ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইতিহাস গড়বে বিরাট কোহলির ভারত?

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২ জানুয়ারি ২০১৯

ইতিহাস গড়বে বিরাট কোহলির ভারত?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মেলবোর্নে ‘বক্সিং ডে টেস্ট’ জিতে ২-১এ এগিয়ে ভারত। সিডনিতে বৃহস্পতিবার শুরু চতুর্থ ও শেষ টেস্ট। অস্ট্রেলিয়ায় দারুণ ফুরফুরে মেজাজে বিরাট কোহলি এ্যান্ড কোং। সিডনির রাস্তায় স্ত্রী আনুশকার সঙ্গে তোলা টিম ইন্ডিয়া ক্যাপ্টেনের ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ব্যাটিংয়ে-নেতৃত্বে দারুণ এক বছর কাটানো সুপার উইলোবাজের সামনে এবার ইতিহাস গড়ার হাতছানি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ ‘নাম্বার ওয়ান’ দলটির। এ জন্য বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির শেষ ম্যাচটা শুধু ড্র করলেই হবে, জিতলে তো কথাই নেই। তৃতীয় টেস্টে অতিথিরা যেভাবে দাপট দেখিয়েছে, তাতে কোহলিরা ৩-১এ জিতলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ১৯৪৭-১৯৪৮ থেকে গত ৭২ বছরে ১১ বার অস্ট্রেলিয়া সফরে এখনও পর্যন্ত টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি ভারত। ১৯৮০, ১৯৮৬ ও ২০০৩ সালে তিনবার ড্র করাই সেরা সাফল্য। কপিল দেব, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন, সৌরভ গাঙ্গুলীরা যা পারেননি সেই ইতিহাস গড়ার সুযোগ সর্বশেষ ২০১৮ সালে টেস্ট-ওয়ানডে দুই ভার্সনে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক রানের মালিক কোহলির সামনে। মেলবোর্নে ভারতের জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন পেসাররা। বিশেষ করে বুমরাহ ৯ উইকেট নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ায় এবার জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি ও ইশান্ত শর্মাকে নিয়ে ‘ত্রিফলা’ পেস এ্যাটাক গড়ে সাফল্যের দেখা পেয়েছে ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট। আসলে এ বছরটা যেন ভারতের এই ‘ত্রিফলা’ পেস এ্যাটাকের। মেলবোর্ন টেস্টেই দুর্দান্ত এক রেকর্ড গড়েছেন তিন পেসারÑ এক পঞ্জিকাবর্ষে উইকেট শিকারে সবচেয়ে সফল পেস ‘ট্রায়ো’ হওয়ার কীর্তি। এ বছর তিন পেসার মিলে (বুমরা ৪৮, শামি ৪৭ ও ইশান্ত ৪১) মোট ১৩৬ উইকেট নিয়েছেন। তারা ভেঙ্গেছেন ৩৪ বছর আগে ক্যারিবিয়ান পেস ‘ট্রায়ো’র গড়া রেকর্ড, ১৯৮৪ সালে জোয়েল গার্নার, মাইকেল হোল্ডিং আর ম্যালকম মার্শাল মিলে ১৩০ উইকেট নিয়েছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে যদি খেলাতে হয়, বসবেন কে? মেলবোর্নে ৫ উইকেট নেয়া রবীন্দ্র জাদেজাকে কী করে বাইরে রাখা যায়? টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকেই মনে করছেন, জাদেজা খারাপ করেননি। তার আরেকটি সুযোগ প্রাপ্য। সিডনি আবার প্রথাগতভাবে কিছুটা স্পিনারদের সাহায্য করে। তাই হাল্কা করে হলেও তৈরি হতে পারে দুই স্পিনারের খেলার সম্ভাবনা। অস্ট্রেলিয়াও স্পিনার-অলরাউন্ডার টিমে নিয়েছে দেখে মনে হচ্ছে, সিডনির বাইশ গজের বরাবরের চরিত্র পাল্টানো যাবে কি না, তা নিয়ে তারাও নিশ্চিত নয়। অস্ট্রেলিয়া হলো সেই বিরল ক্রিকেট দেশগুলোর একটা, যাদের পিচ কিউরেটররা তাদের ক্যাপ্টেনের কথা শুনতে বাধ্য নন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা শোনেনও না। ইতিহাস গড়ার সুযোগ এমন ম্যাচে ভারতের কম্বিনেশন কি হবে, সেটি নিয়ে চলছে আলোচনা। আগের ম্যাচ দারুণ ব্যাটিং করা রোহিত শর্মা সন্তানকে দেখতে দেশে ফিরে গেছেন। ছয় নম্বর পজিশনে তাই নতুন কাউকে প্রয়োজন। জোরালো সম্ভাবনা, হনুমা বিহারীকে তার পছন্দের জায়গায় ফেরত পাঠানো হতে পারে। বিহারীকে মেলবোর্নে ওপেন করানো হলেও তাকে শর্ট বলের সামনে রীতিমতো হাঁসফাঁস করতে দেখা গিয়েছে। অভিষেকে আলো ছড়ানো মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সঙ্গে তাই ওপেনিংয়ে মুরালি বিজয় অথবা লোকেশ রাহুলের কাউকে দেখা যেতে পারে। সিডনির পিচে ঘাস না থাকলে দুই পেসার বুমরাহ-শামি আর দুই স্পিনার অশ্বিন-জাদেজাকে নিয়ে নামতে পারে ভারত। আর কন্ডিশন দাবি করলে তিন পেসার যথারীতি বুমরাহ, শামি ও ইশান্তের সঙ্গে স্পিনার হিসেবে জাদেজাই হয়তো এগিয়ে থাকবেন। সিরিজ ফয়সালার গুরুত্বপূর্ণ এই টেস্টে দু’দলই শেষ মুহূর্তে সেরা একাদশ নিয়ে মাঠে নামতে চাইবে। যাতে ভুলের খেসারত দিতে না হয়। কোন স্পিনার না খেলিয়ে ভারতকে যেমনটা দিতে হয়েছিল পার্থের দ্বিতীয় টেস্টে। সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক ছিলেন স্পিনার নাথান লেয়ন।
×