ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইসিতে এখন উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

ইসিতে এখন উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মার্চেই উপজেলায় নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। জানা গেছে, যেসব উপজেলা পরিষদের মেয়াদ জুলাই মাসে শেষ হচ্ছে ওই সব উপজেলার নির্বাচন ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। জুলাইয়ের পরে যেসব উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে সেগুলোর নির্বাচন পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে ঘোষণা করা হবে। এবারই প্রথম দলীয় ভিত্তিতে উপজেলায় নির্বাচন হবে। এর আগে যতবার উপজেলা নির্বাচন হয়েছে সবগুলোই ছিল নির্দলীয় ভিত্তিতে। মার্চে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ। বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা নির্বাচন তো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই করতে হবে। যেহেতু ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা আর এপ্রিল মাসে এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। এ কারণে মার্চ মাসটাকে ধার্য করেনি উপজেলা নির্বাচনের জন্য। তবে কমিশন যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে সেভাবে এগিয়ে যাব। আইন অনুযায়ী, কোন উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্তির আগের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্চে নির্বাচন করতে হলে, জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি শুরুর দিকেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল অধিকাংশ আসনে জয়লাভ করেছে। দেশে আন্তর্জাতিক মহলে একাদশ জাতীয় নির্বাচন ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এই কমিশনের অধীনে এটাই ছিল বড় কোন নির্বাচন। কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন এ বছর নির্বাচনের মধ্য দিয়েই পার করতে হবে। সংসদ নির্বাচন শেষ না হতেই উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। উপজেলার নির্বাচন সম্পন্ন করার পর পৌরসভায় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী বছর দেশে চার হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রয়েছে। তারা জানায়, সামনে দুটি বছর নির্বাচনী ব্যস্ততার মধ্যে তাদের সময় পার করতে হবে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পরই, ১৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন। ওই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মোট ছয় ধাপে ওই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয় ৪৮৭টিরও বেশি উপজেলায়। আগেরবার নির্দলীয় ভোট হলেও সংসদে আইন পাসের পর আগামীতে সব স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচনও দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, যেসব উপজেলা পরিষদের মেয়াদ জুলাই মাসে শেষ হচ্ছে ওই সব উপজেলার নির্বাচন ৩১ মার্চের শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। জুলাইয়ের পরে যেসব উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে সেগুলোর নির্বাচন পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে ঘোষণা করা হবে। দেশে ১৯৮৫ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। ওই বছর ৪৬০টি উপজেলায় এই নির্বাচন হয়। ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে তৃতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছর ৪৭৫টি উপজেলায় এই নির্বাচন হয়। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আইন অনুযায়ী, পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে এবার উপজেলাসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যাপক ভিত্তিক ইভিএমে ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগে অনুষ্ঠিত সব স্থানীয় সরকার পরিষদে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয়টি আসনের সবগুলো কেন্দ্রে পরীক্ষমূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। তবে আগামীতে সব স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনে সম্পূর্ণরূপেই ইভিএম ব্যবহার করা হতে পারে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনের পর দেশের প্রায় ৫শ’ উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি আগে থেকেই রয়েছে।
×