ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নৌকার এমন বিজয় ইতিহাসের ধারাবাহিকতা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

নৌকার এমন বিজয় ইতিহাসের ধারাবাহিকতা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নৌকা মার্কার বিজয় ইতিহাসের অনিবার্যতা। প্রকৃত অর্থে সবকিছুর সার্থকতা শেষপর্যন্ত ফল দিয়েই পরিমাপ করা হয়। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমন বিজয় আমার দৃষ্টিতে নতুন কিছুই নয়। নির্বাচনে বড় ব্যবধানে আওয়ামী লীগের জয় লাভ একেবারে নতুন কিংবা ভিন্ন কোন ঘটনা- এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই। ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর, অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পরবর্তী পর্যায় থেকে আমাদের এই অঞ্চলের রাজনীতিতে দুটি ধারা শুরু থেকেই বিদ্যমান ছিল এবং এখন অবধি টিকে আছে। উদার, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বাঙালিত্ব, বাঙালীর মূল্যবোধ এবং বাঙালী সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গসহ সবকিছু নিয়ে একটি ধারা। আর একটি ধারা হলো ইসলামী ভাবাদর্শ, অর্থাৎ মুসলিম লীগ ঘরানার ভাবধারা। দেশ বিভাগের পর থেকে উক্ত দুটি ধারা শক্তিশালীভাবে একে অপর থেকে বিভক্ত। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে এই দুটি ভাবধারা প্রথম মুখোমুখি বা পাল্টপাল্টি অবস্থানে উপনীত হয়। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ’৫৪-এর সেই নির্বাচনে মোট ৩০৯টি আসনের মধ্যে ৩০০টি আসনেই জয় লাভ করে নৌকা মার্কা। কিন্তু এখন যদি বলা হয়, নৌকা মার্কা হঠাৎ করেই এমন বড় জয় অর্জন করল কিভাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব নৌকা মার্কার এমন জয় ইতিহাসে এই বারই প্রথম হয়েছে- এটি মনে করারও কোন কারণ নেই। মনে রাখতে হবে, ১৯৫৪ সালে নৌকা মার্কা ৩০৯টি আসনের মধ্যে ৩০০টি আসনে জয় লাভ করেছিল। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ের পর থেকে তারা বাঙালীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালীর অগ্রসরমাই সবকিছুর বিপরীতে মুসলিম লীগ ঘরানার ভাবাদর্শপূর্ণ অপশক্তি সবকিছুতেই টিকে থাকে এবং এখন তারা তাদের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ওই ধারা ছয় দফার আন্দোলন থেকে শুরু করে রবীন্দ্র সঙ্গীতের বিরোধিতা করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ফের মুসলিম লীগ ঘরানার ভাবাদর্শকে পরাস্ত করা হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ১৬৯টি আসনের মধ্যে মাত্র দুটি ছাড়া ১৬৭টি আসনে নৌকা মার্কা নিয়ে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। পরবর্তীকালেও নৌকার এই বিজয় অব্যাহতভাবে থাকে। পরাজিত হয়েও অপশক্তির তৎপরতা থেকে থাকেনি। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যাদের দায়ী করি, জামায়াতে ইসলামী, যুদ্ধাপরাধীসহ অন্যান্য ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলের আলাদা আলাদা প্লাটফর্ম সব সময়ই ছিল। তারা বিভিন্ন সময় জোট গঠন করত। তারা বলত, এটা তাদের আদর্শিক জোট নয়, বরং নির্বাচনী জোট। কৌশলগত জোট। সেই ধারাবাহিকতায় এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দেখা গেল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামক নির্বাচনী জোট। যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হলো, তখন অনেক কিছুই বলা হলো। যারা ইসলামী ভাবাদর্শ নিয়ে সরাসরি ধর্মীয় রাজনীতি করে, আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যাদের ভূমিকা ছিল, তাদের বাদ দিয়ে গঠন করা হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামক প্লাটফর্ম। কিন্তু শেষপর্যন্ত যে কোন কারণেই হোক, তা আর হয়ে ওঠেনি। ঐক্যফ্রন্ট জামায়াতমুক্ত হয়নি। ফলে তাদের শেষ রক্ষাও হয়নি। কৌশলগতভাবে গঠিত এই জোটটির ভিন্ন ভিন্ন বাহ্যিক পার্থক্য ছিল। কিন্তু এই জোটের বাহ্যিক যে বিভাজন ছিল, তা একেবারে মুছে যায়, যখন জামায়াতের ২২ জনকে ধানের শীর্ষ প্রতীক দেয়া হয়। ফলে ১৯৪৭ সাল থেকে ধর্মীয় ভাবাদর্শ বা ধর্মকে ব্যবহার করে মুসলিম লীগ ঘরানার রাজনৈতিক দল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামক প্লাটফর্মটি। আমাদের কয়েক সাবেক নেতা ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেন। সাবেক বলছি এই কারণে যে, তাদের কোন অনুসারী ছিল না। নির্বাচনের আগের দিনও একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের টকশোতে আমি বলেছি, এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৫৪ এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মতোই হবে। কারণ, এই নির্বাচনের মাধ্যমে পুরো জাতিকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কোন ভাবধারাকে মেনে নেবে। বাঙালী, বাঙালিত্ব, অসাম্প্রদায়িক