ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্টের প্রতি ওবায়দুল কাদের

জনগণের রায়কে অপমান করবেন না

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২ জানুয়ারি ২০১৯

জনগণের রায়কে অপমান করবেন না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের রায় মেনে নিয়ে শপথে অংশ নেয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও মনে করি তারা (ঐক্যফ্রন্ট) জনগণের রায়কে অপমান করবে না। তারা গতবার নির্বাচন বর্জন করে যে ভুল করেছেন, এবারও জনগণ যে রায় তাদের দিয়েছে- এতে সন্তুষ্ট না অসন্তুষ্ট এটা তাদের বিষয়। নির্বাচনে যে কয়জন নির্বাচিত হয়েছেন তারা জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণের রায়কে তারা যেন অসম্মান না করেন সেটাই বলতে চাই। মঙ্গলবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত ৭ নেতার শপথ না নেয়ার ঘোষণা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আবারও ভুল না করার পরামর্শ দেন তিনি। মন্ত্রীদের শপথ কবে নাগাদ হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আশাকরি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারির মধ্যে এমপি-মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে। জাতীয় পার্টিকে এবারও মন্ত্রীত্ব দেয়া হবে নাকি প্রধান বিরোধী দলে রাখা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলনের ঘোষণা সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দেশে আন্দোলন করার মতো অবস্থায় নেই, আন্দোলনে অংশ নেয়ার মতো কোন বাস্তব প্রস্তুতিও তাদের নেই। এ অবস্থায় আন্দোলনের সূত্র তাদের বিরুদ্ধে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? এতো নার্ভাস ও তারা হতাশায় ভেঙ্গে পড়েছেন। নেতারাই যেখানে হতাশায় ভেঙ্গে পড়েছেন, তখন কর্মীরা কিভাবে আশাবাদী হবে? এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আন্দোলন করতে হলে সেরকম চেতনা দরকার, সেরকম মানসিকতা দরকার। দলকে সু-সংগঠিত করতে সেরকম প্রস্তুতিও দরকার। সেই প্রস্তুতিটা তাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকতো তাহলে সারাদেশে তাৎক্ষণিক একটা মিছিল করতে পারতো, এরকমটাও দেখলাম না। নির্বাচন নিয়ে যে আপত্তি তারা করেছে, এর একটা প্রতিবাদও কোথাও দেখলাম না। বিএনপি নেত্রী জেলে, তার পরেও তারা কোন সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে পারে নি। যা তারা এতদিন করতে পারে নি, এখন তাদের আরও ভাঙ্গাহাট। এই ভাঙ্গাহাট নিয়ে নতুন করে কোন আন্দোলনের সক্ষমতা অর্জন করবে এটা ভাবার কোন কারণ নেই। বিএনপি অচিরেই কোন আন্দোলন গড়ে তুলবে এটাও ভাবার কোন কারণ নেই। নতুন সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ একটাই, যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয় পেয়েছি, জনগণের কাছে ইশতেহারে যে ওয়াদাগুলো আমরা (আওয়ামী লীগ) করেছে সেটার বাস্তবায়নই হচ্ছে আমাদের চ্যালেঞ্জ। এবারের নির্বাচন ৭০, ৫৪ সালের মতো হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, সারাদেশে যে গণজোয়ার, ৭০ সালের পর আমরা এমন জোয়ার দেখিনি। ৭০ সাল, ৫৪ সালের নির্বাচনের ফল যেমনটা নৌকার পক্ষে হয়েছিল, এবারও সেরকমটাই হয়েছে। বিস্ময় প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এতবড় দল বিএনপি যার কোন সাংগঠনিক অবকাঠামো নেই। তারা যে আন্দোলন করতে পারেনি, সাংগঠনিক কাঠামোতে দুর্বলতা এটাই ছিল বড় কারণ। এবারকার নির্বাচনে দেখা গেছে, তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে, তাদের মধ্যে যাদেরকে হেভিওয়েট বলা হয়, তারাও নিজেদের কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি। এজেন্ট দিতে না পারলে ভোটের ফলের প্রতিক্রিয়া তো এমন হবেই। আমরা তো তাদেরকে অনুরোধ করেও এজেন্ট দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোথাও তাদের পোস্টার নেই, ব্যানার নেই। এগুলো কিসের লক্ষণ? নির্বাচনে হারার আগেই তারা হাল ছেড়ে দিয়েছেন, তাহলে নির্বাচন করবে কেমন করে? নির্বাচন করার মতো কোন প্রস্তুতিই তাদের মধ্যে ছিল না। তবে মওদুদ আহমেদ সাহেবের সঙ্গে এমন জয় আমি আশা করিনি। আমি ভেবেছিলাম তিনি থাকবেন, উনার এজেন্টরা থাকবেন, তাহলে তো ভোটের ব্যবধানটা অনেক কমে যেত। এত ব্যবধান হতো না। তিনি বলেন, এবার তাদের পরাজয়টা ছিল অবধারিত। পরাজয়টা হয়তো কোন কোন জায়গায় অস্বাভাবিক মনে হয়, সেটাও তাদের ভুলের কারণে। আপনি এজেন্ট দিবেন না, তাহলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কি প্রয়োজন ছিল? যদি নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবেন তাহলে প্রচার পিছিয়ে ছিলেন কেন? আসলে নির্বাচনের নামে একটা নাটক তারা করেছেন সারাবিশ্বকে দেখানোর জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে।
×