ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা কামনা করি ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা কামনা করি ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগিয়ে যেতে ও সুন্দর দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেছেন, জনগণের সেবা করাটা একটি বড় কাজ। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, এটা অব্যাহত রাখব। বুধবার বিকেলে গণভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসা রাজনৈতিক নেতা, উচ্চপদস্থ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ স্কাউট, গার্ল গাইডস, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে আসলে তাদের কাছে এ সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মাধ্যমে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গড়ার সুযোগ দেয়ায় প্রতিদিনই সর্বস্তরের মানুষের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর দেশ ও জনগণের প্রতি আমার দায়িত্বটা আরও বেড়ে গেছে। এ সময় তিনি জনগণের আশা ও আকাক্সক্ষা পূরণে কাজ করে যাওয়ারও অভিপ্রায় জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে দায়িত্বটা পেলাম, সবার সহযোগিতা কামনা করি। দেশকে যেন আমরা সুন্দরভাবে গড়তে পারি। বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ হবে। এখানে কোন যুদ্ধাপরাধী, সন্ত্রাসী, জঙ্গীবাদী, মাদক কারবারি বা দুর্নীতিবাজদের স্থান হবে না। বাংলাদেশের মাটিতে এ ধরনের জঞ্জালের কোন স্থান হবে না। বাংলাদেশকে একটা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার দেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন ইনশাল্লাহ আমরা পূরণ করতে পারব। সরকারের গৃহীত সব পদক্ষেপ, উন্নয়ন কর্মকা- সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে আমরা সে পথে অনেকদূর এগিয়ে যাব। শেখ হাসিনা বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় সব সম্প্রদায় ও শ্রেণী-পেশার জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। সমাজের সর্বস্তরের জনগণ আওয়ামী লীগের বিজয়ের জন্য সর্বান্তকরণে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। এজন্য আমি তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলায় সবার সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি সবার সমর্থন পেয়েছিলাম বলেই আজকে আমরা জয় লাভ করে দেশকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। যে কাজগুলো করেছি এবং অনেক কাজ এখনও অসমাপ্ত রয়ে গেছে, সেগুলো সম্পন্ন করা, দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধশালী করা যে দেশের স্বপ্ন আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা দেখেছিলেন- বাংলাদেশ হবে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। বিশ্ব সভায় আমরা মাথা উঁচু করে বলব। শুভেচ্ছা জানাতে আসা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের এই সমর্থনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনারা যে সর্বান্তকরণে সমর্থন দিয়েছেন, যার ফলে আমরা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। হৃদ্যের বন্ধনে তারা ॥ একজন দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান ও নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। আরেকজন জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষক। ইডেন কলেজ শাখায় নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্রলীগ থেকে একজন ভিপি, অপরজন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে জিএস। হঠাৎ একে অন্যকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্য কেড়ে নিল উপস্থিত সবার দৃষ্টি। এ চিত্র বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে। এ বন্ধনের পর মুহূর্তে জানা যায়, এ বন্ধন সাধারণ কোন বন্ধন নয়, এ বন্ধন সংগ্রামের, ইতিহাসের। অনেকদিন আগের কথা। দু’জনই তখন ঢাকা ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী। পাক হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে স্বাধীনতার আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছেন তারা দু’জন। উত্তাল দিনগুলোতে রাজপথে ছিলেন একসঙ্গে। রাজনীতির আদর্শের মতভিন্নতা থাকলেও পাক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাজপথ কাঁপিয়েছেন তারা। সে সম্পর্ক এখনও অটুট, তা প্রমাণ মিলল গণভবনে। তাদের একজন বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও রেকর্ডসংখ্যক চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরেকজন হলেন প্রফেসর নাজমা শামস। বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউট গার্লস ইন স্কাউটিং ফোরাম জাতীয় কমিটির সভাপতি। ছাত্রজীবনে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন তিনি। দেখেই একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের এ উষ্ণতা দেখে অভিনন্দন জানাতে আসা সব উৎসুক দৃষ্টি কিছুক্ষণ আটকে যায় সেদিকে। একে একে ক্যামেরাগুলোর ফ্লাশলাইট জ্বলে উঠল। তখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই মুখ খুললেন। জানালেন, তিনি (শেখ হাসিনা) যখন ইডেন কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন তখন প্রফেসর নাজমা শামস ছিলেন জিএস। শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্রলীগ থেকে। আর নাজমা শামস নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। কিন্তু সম্পর্কটা ছিল খুবই আন্তরিকতায় ভরপুর। সেই সম্পর্ক এখনও আছে। দেখা পেয়েই একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন, অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করেন, একে অপরের কুশল বিনিময় করেন।
×