চেতনা নাকি মুসলিম লীগ ঘরানার ভাবাদর্শ। তবে আওয়ামী লীগে ধর্মাশ্রয়ী লোকজন কিংবা বিভিন্ন সময় ধর্মীয় লেবাসে নানা অপকর্ম করেনিÑ এমন লোক নেই, তা বলব না। কিন্তু আদর্শিকভাবে আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক দলটি উদার। যাকে আমরা বলি, বাঙালী এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ ও লালন করে আওয়ামী লীগ। যাদের আমরা নতুন এবং তরুণ ভোটার বলেছি, প্রায় সোয়া দুই কোটির মতো যারা আগে কখনও ভোট দেয়নি। তাদের মধ্যে কিছু কিছু অসন্তোষ, ক্ষোভ ছিল। সরকার যেহেতু ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল, সেদিক থেকে কোটা আন্দোলন, সড়ক আন্দোলন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স, কর্মসংস্থানসহ নানা বিষেয় তারা বিক্ষুব্ধ ছিল। এদিক থেকে ঐক্যফ্রন্ট তরুণ প্রজন্মকে আকর্ষণ করতে পারত, যদি ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপির লোকদের নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট প্লাটফর্মটি হতো। কিন্তু যখন যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামের লোকজন ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে একাকার হয়ে গেল, তখন তারা তরুণ প্রজন্মের সমর্থন হারাল। বিএনপি মাত্র ৫টি আসন পেয়েছে। ১৯৫৪ এবং ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক ধারায় এই আসন সংখ্যা যথার্থ। ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় যা প্রত্যাশিত ছিল, তার যথাযথ প্রতিফলন ঘটেছে এবারের নির্বাচনে। এবার তৃতীয়বারের মতো জাতি দেখাল, তারা যখন অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়, তখন নির্বাচনের ফলাফল এমনই হয়। এর বাইরে অন্য কোন ফলাফল হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমার মনে হয়, বিএনপির উচিত হবে জন রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সংসদে শপথ নেয়া। প্রকৃতপক্ষে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটির উত্থান বা ঐতিহাসিক পরিক্রমায় কতকগুলো মূল উপাদান রয়েছে। আর সেগুলো হলো মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং জয় বাংলার বিরোধিতা। এই সবকিছুর বিরোধিতা করেই বিএনপির জন্ম। পৃথিবীতে সামরিক শাসকরা ক্যান্টনমেন্ট থেকে যে সব রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন যেমন- ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, মিসরসহ অনেক দেশে, বর্তমান তাদের কোন দল টিকে নেই। একমাত্র বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি ৩৬ থেকে ৩৭ বছর টিকে আছে। আর এই টিকে থাকার জন্য তাদের মনস্তাত্ত্বিক প্লাটফর্ম হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে কাজ করা। জিয়াউর রহমানসহ আরও অনেকে ছিলেন যারা যুক্তিযুদ্ধ করেছেন। এমন লোক বিএনপিতে রয়েছেন। কিন্তু পরে তারা রাজনৈতিক মনস্তাত্ত্বিক প্লাটফর্ম হিসেবে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি ছিল, তাদের সঙ্গে সহাবস্থান এবং সখ্যতা গড়ে তুলে। যাদের অবস্থান একেবারে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে। বিএনপি এই মনোভাব থেকে বের হতে পারবে না। কারণ দেশবিরোধী অপশক্তি, ধর্মের ব্যবহার এবং জয় বাংলার বিরোধিতাই হচ্ছে বিএনপির সামাজিক, আদর্শিক মতাদর্শ বা ভিত্তি। এই ভাবধারা থেকে বের হলে তারা রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবে না। এসব কিছু নিয়েই তাদের রাজনীতি করতে হবে। ধানের শীষ প্রতীকে জয়ী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর যদি এখন জয় বাংলা স্লোগান দেন, তাহলে তিনি আর বিএনপিতে থাকতে পারবেন না। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি যখন প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তখন তাদের ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে ২৫০ জন প্রার্থীই ছিলেন দালাল শ্রেণীর। কাজেই দালাল গোত্র বা শ্রেণীর মানুষের যে মেন্টাল সেটআপ, এখন তারা তারই প্রতিনিধিত্ব করছে। যার কারণে তরুণ প্রজন্ম বিএনপিকে পাত্তা দেয় না। যাই হোক, দেশে ইতিবাচক রাজনীতির ধারা নিতে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বললেন, তখন একশ্রেণীর লোক অট্টহাসি হাসি দিয়েছে। তখন বিদ্যুত চলে গেলেই তারা বলত, এই তো ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন দেশে বিদ্যুত উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। কাজেই নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মকে আকর্ষণ করার কোন যোগ্যতা বিএনপির ছিল না। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের বিতর্ক রয়েছে। যা তরুণ সমাজ মেনে নিতে চায় না। বিগত দিনে বিএনপির জনসম্পৃক্ত তেমন ছিল না। জনদাবি, সমস্যাসহ কোন ইস্যুতে তারা জনসমর্থন তৈরি করতে পারেনি। ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে বিএনপি যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, জাতি তা এখনও ভুলেনি। ২০১৫ সালের টানা তিন মাসব্যাপী আন্দোলনের নামে শত শত বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিয়েছে। পেট্রোল বোমায় মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেই সময়ে ঘোষিত অবরোধ বিএনপি এখন প্রত্যাহার করেনি। নির্বাচনে বিএনপির অভিযোগ তারা প্রচার করতে পারেনি। সমান প্লাটফর্ম এবং সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক আগে থেকে নানা ধরনের রিসোর্স প্রস্তুত রাখতে হবে। বিএনপি কি তা করছে পেয়েছে? পারেনি। তারা নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার লিস্ট সংগ্রহ করার মতো কাজটিও করেনি। কোথাও তাদের পোস্টারও চোখে পড়েনি। তাদের অনেক পোস্টার ছিল, সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে সামাজিক মাধ্যমসহ কোন জায়গায় এমন তথ্য নেই। এবার নির্বাচনে বিএনপি মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করেছে। প্রথমত. তাদের ধারণা ছিল ২৪ তারিখে মাঠে সেনাবাহিনী নামবে। এরপর অবস্থার পবির্তন হবে, তারা অনেক কিছু করে ফেলবে। লন্ডন থেকে দ-প্রাপ্ত আসামি সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য বক্তব্য প্রদান করল। সেখানে বলা হলো, আমি সাবেক সেনাপ্রধানের গর্বিত সন্তান। তারা ভেবেছিল এতে অবস্থা সেই আগের নির্বাচনের মতো হবে। দ্বিতীয়ত. এরপর ড. কামাল হোসেন বললেন, দেশের সব মানুষ এই সরকারের বিরুদ্ধে। মুখে নীরব থাকলেও তারা নির্বাচনে তার প্রমাণ দেবে। এবার ভোট বিপ্লব হবে। তৃতীয়ত. বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের ফোনালাপ ফাঁস। এরপর অনেকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াল। যদিও কেন্দ্রীয়ভাবে কেউ নির্বাচন প্রত্যাহার করেনি। তারা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার শেষ ভরসা হিসেবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আর একটি বিষয় লক্ষণীয় জামায়াতের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি, তাদের কোন অনুমতি ছাড়াই জামায়াত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াল। মাঝপথে নির্বাচন প্রত্যাহার করা মানেই হচ্ছে, মাঠে যখন খেলা চলে, তখন এক পক্ষ চলে গেলে অন্য পক্ষ সুযোগ নিয়ে ফেলে। কারণ, নির্বাচনী মাঠে অপশক্তির অভাব থাকে না। কেন্দ্র যখন ফাঁকা হয়ে পড়ে, তখন বিভিন্ন পক্ষ নানা দুষ্কর্ম করে থাকে। এবার নির্বাচনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে শতকরা ৮০ ভাগ লোক ভোট দিয়েছে। ভোট প্রদানে কোথাও কোন বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। যাদের ভোট দিতে আসার দরকার ছিল, তারা সবাই কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে। যারা ভোট প্রদান করেছে, তারা সঠিক মার্কায় ভোট দিয়েছেন। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। বিএনপির সিনিয়র নেতারা রিক্সাযোগে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন। কেউ বলতে পারবে না যে, ভোট দিতে পারেনি। ময়মনসিংহ-১ এবং সিলেট-১ আসনে নির্বাচনে কোন নির্বাচনী সংঘাত ঘটেনি। কিন্তু সেখানেও তারা ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। আগে তো গ্রামে গিয়ে বলা হতো, কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই। রাস্তা থেকে ভোটারদের ফেরত পাঠানোর মতো ঘটনা এবার ঘটেনি। আমি মনে করি, তাদের বরং শপথ নেয়াই বরং ভাল। কেননা ছোট ছোট বিরোধী দলও সংসদে ভাল ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনে এই জয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেকাংশে বেড়েছে। সমাজের সকল সেক্টরের লোকজন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসা, শিক্ষক সমাজ, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বসহ সকল ধর্ম, বর্ণ, পেশার লোকজন শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়েছে। যারা যে অবস্থান থেকে এই সরকারকে সমর্থন করেছে, তাদের প্রত্যাশা সরকার উদার মনমানসিকতার পরিচয় দেবে। সরকার সকল সেক্টরের মানুষের জন্য কাজ করবে- এমনটিই কাম্য। রক্ষণশীল মনোভাবের উর্ধে অবস্থান করে, ভয়ভীতি তোয়াক্কা না করে সরকার যদি সবার কল্যাণ ও মঙ্গল নিশ্চিত করে দেশ পরিচালনা করতে পারে, তাহলে আমি মনে করি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য কোন সমস্যা হওয়ার কারণ নেই। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূর্ণ করতে পারলে আগামী সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত হবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মেগা প্রজেক্টগুলো শেষ হবে, আরও নতুন প্রজেক্ট আসবে। আগে যা স্বপ্ন দেখা হতো, এখন তা বাস্তবে দৃশ্যমান। লেখক : উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
×