ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘদিন সংস্কার নেই

রাবার ড্যামের আওতায় বোরো চাষ অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

রাবার ড্যামের আওতায় বোরো চাষ অনিশ্চিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ২ জানুয়ারি ॥ রাঙ্গুনিয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এবং পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সমন্বয় নেই। শিলক খালের রাবার ড্যাম যথাযত রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। পানি সেচ ব্যবস্থার অভাবে চলতি বোরো মৌসুমে শিলক ইউনিয়নের কয়েকটি বিলের জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, গত বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢলের পানিতে রাবার ড্যামের উজানে মরমের মুখ এলাকায় শিলক রাবার ড্যামের দীর্ঘ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘ সময়েও তা পুনর্নির্মাণ হয়নি। বর্তমানে বোরো মৌসুমের চাষাবাদের উপযুক্ত সময়। বেড়িবাঁধের পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় রাবার ড্যামের আওতায় বিলসমূহের জমিতে পানি সেচের এখনও ব্যবস্থা হয়নি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের জনৈক সহকারী প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাবার ড্যামের পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে সেচ ব্যবস্থাপনায় আয় ব্যয়ের দীর্ঘ সময় ধরে সমন্বয় হচ্ছে না। সমিতির তহবিলের লাখ লাখ টাকা দীর্ঘদিন ব্যাংকের এ্যাকাউন্টে অলস পড়ে আছে। এদিকে ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কতিপয় অসাধু কর্তৃপক্ষ অনিয়মের আশ্রয়ে বছর বছর কৃষকের কাছ থেকে সেচকর আদায় করে আত্মসাৎ করে চলেছে। গত বর্ষায় বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু পুনর্নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেই। উপজেলা প্রকৌশলী দিদারুল আলম জানান, শিলক রাবার ড্যামের বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য উপাত্ত কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে পুনর্নির্মাণ ও মেরামত করা হবে। এদিকে রাবার ড্যামের পানি সেচ ব্যবস্থার জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের অর্থে বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ ও মেরামতের কথা বলা হলেও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সম্মতি মিলছে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সহকারী প্রকৌশলী গনপতি রায় বলেন, কর্মসৃজন প্রকল্পের অর্থে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ করার নিয়ম নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে কর্মসৃজন প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ের অনুমতি দেয়া যাবে না। কর্মসৃজন কর্মসূচীর স্থানীয় কালিন্দিরানী সড়ক রাস্তা পুনর্নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি শিলক ইউপি সদস্য কোব্বাদ আলী তালুকদার জানান, বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজের অন্তর্ভুক্ত নয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাবার ড্যামের আওতায় শিলকের বিখ্যাত তৈলিয়াভাঙ্গা বিলসহ কয়েকটি বিলের দেড়সহ¯্র একর জমিতে শিলক খালের রাবার ড্যামের আওতায় পানি সেচ ব্যবস্থায় বোরো চাষাবাদ হয়ে থাকে। গত বর্ষায় পাহাড়ী ঢলের তোড়ে রাবার ড্যামের উজানে মরমের মুখ এলাকায় বেড়িবাঁধের ৪ স্থানে ভেঙ্গে যায়। ভাঙ্গার স্থানগুলোতে ঢলের ¯্রােত গড়িয়ে দইখালী বিলের প্রায় দুইশত একর জমিতে বালুর স্তর পড়েছে। এসব জমি চাষাবাদের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বিলের কৃষক মোহাম্মদ মুছা জানান, বোরো চাষাবাদের উপযুক্ত সময় ঘনিয়ে এসেছে। বিলে সেচের জন্য রাবার ড্যামের উপরে পানির পর্যাপ্ত স্তর তৈরি হতে কমপক্ষে ২০ দিন সময় লাগে। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মিত না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত পানি ধারনের জন্য রাবার ড্যাম স্থির করা যায়নি। এতে এ বছর শিলকের তৈলিয়াভাঙ্গা, দইখালীসহ, পশ্চিম ও পূর্ব শিলকের বিলসমূহের দেড় হাজার একরের চাষাবাদ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
×