরা জলাশয়েও মাছ তেমন মিলছে না। চরকর্নিবাড়ির জেলে সাধন, নিতাই চন্দ্র, মহেন্দ্র বললেন, মাঝ নদীতে যে খেয়া জাল নিয়ে যেতেন তা গুটিয়ে ফেলেছেন। জানালেন, বয়ে যাওয়া যমুনার প্রশস্ততা আগে অনেক বেশি ছিল। বর্তমানে তা কমে গড়ে ৮ কিলোমিটারে ঠেকেছে। বর্ষায় জলপ্রবাহ বেড়ে গেলে প্রশস্ততা কিছুটা বাড়ে। তারপর যে অবস্থা সেই। শুকনো মৌসুমে কোথাও চর, কোথাও পানির গভীরতা অনেক কম। মাছ আর থাকে কই। মৎস্য বিভাগের এক সূত্র জানায় যমুনায় শুকনো মৌসুমে পানি কমে গেলে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে যায়। উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায় মৎস্যজীবীদের সরকারী সহায়তা দেয়া হয়। চরকর্নিবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাহার আলী বললেন, যমুনায় এমনিতেই পানি কমে গিয়েছে। তার ওপর কিছু এলাকা বালিয়াড়িও হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রকৌশলীরা বলছে, যমুনা সিল্টেড হয়ে পড়েছে। নাব্য ফিরিয়ে আনতে খনন কাজে বড় আকারের ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শীঘ্রই বাস্তবায়িত হবে। -সমুদ্র হক, বগুড়া থেকে
×