ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বারোপ

মার্কিন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

মার্কিন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে একটি চুক্তিতে সই করেছেন। এশিয়ায় চীনের সামরিক প্রভাব কমানো এর অন্যতম উদ্দেশ্য। বিলটি ৪ ডিসেম্বর সিনেটে পাস হওয়ার পর ১২ ডিসেম্বের কংগ্রেসে অনুমোদিত হয়। ট্রাম্প ২০১৮ সালে যে ১৩টি বিলে সই দেয়ার মাধ্যমে আইনে পরিণত করেছেন তার মধ্যে এটি সর্বশেষ। বছরের শেষ দিনে তিনি ওই বিলে সই করেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। চীনের সামরিক প্রভাব ও হুমকি প্রতিহত করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্ব নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিলেন ট্রাম্প। এই উদ্দেশে তিনি সই করেছেন এশিয়া রিএ্যাসিউরেন্স ইনিশিয়েটিভ এ্যাক্টে (এআরআইএ)। এর ফলে আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরে দেড় বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাজেট অনুমোদিত হলো। নতুন আইনটিতে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে নির্মাণকাজ ও সামরিক সরঞ্জামাদি স্থাপন এবং দেশটির আগ্রাসী বাণিজ্য নীতিকে অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি উপেক্ষা করে একতরফা কর্মকা-ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণকে এতে বৈধতা দেয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে ইসলামিক স্টেটসহ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি তৈরি করেছে। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে এতে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির কথা এতে পুনরুল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত প্রতিরক্ষা সম্পর্ক, সহযোগিতা ও উদ্যোগের বিষয়ে নতুন ফ্রেমওয়ার্কের কথা এই আইনে বলা হয়েছে। নতুন আইনে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা অংশীদারের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এটি ভারতের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা। এর ফলে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ ও জোরদার হলো। নতুন আইনে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের মধ্যে চতুর্পক্ষীয় নিরাপত্তা সংলাপের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তার হুমকি মোকাবেলায় এটি প্রয়োজনীয়। বলা হয়েছে ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চল হবে অবাধ ও মুক্ত। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এখানে কর্মকা- পরিচালিত হবে। এআরআই আইনটি এপ্রিলে মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপন করা হয়েছিল। সিনেটর কোরি গার্ডনার এটি উত্থাপন করেন। উল্লেখ্য, গার্ডনার পূর্ব এশিয়া, প্যাসিফিক ও আন্তর্জাতিক সাইবার সিকিউরিটি পলিসি বিষয়ক মার্কিন সিনেটের ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান। সিনেটর এডওয়ার্ড মার্কি, মার্কো রুবিও ও বেন কার্ডিন বিলটি স্পনসর করেন। বিলটি ৪ ডিসেম্বর সিনেটে পাস হওয়ার পর ১২ ডিসেম্বের কংগ্রেসে অনুমোদিত হয়। ট্রাম্প ২০১৮ সালে যে ১৩টি বিলে সই দেয়ার মাধ্যমে আইনে পরিণত করেছেন তার মধ্যে এটি সর্বশেষ। বছরের শেষ দিনে তিনি ওই বিলে সই করেন। এর আগে সেপ্টেম্বরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি হয়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তখন ভারত সফর করছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তারা ওই সামরিক সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে জানান। তারা দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। পম্পেওর পাশাপাশি সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিসও সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন।
×