ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেরপুরে ঝুলে আছে সেচপাম্পে বিদ্যুত সংযোগের দুই শতাধিক আবেদন

বোরো আবাদ নিয়ে কৃষক বিপাকে

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

বোরো আবাদ নিয়ে কৃষক বিপাকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৩ জানুয়ারি ॥ শেরপুরের ঝিনাইগাতিতে ঝুলে আছে সেচপাম্পে বিদ্যুত সংযোগের ২ শতাধিক আবেদন। ফলে বিদ্যুত সংযোগের অনুমতি না পেয়ে সেচপাম্প মালিকসহ শত শত কৃষক দিশেহারা। এতে চলতি মৌসুমে বেশ কিছু এলাকায় বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা যায়, গভীর নলকূপের বিদ্যুত সংযোগ পেতে প্রথমে বিএডিসি ও পরে উপজেলা সেচ কমিটির কাছে অনুমতির প্রয়োজন হয়। আর সেই অনুমতি পেতে ২ মাস আগে এ উপজেলা থেকে ২শ’ গভীর নলকূপ (সেচপাম্প) মালিক বিদ্যুত সংযোগের জন্য আবেদন করেন বিএডিসিতে। কিন্তু বোরো মৌসুমের উপযুক্ত সময় অতিবাহিত হতে চললেও এখনও তারা বিদ্যুত সংযোগের অনুমতি পাননি। ফলে বিদ্যুত সংযোগের অভাবে সেচপাম্প চালু ও তাদের জমিতে সেচ দিতে পারছেন না এলাকার কৃষক। সরেজমিনে কথা হয়, উপজেলার নাচনমহুরী গ্রামের আবেদনকারী সেচপাম্প মালিক কাবুল হোসেন, দড়িকালিনগর গ্রামের মতিউর রহমান, ফরিদ হোসেন, কোনাগাঁও গ্রামের আব্দুর রহমান, পানবর গ্রামের আনোয়ার হোসেন, মোজাফফর, কাংশা গ্রামের ইদ্রিস আলীসহ বেশ কয়েক সেচপাম্প মালিকের সঙ্গে। তারা বলেন, সেচপাম্পে বিদ্যুত সংযোগ পেতে ইতোপূর্বে তারা উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যান সেচ কমিটির সভাপতির পদ থেকে বাদ যাওয়ায় তাদের বর্তমান সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে নতুন করে অনুমতি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এ হিসেবে ২ মাস আগে তারা বিএডিসিতে আবেদন করেছেন। বিএডিসি সরেজমিনে তদন্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিলের পর তা অনুমোদন দেয়ার কথা। কিন্তু ২ মাস পরও তাদের সেই অনুমোদন মেলেনি। ফলে আবেদনকারী শতাধিক গভীর নলকূপ মালিকসহ শত শত কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে বিএডিসির ঝিনাইগাতি উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ কর্মকর্তা ওবায়দুল হক বলেন, নির্বাচনের কারণে কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তবে আবেদনগুলো সরেজমিন প্রতিবেদনসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ছাড়পত্র দেয়া হবে। তবে সেচ কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, আবেদনগুলো এখনও আমার হাতে পৌঁছেনি। হাতে পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরিশালে পানি সঙ্কট স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে কৃষক আগাম আবাদে নামলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তা ও ব্রিজ উন্নয়ন কাজের জন্য প্রধান খালের মুখে দুটি বাঁধ দেয়ায় পানি সঙ্কটে দুই সহস্রাধিক কৃষক ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ও গৈলা খালের মুখে দুটি বাঁধ নির্মাণ করায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবার পাশাপাশি চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। রাজিহার গ্রামের চাষী কমলেশ হালদারসহ অর্ধশতাধিক চাষি জানান, বরিশাল সড়ক বিভাগের আওতায় উপজেলা সদর থেকে ঘোষেরহাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও থানার সামনে ব্রিজ নির্মাণ কাজের জন্য উপজেলা সদর এলাকায় রাজিহার ও গৈলা খালের মুখে দুটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে চাষিরা ইরি ব্লকে সেচ দিতে না পারায় আগাম বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। প্রধান খালে বাঁধ দেয়ায় ওই খালসহ শাখা খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ইরি ব্লকের মেশিনগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চাষিরা আরও বলেন, উন্নয়ন কাজের জন্য চাষিদের কথা বিবেচনা করে খালে পানি চলাচলের ব্যবস্থা রাখার দরকার ছিল কিন্তু ঠিকাদার খামখেয়ালি করে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বাঁধ অপসারণ বা পানি চলাচলের জন্য চাষিরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, বাঁধের কারণে পানি সঙ্কটের জন্য চাষিদের চাষাবাদ সমস্যার কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। পানির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ও ব্লকের তালিকাও তাকে দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস জানান, বাঁধের কারণে ৩০/৩৫টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্তের তালিকার পাশাপাশি অনেক ছোট ব্লক ক্ষতি হবে। বিষয়টি তার দফতরের না হওয়ার পরও চাষিদের কথা চিন্তা করে তিনি বিষয়টি বরিশাল সওজ কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোীিতার সমন্বয় করে সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
×