ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ

বিদ্যুত জ্বালানি খাতের অর্থ সংগ্রহই বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২ জানুয়ারি ২০১৯

বিদ্যুত জ্বালানি খাতের অর্থ সংগ্রহই বড় চ্যালেঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন সরকারের জন্য বিদ্যুত জ্বালানি খাতের অর্থ সংগ্রহই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামীতে বিদ্যুত-জ্বালানির বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ৪০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এই অর্থ সংগ্রহকেই সব থেকে চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন বিদ্যুত জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসা নসরুল হামিদ বিপু। মঙ্গলবার বিদ্যুত বিভাগের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। নসরুল হামিদ বলেন, বিপুল ভোটের এই বিজয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বড় বড় দেশ অভিনন্দন জানাচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয় তারা বাংলাদেশের ওপর আস্থা রেখেছে। সরকারের প্রতি উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর আস্থা অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে বলেও মনে করেন তিনি। নসরুল হামিদ বলেন, আমরা গত পাঁচ বছরে চেষ্টা করেছি মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিতে। এই কাজে আমরা শতভাগ সফল। এখন ৯৪ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুত রয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য সাশ্রয়ী দরে সার্বক্ষণিক বিদ্যুত এবং জ্বালানি সরবরাহ করা। আশা করা হচ্ছে এই দুই কাজেও আমরা সফল হবো। তিনি মনে করেন, বিদ্যুতকে সাশ্রয়ী করে তুলতে হলে নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটাতে হবে। আধুনিক এইসব প্রযুক্তি সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুত সরবরাহ করে। এজন্য বিদ্যুত উৎপাদন মহাপরিকল্পনা আবারও পরিমার্জনের কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, আমরা কোন জ্বালানিতে কি পরিমাণ বিদ্যুত নেব তা ঠিক করতে হবে। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজাতে হবে। আমরা চাইলে প্রতিবেশী দেশ থেকেও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুত আনতে পারি উল্লেখ করে বলেন, এতে আমাদের কোন ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয় না। উদাহরণ হিসেবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইলেকশনের দিন আমাদের মাত্র সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের কেন্দ্র চালাতে হয়েছে। আর বাকি ১৫ হাজার মেগাওয়াটের কেন্দ্র বসেছিল। কিন্তু তাদের ঠিকই অর্থ প্রদান করতে হয়েছে। কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে বিদ্যুত নিলে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয় না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বিনিময়ের ক্ষেত্রে সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশগুলোকে তার ভূখ- ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। এছাড়া তাদের দেশের বেসরকারী খাত থেকে বিদ্যুত কেনার জন্য আগের শর্ত তুলে দিয়েছে। এতে আমরা অনেক সাশ্রয়ী দরে তাদের দেশ থেকে বিদ্যুত আমদানি করতে পারব। এছাড়া এই নীতিতে আমাদের জন্য নেপাল এবং ভুটান থেকে বিদ্যুত আমদানি করা সহজ হবে। আমরা নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে যে বিদ্যুত লাইন করব তা দিয়ে শীতের সময় ওই দুই দেশে বিদ্যুত রফতানিও করা যাবে। প্রসঙ্গত নেপাল এবং ভুটানে জল বিদ্যুত উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করতে চায়। আবার দেশদুটিতে যখন শীত কাল তখন পানি না থাকায় বিদ্যুত উৎপাদন কমে যায়। ওই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ওই দেশে বিদ্যুত রফতানিও করা যায়। তখন বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় অধিকাংশ কেন্দ্রকে বন্ধ রাখতে হয়। গত ১০ বছরে যেভাবে বিদ্যুত খাত এগিয়েছে একইভাবে জ্বালানি খাত এগোতে পারেন। দেশের বিদ্যুত উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানিতে আমদানি নির্ভরতা কাটছে না। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন জ্বালানির সফলতার ওপর নির্ভর করে বিদ্যুতের সফলতা। ফলে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের উচিত ছিল গভীর সমুদ্রে তেল গ্যাস অসুন্ধান জোরদার করা। এজন্য নতুন করে সরকার কাজ শুরু করলে উচিত হবে মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে (সাগরে অনুসন্ধান) করা। তিনি আবারও বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে গত পাঁচ বছর পাশে থাকার জন্য সংবাদ মাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
×