ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঐক্যফ্রন্ট এমপিদের প্রতি মোহাম্মদ নাসিম

মাথা গরম না করে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসুন

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

মাথা গরম না করে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসুন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভোটে যেসব বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গী ঐক্যফ্রন্ট সদস্য তাদের মাথা গরম না করে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দল। জোটের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, যা (আসন) পেয়েছেন তাই নিয়ে আসুন আমরা রাজনীতি করে সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখি। মাথা গরম করে আপনাদের ক্ষতি হয়েছে। আর মাথা গরম না করে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসুন। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠক থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটকে ভোট দিয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় উপহার দেয়ায় দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানায় ১৪ দল। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ বিজয় হচ্ছে গণতন্ত্রের বিজয়। এ বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় নেতৃত্বের বিজয়। গত ১০ বছরে তিনি জঙ্গী দমন করেছেন, বিদ্যুত সমস্যার সমাধান করেছেন, সারাদেশেই অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। বিশ^ নেতৃবৃন্দও একবাক্যে স্বীকার করেছেন, এবারের নির্বাচন ইতিবাচক হয়েছে। এজন্য বিশ^ নেতাদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী নেতাদের শপথ না নেয়ার ঘোষণা সম্পর্কে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ওরা (ঐক্যফ্রন্ট) অনেক কথা বলেছে। তবে কোন কথা তারা নিজেরাই রাখেনি। তারা বলেছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে না। এখন বলছে শপথ নেবে না। ইনশাল্লাহ ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী নেতারা শপথ গ্রহণ করবে, আমি এটা বিশ্বাস করি। বিএনপি নির্বাচনে এসে মাত্র পাঁচটি আসন পেয়েছে। এ বিষয়ে ১৪ দলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা মাঠে এসে খেলেছে। জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন, তাদের প্রতি আমাদের সব সময় শ্রদ্ধাবোধ আছে, সম্মান আছে। আমি বিশ^াস করি, তারা পার্লামেন্টে থাকবে এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পুনঃভোটের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপির প্রদান কর্মসূচীর বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এই নির্বাচন জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। জনগণ প্রকাশ্যে ভোট দিয়েছে, সবাই দেখেছে। তাই তাদের এই দাবিটা হাস্যকর। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে এবার কোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াতকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এবার সত্তরের নির্বাচনের মতো জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের। জনগণ ইতোমধ্যেই ওদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, নিষিদ্ধ ঘোষণার কি আছে? ১৪ দল নেতাদের মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কোন দাবি আছে কিনা-এসব প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এটা সম্পূর্ণই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। আমাদের একটাই দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করি এবং তার নেতৃত্বে ১৪ দল আছে, থাকবে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, মহাজোট সরকার পোশাক শিল্প, কৃষকের সার ও বীজ নিয়ে মাথায় ঘামায়, নারীর উন্নয়নের বিষয়ে কথা বলে। এসব কারণেই জনগণ মহাজোটকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোটকে সাবধানে এগিয়ে যেতে হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির ছাপ এখনও রয়েছে, এটা পরিষ্কার করতে হবে। ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া ও গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ অসিত বরণ রায়, বাসদের রেজাউর রশিদ খান ও ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন।
×