ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শি’র একত্রীকরণ প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া

হংকং মডেল অনুসরণ করুন ॥ চীনকে তাইওয়ান

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

 হংকং মডেল অনুসরণ করুন ॥ চীনকে তাইওয়ান

চীন ও তাইওয়ানের নেতারা তাইওয়ান প্রণালীর এপার-ওপার সম্পর্ক অগ্রগতির সম্পূর্ণ অভিন্ন পথ উপস্থাপন করেছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শিজিন পিং বুধবার বলেছেন, তাইওয়ানকে অবশ্য চীনের সঙ্গে একত্রিত করা হবে। তিনি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে হবে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন প্রণালীর এপার-ওপার সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য একটি নতুন নীতিকাঠামো প্রকাশ করার একদিন পর শি এক ভাষণে এ কথা বলেন। নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ। চীনের প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে একত্রীকরণ অর্জনে সামরিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা অস্বীকার না করলেও প্রকাশ্য হুমকি প্রদর্শন ও উত্তেজনাকর ভাষা প্রয়োগ থেকে সরে যাননি। তিনি সাইয়ের ‘ফোরমাস্ট’ বা চার আবশ্যিক নীতি অসার বলে ইঙ্গিত দেন। তাইওয়ানী নেতার মঙ্গলবার প্রথম প্রকাশিত ফ্রেমওয়ার্কে বলা হয়েছে, প্রণালীর এপার-ওপার ব্যবস্থায় চীনকে অবশ্য রিপাবলিক অব চায়নার (আরওসি) অস্তিত্ব স্বীকার করতে হবে এবং ভবিষ্যত ইঙ্গিত স্বরূপ তাইওয়ানের ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতির প্রতি মর্যাদা দেখাতে হবে। শি বিকল্প হিসেবে তাইওয়ানের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাইওয়ানবাসীদের স্বার্থ ও কল্যাণ নিরাপদ রাখার জন্য একমাত্র পথ হংকং ও ম্যাকাওয়ের মডেলের মতো ‘একদেশ-দুই ব্যবস্থার’ প্রস্তাব দেন এবং তা মেনে নেয়ার জন্য তাইওয়ানীদের সম্মত করার চেষ্টা চালান। সাই বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে শিয়ের ভাষণের জবাবে বলেন, তাইওয়ান কখনও এমন কোন ফ্রেমওয়ার্ক মেনে নেবে না। তাইওয়ানের মূলভূমি বিষয়ক পরিষদ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, হংকংয়ে ‘একদেশ, দুই ব্যবস্থা’ শাসনে সেখানে স্বাধীনতা, আইনের শাসনও মানবাধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাইওয়ানের শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার সমর্থক সাইয়ের ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) ২০১৮-এর নবেম্বরে আঞ্চলিক নির্বাচনগুলোতে হেরে গিয়ে এর ভিত্তি ফেলে এবং শেষ পর্যন্ত চীনের সঙ্গে একত্রীকরণের প্রতি সমর্থনকারী বিরোধী দল কৌমিনট্যাং (কেএমটি) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মিউনিসিপ্যালিটিতে বিজয় অর্জন করে। সাই অবশ্য মঙ্গলবার জোর দিয়ে বলেছেন যে, নির্বাচনে ডিপিপির হারের কারণ তার ক্রস-স্ট্র্রেটটি নীতিতে ভোটারদের অসন্তোষ নয়। ভাষণে শিয়ের সৌহার্দ্যমূলক উদ্দেশ্য হয়ত বা কেএমটিয়ের নতুন মেয়রদের প্রতি তার লক্ষ্য অর্জনের আবেদন। এ মেয়ররা চীনা শহরগুলো ও তাদের সমর্থকদের সঙ্গে মিউনিসিপ্যাল পর্যায়ে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ইচ্ছুক। শি তার ভাষণে ক্রস-স্ট্রেট ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে তথাকথিত ‘১৯৯২ ঐকমত্য’-এর প্রতি তার প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ ঐকমত্যের প্রতি কেএমটি নেতাদের ব্যাপক স্বীকৃতি রয়েছে। এ ঐকমত্য অনুসারে আরওমি (তাইওয়ান) ও পিপলস রিপাবলিক অব চায়না (পিআরসি) বা গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ‘এক চীন’ প্রতিষ্ঠার প্রতি সম্মতি রয়েছে। কিন্তু কোন উপাদানের ওপর চীন গঠিত হবে সে ব্যাপারে রয়েছে অনৈক্য। কেএমটি ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ ফ্রেমওয়ার্ক গ্রহণের চেয়ে যেমন আছে তেমন অবস্থান অক্ষুণ্ণ রেখে ঐকমত্যকে সাধারণত ব্যাখ্যা করে থাকে। সাইওডিপিপি এ অন্তর্নিহিত অর্থ পূর্ণ চুক্তি স্বীকার করে না।
×