ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;অপরাধের প্রমাণ মিলেছে

হবিগঞ্জের মধু বাহিনী প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২ জানুয়ারি ২০১৯

হবিগঞ্জের মধু বাহিনী প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হবিগঞ্জ জেলার রাজাকার কমান্ডার ‘মধু বাহিনী’র প্রধান মধু মিয়া তালুকদারসহ দুইজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে তদন্ত সংস্থা সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে রায় হওয়ার পর যে মামলাগুলো আপীল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। মঙ্গলবার ধানম-িতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এ কথা জানান। এ সময় সমন্বয়ক সানাউল হকও উপস্থিত ছিলেন। আসামি মধু মিয়া বানিয়াচং থানার মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপির সমর্থক। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। অপর আসামি পলাতক থাকায় তার নাম প্রকাশ করেনি তদন্ত সংস্থা। হান্নান খান বলেন, আসামি মধু মিয়ার বিরুদ্ধে একাত্তরে গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাটসহ মোট ৫টি অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু হয়। এরপর গত বছরের ২৩ মে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে আসামি মধু মিয়া এবং তার বংশের লোকজন মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি বানিয়াচং থানাধীন মুরাদপুর ইউনিয়নে পিস কমিটি ও ‘মধু বাহিনী’ নামে একটি রাজাকার দল গঠন করেন বলে সাক্ষীদের কাছ থেকে জানা যায়। তখন এ আসামি ওই রাজাকার কমিটির কমান্ডার ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি পলাতক থাকেন। ১৯৭৬ সালে তিনি নিজ গ্রামে ফিরে এসে বিএনপিতে যোগদান করেন এবং ২০১৬ সালে বিএনপি থেকে বানিয়াচং থানাধীন মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। বর্তমানে তিনি এই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি হিসেবে আছেন। এদিকে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির প্রধান সমন্বয়ক মো. আব্দুল হান্নান খান বলেন, ‘২০১৪ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে দাখিল করেছি। এরপর ওই প্রতিবেদনের ওপর কোন চার্জ ফ্রেম হয়নি, কিংবা আমাদের কাছে সেই প্রতিবেদন ফেরতও পাঠানো হয়নি। তাই চার বছর হয়ে যাওয়ায় আমরা ওই তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি। তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে। এছাড়া বিভিন্ন বিচারিক রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে অপরাধী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে। এবং সর্বশেষ জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে রায় হওয়ার পর যে মামলাগুলো আপীল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
×