ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরে বিপিএল দিয়েই মাঠে নামছেন ক্রিকেটাররা

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২ জানুয়ারি ২০১৯

নতুন বছরে বিপিএল দিয়েই মাঠে নামছেন ক্রিকেটাররা

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল টি২০) খেলার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের নতুন বছর শুরু হচ্ছে। শেষ হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে। তবে ক্রিকেটাররা প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট বিপিএল দিয়ে খেলা শুরু করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই শুরু করবে। গত হয়ে গেছে ২০১৮ সাল। গত বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ (বিসিএল) খেলা দিয়ে ঘরোয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০ ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শেষ করেছেন ক্রিকেটাররা। দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এবারও সাফল্য মিলেছে। টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০তে সাফল্যময় বছর কাটিয়েছে। তিন ফরমেট মিলিয়ে গত বছর মোট ২১টি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি ৪৪ ম্যাচও খেলেছে। ওয়ানডেতে গত বছরে সবচেয়ে বেশি সাফল্য মিলেছে। ২০ ম্যাচের ১৩টি জিতেছে। টেস্ট ম্যাচ ৮টি খেলে জিতেছে তিনটি। টি২০তে ১৬ ম্যাচ খেলে জিতেছে পাঁচটি। এবার বাংলাদেশের সামনে নতুন বছরেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এবার গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলো যে দেশের বাইরে হবে। নতুন বছরের প্রথম মাসে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ব্যস্ত সময় কাটাবে বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা। লীগটিতে মোট ৪৬টি ম্যাচ হবে। ডাবল রাউন্ড রবিন লীগভিত্তিতে খেলা হবে। এরপর প্লে অফ ও ফাইনাল হবে। ৭টি দল অংশ নিচ্ছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ডাইনামাইটস, খুলনা টাইটান্স, রাজশাহী কিংস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, সিলেট সিক্সার্স ও চিটাগং ভাইকিংস খেলবে। ৫ জানুয়ারি লীগ শুরু হবে ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। রংপুরের আইকন মাশরাফি বিন মর্তুজা, ঢাকার আইকন সাকিব আল হাসান, খুলনার আইকন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রাজশাহীর আইকন মুস্তাফিজুর রহমান, কুমিল্লার আইকন তামিম ইকবাল, সিলেটের আইকন লিটন কুমার দাস ও চিটাগংয়ের আইকন মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটারদের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নতুন বছর খেলাও শুরু হয়ে যাবে। রংপুর-চিটাগংয়ের ম্যাচ দিয়ে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের যাত্রা শুরু হবে। বিপিএল শেষ হতেই ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করবে বাংলাদেশ। সফরে কিউইদের বিপক্ষে টাইগাররা তিনটি করে ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ খেলবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ও ২০ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম টেস্ট, ৮ মার্চ দ্বিতীয় টেস্ট ও ১৬ মার্চ তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে। ২০ মার্চ শেষ হবে ওই সিরিজ। এরপর প্রায় এক মাসের বিরতি পাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সেই সময়টিতে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে নিজেদের দক্ষতা দেখাতে নামতে পারেন ক্রিকেটাররা। মে মাসে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে তাদের সঙ্গে থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ সিরিজে চারটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ৬ মে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে সিরিজ, ১৪ মে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে সিরিজ। এ সিরিজটি মূলত বিশ্বকাপের প্রস্তুতিমূলক সিরিজই হবে। এ সিরিজের পরই ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে বিশ্বকাপ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ শুরু হবে ৩০ মে। শেষ হবে ১৪ জুলাই। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শুরু হবে ২ জুন। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২ জুন ওভালে, প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ৫ জুন একই ভেন্যুতে বাংলাদেশ খেলবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ৮ জুন টাইগারদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ইংল্যান্ড, ম্যাচটি হবে কার্ডিফে। ১১ জুন নিজেদের পরের ম্যাচে ব্রিস্টলে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে টাইগাররা। ১৭ জুন টনটনে উইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবে তামিম-সাকিবরা। ২০ জুন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ, ম্যাচটি হবে নটিংহ্যামে। ২৪ জুন সাউদাম্পটনে টাইগারদের প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকছে আফগানিস্তান। ২ জুলাই বার্মিংহ্যামে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল ভারত। আর ৫ জুলাই এশিয়ার পরাশক্তি পাকিস্তানের বিপক্ষে লর্ডসে মাঠে নামবে এশিয়া কাপের বর্তমান রানার্সআপ টাইগাররা। ৯ ও ১১ জুলাই দুটি সেমিফাইনাল শেষে ১৪ জুলাই লর্ডসে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপ শেষে আবারও দুই মাসের বিরতি পাবে বাংলাদেশ। এরপর দেশের মাটিতে অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলবে টাইগাররা। একই মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আছে এক টেস্ট ও দুই ম্যাচ টি২০ সিরিজ। নবেম্বরে আছে ভারত সফর। সেখানে বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি২০ খেলবেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। বছরের একেবারে শেষের দিকে আছে শ্রীলঙ্কা সফর। ডিসেম্বরের এই সিরিজে লঙ্কানদের মাটিতে তিন ম্যাচের একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলবেন স্টিভ রোডসের শিষ্যরা। এর বাইরেও যদি বিসিবি কোন সিরিজ আয়োজন করে তাহলে সেই সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। তবে যে সূচী আছে, তাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা দিয়েই ২০১৯ সাল শেষ করবে টাইগাররা। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঘোষিত নতুন এফটিপি (ফিউচার ট্যুর প্ল্যান) অনুযায়ী বাংলাদেশের টেস্টের সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৩৫টি। ওই পাঁচ বছরে বাংলাদেশ খেলবে ৪৫টি ওয়ানডে আর ৪২টি টি২০ ম্যাচ। ২০১৯ সালে ৬টি টেস্ট, ১৭টি ওয়ানডে ও ৮টি টি২০ খেলবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে কম ম্যাচই খেলবে বাংলাদেশ। সাফল্য ২০১৮ সালের চেয়েও বেশি হোক, সেই প্রত্যাশাই এখন সবার।
×