ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাঠে ফিরেছেন ‘এমপি’ মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

মাঠে ফিরেছেন ‘এমপি’ মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাত্র তিনদিন আগে সংসদ সদস্য হয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বুধবারই রাজনীতির মাঠ ছেড়ে ক্রিকেটের মাঠে ফিরেছেন তিনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল টি২০) শুরু হবে শনিবার। রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক তিনি। বর্তমান চ্যাম্পিয়নও দলটি। শিরোপা ধরে রাখতে হবে। আবার নিজের ফিটনেসটার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আর তাই তিনদিন না যেতেই ক্রিকেট মাঠে ফিরেছেন বিপিএলে গত পাঁচ আসরের চারবারের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মাশরাফি। এবার মাশরাফি মাঠে ফিরেছেন ‘এমপি’ হয়ে। নড়াইল-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়ে। খেলাটাই যে তার মনে প্রাণে আছে, তাই বুঝিয়ে দিলেন মাশরাফি। আজ মাশরাফির দল রংপুর রাইডার্সের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু হবে। অনুশীলনের আগেরদিন বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বাইকে চেপে চলে আসেন ‘হোম অব ক্রিকেটে’। মাশরাফি এসেই প্রায় ৩৫-৪০ মিনিট জিমে ছিলেন। গত ২৩ ডিসেম্বর নড়াইলে গিয়েছিলেন মাশরাফি। বুধবার ঢাকায় ফিরেন। নিজ শহরে এবারের সফরটা সবমিলিয়ে ৯ দিনের ছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত বাংলাদেশ ক্রিকেটার মাশরাফি নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৭১ হাজার ২১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেয়া বিশেষ এক সাক্ষাতকারে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সামালোচনা সম্পর্কে মাশরাফি বলেন, ‘আমার অবস্থান থেকে আমি স্পষ্ট করে বলতে পারি, ভিন্ন দল কিংবা ভিন্ন বিশ্বাসের, ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের মানুষের প্রতি আমার কোন অশ্রদ্ধা নেই। আমার দলের প্রতি আমার নিরঙ্কুশ সমর্থন সত্ত্বেও বিরোধীদের প্রতি আমার শতভাগ শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। বলছি এই কারণে যে, যার যার নিজের পছন্দমতো যে কাউকে সমর্থন করার অধিকার রয়েছে। বিরোধীদের আমি কেবল শ্রদ্ধাই জানাতে পারি আর সেটাই আমি করে থাকি।’ মাশরাফি আগেই জানিয়েছিলেন ক্রিকেটই তার ধ্যানজ্ঞান। তিনি এবার তা বুঝিয়ে দিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘ক্রিকেট আমার ধ্যান-জ্ঞান। ক্রিকেট আমার সাধনা। ক্রিকেট আমার ভালবাসা।’ নির্বাচন শেষে সেই সাধনার জায়গাতে খুব দ্রুতই এসে পড়েছেন মাশরাফি। মাশরাফিকে নিয়ে বুধবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও অনেক কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘এটি তো একটি সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার। আমার মনে হয় ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো এটি হতে যাচ্ছে। আমার এটি জানা নেই বা কখনো শুনি নি যে একজন পার্লামেন্ট সদস্য ক্রিকেট খেলছে মাঠে এবং অধিনায়কত্ব করছে। সুতরাং এটি পুরোপুরি নতুন হবে এবং আমি অনেক রোমাঞ্চিত এটি নিয়ে। আমার মনে হয় এরচেয়ে ভাল কিছু আর হতে পারে না। কারণ একটি জিনিস মনে রাখবেন যে মাশরাফি রাজনীতিতে এসেছে এবং সে অনেক বেশি সিরিয়াস। ওর কিন্তু রাজনীতি করার পেছনে কি হব এটার চিন্তা নেই। একটাই চিন্তা ওর মাথায়, সেটি হলো এলাকার কাজ। এলাকার মানুষের জন্য ও কিছু করতে চায়। আজকেও (বুধবার) যতক্ষণ সে আমার সঙ্গে ছিল একই কথা বলেছে যে পাপন ভাই আমার এটি লাগবে, ওটা লাগবে। আমি শুধু বলেছি সব হবে, আগে শপথটি নিয়ে নাও, মন্ত্রিপরিষদ গঠন হোক, তুমি যা যা চাও সব হবে। এগুলো নিয়ে চিন্তা করো না। ও এগুলো নিয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। এলাকায় কাজ করতে চায়। তবে এটি যেমন সত্যি তেমন ওর মনের মধ্যে যে সারাক্ষণ ক্রিকেটই আছে এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ ও একদম ওখান থেকে সরাসরি অনুশীলনে চলে গিয়েছে। বিপিএল শুরু হতে যাচ্ছে। সুতরাং নিজের খেলার প্রতি সম্পূর্ণ সিরিয়াস সে, এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। এর বড় প্রমাণ হচ্ছে, যখন আমরা নির্বাচনের মাঠে চলে গিয়েছি এবং এলাকায় কাজ করছি তখন কিন্তু সে খেলছিল এবং খেলার মধ্যে ছিল। ও অনেক দেরি করে গিয়েছে। এটাই প্রমাণ করে যে এখনও খেলাটিই তার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়।’
×