ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম ওয়ানডেতে ৪৫ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড

গাপটিলের সেঞ্চুরি ও নিশাম ঝড়ে পরাস্ত শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

 গাপটিলের সেঞ্চুরি ও নিশাম ঝড়ে পরাস্ত শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুধু ম্যাচসেরা মার্টিন গাপটিলকে নিয়েই আলোচনাটা হতে পারতো। কারণ ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১৩৮ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তবে দেড় বছর পর ফেরা জেমস নিশাম মাত্র ১৩ বলে ৪৭ রানের যে ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন তার মধ্যে ৪৯তম ওভারে থিসারা পেরেরাকে টানা ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে তুলে নেন ৩৪ রান। সেটাই হয়তো মাউন্ট মঙ্গানুইতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সফরকারী শ্রীলঙ্কার সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। বল হাতেও মিডিয়াম পেসার নিশাম ঝড় তুলে ৩ উইকেট শিকার করলে ৪৫ রানে হেরে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছে লঙ্কানরা। ৭ উইকেটে ৩৭১ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছিল কিউইরা। জবাবে ওপেনার নিরোশান ডিকওয়েলার মারমুখী ৫০ বলে ৭৬ এবং ওয়ানডাউনে কুসল পেরেরার ৮৬ বলে করা ১০২ দারুণ শুরু এনে দিলেও বোলার নিশামের দারুণ ব্রেক থ্রু ৪৯ ওভারে ৩২৬ রানেই গুটিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কাকে। এ জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। পূর্ণাঙ্গ ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে শুরুটা হার দিয়েই হলো ৩৫ বছর বয়সী লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার। বে ওভালে টস জিতেই ব্যাটিং নেয় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। তবে কলিন মুনরো (১৩) ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই মালিঙ্গার পেসে কুপোকাত হয়ে সাজঘরে ফিরলে শুরুটা ভাল হয়নি তাদের। পূর্ণাঙ্গ ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে শুরু ৩৫ বছর বয়সী মালিঙ্গার। ২০১৭ সালে একটি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। মুনরো সাজঘরে ফেরত গেলেও গাপটিল ও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এরপর ঘাম ঝরিয়েছেন লঙ্কান বোলারদের। তারা দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৩ রানের বিশাল জুটি গড়েন দ্রুতগতিতে। উইলিয়ামসন ৭৪ বলে ৬ চারে ৭৬ রান করার পর নুয়ান প্রদীপের বলে বোল্ড হয়ে যান। আর গাপটিল সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যেতে থাকেন বেশ ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে। অভিজ্ঞ রস টেইলর এসে ঝড় তোলেন। তৃতীয় উইকেটে ৮৮ রান উঠে আসে। গাপটিল ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফেরেন ১৩৯ বলে ১১ চার, ৫ ছক্কায় ১৩৮ রানে। থিসারা তাকে শিকার করেন। দুই ওভার পরেই টেইলরকেও তুলে নেন তিনি। টেইলর মাত্র ৩৭ বলে ৬ চার, ২ ছক্কায় ৫৪ রান করেছিলেন। ততক্ষণে ৩০০ রানের কাছাকাছি কিউইরা। তবে সংগ্রহটা কত বড় হবে তা নিশাম নামার পর অনুমান করা যায়নি। কারণ দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। ৪৯তম ওভারে ব্যাটিংতা-ব দেখান নিশাম। এই ওভারের আগ পর্যন্ত থিসারাই ছিলেন লঙ্কানদের সেরা বোলার (৯-০-৪৬-২)। কিন্তু এবার তাকে টানা ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে ওভারটি থেকে ৩৪ রান তুলে নেন নিশাম এবং দলের রানকে সাড়ে তিন শ’ ছাড়িয়ে নিয়ে যান। নিশাম ১৩ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭ উইকেটে ৩৭১ রানে শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। থিসারা ৮০ রানে, মালিঙ্গা ৭৮ রানে ও প্রদীপ ৭২ রানে ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে ডিকওয়েলা ও গুনাথিলাকা উড়ন্ত শুরু এনে দেন লঙ্কানদের। ৬২ বলে ৪৩ রানে নিশামের বলে গুনাথিলাকা যখন সাজঘরে ফেরেন তখন শ্রীলঙ্কার রান ১৭.৪ ওভারে ১১৯। তবে ডিকওয়েলা এগিয়ে যেতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। তিনি ৫০ বলে ৮ চার, ৩ ছক্কায় ৭৬ রান করে সাজঘরে ফিরলেও কুসল সেঞ্চুরি পেয়ে যান। নিশামের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ডিকওয়েলা আউট হওয়ার সময় লঙ্কানরা ২৬.২ ওভারে ছিল ১৭৮ রানে। এরপরই ধস নামে। নিশামই শুরুটা করে দিয়েছিলেন। লড়াই একাই চালিয়েছেন কুসল। তিনি ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৮৬ বলে ১৩ চার, ১ ছক্কায় ১০২ রানে সাজঘরে ফিরলে বাকিদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ৪৯ ওভারে ৩২৬ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। নিশাম ৮ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ৩টি এবং ট্রেন্ট বোল্ট, লোকি ফার্গুসন ও ইশ সোধি ২টি করে উইকেট নেন। ৪৫ রানে পরাজিত হয় শ্রীলঙ্কা। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড ইনিংস- ৩৭১/৭; ৫০ ওভার (গাপটিল ১৩৮, উইলিয়ামসন ৭৬, টেইলর ৫৪, নিশাম ৪৭*; প্রদীপ ২/৭২, মালিঙ্গা ২/৭৮, থিসারা ২/৮০)। শ্রীলঙ্কা ইনিংস- ৩২৬/১০; ৪৯ ওভার (কুসল ১০২, ডিকওয়েলা ৭৬, গুনাথিলাকা ৪৩; নিশাম ৩/৩৮, সোধি ২/৫৩, বোল্ট ২/৬৫, ফার্গুসন ২/৬৫)। ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ৪৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মার্টিন গাপটিল (নিউজিল্যান্ড)। সিরিজ ॥ ৩ ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
×