ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কাণ্ডারি শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ২ জানুয়ারি ২০১৯

কাণ্ডারি শেখ হাসিনা

পাল তুলে দিয়েছিলেন তিনি তাঁর নায়ে। বৈঠা ধরেছিলেন শক্ত হাতে। সেই তরী উথাল-পাথাল স্রোতের ভেতর দিয়ে পাড়ি দিয়েছে খাল বিল নদী নালা থেকে সাগর মোহনায়। কবিগুরু সেই ১৯০৫ সালে গিয়েছিলেন, ‘এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে, জয় মা বলে ভাসা তরী।’ আর তিনি রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করে ‘জয় বাংলা’ বলে ভাসিয়েছিলেন তরী। বিশাল বাংলাদেশের বুক জুড়ে তাঁর নৌকা ভেসেছে দুর্বার গতিতে। বাঙালী সবাই মিলে বৈঠা ধরেছিল, পাড়ি দিতে নদীর পর নদী। একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বেজে উঠত সেই গান ‘আরে ও আমার বাংলাদেশের মাঝি ভাই/জয় বাংলা বইল্যা আসো নায়ের পাল উড়াই/’। সেই পাল ১৯৭০ সালে উড়িয়েছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙালী। আর ২০১৮ সালে উড়িয়েছে ১৭ কোটি বাঙালী। নায়ের বাদাম তুলে মাঝি ছুটে চলছে বাংলার প্রতি ঘাটে, বন্দরে। সবখানে তাঁর তরী ভিড়েছে মানুষের টানে, তাদেরই আবাহনে। পিতা শেখ মুজিব ‘অকুল দরিয়ার মাঝে বাংলাদেশের নাও’ বেয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্বাধীনতার পথে। সেই নাও কন্যা শেখ হাসিনা বেয়ে চলছেন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে। নদী, নৌকা, নারী ও নদীমাতৃক বাংলাদেশ। অর্থাৎ নৌকা তুলনাহীন নীতির প্রতীক। সারা বাংলার মানুষ নৌকার মানুষ হয়ে এগিয়ে যেতে চায় অগ্রগতির পথে। আর চালকের আসনে বসে তিনি এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁর প্রিয় দেশের জনগণকে। তাই একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি দেশবাসীর মধ্যে এক নতুন জাগরণ তৈরি করেছেন। উৎসাহ-উদ্দীপনা দেশের মানুষের মধ্যে প্রকট হয়ে উঠেছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তাই চাইছে আরও উন্নয়ন, আরও সমৃদ্ধি। দেশবাসীকে তিনি হতশ্রী, দরিদ্র অবস্থান থেকে সরিয়ে উন্নত জীবনের দিকে ধাবিত করেছেন। নিম্ন আয়ের তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশটিকে ক্রমশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার পথপরিক্রমা অব্যাহত রেখেছেন। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন বিদ্যুতের আলো। আলোকিত আজ বাংলার প্রতিটি ঘর-বাড়ি। বাংলার প্রতিটি ঘর ভরে দিয়েছেন ভাত-কাপড়ে। শিক্ষাকে সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে বিনামূল্যে বই, খাতা, উপবৃত্তিসহ শিক্ষার উপকরণ প্রদানে তিনি সচেষ্ট। নারী শিক্ষার হার যেমন বেড়েছে, তেমনি কমেছে শিশু মৃত্যুর হার। গত এক দশকে তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বকালে দেশ উন্নয়নের পথ ধরে যতদূর এগিয়েছে তা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। দেশের সরকারী ও বেসরকারী খাতের অগ্রযাত্রা হয়েছে চাওয়ার অধিক। দেশের মানুষ আজ দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে-পরে সঞ্চয় করার মতো অবস্থানে পৌঁছেছে। দুর্ভিক্ষ, ভিক্ষুক, অনাহার শব্দগুলো ক্রমশ মুছে গিয়েছে বাঙালীর জনজীবন থেকে। আর এ কাজটি সম্ভব হয়েছে তাঁরই কর্মকুশলতা, কর্মনিষ্ঠতার কারণেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা, প্রবৃদ্ধি দুই ডিজিটে নিয়ে যাওয়া, বেসরকারী বিনিয়োগ আকৃষ্টে সরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর, রফতানি বাড়াতে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা করেছেন, তাতে দেশের সকল স্তরের ব্যবসায়ীরা তাঁর নেতৃত্বের প্রতি তাদের সমর্থন তুলে ধরেছেন। তারা আবারও চেয়েছেন শেখ হাসিনাকে। যেমন চেয়েছেন দেশের পেশাজীবীসহ অন্যান্য স্তরের মানুষজন। দেশবাসী জানেন, দেশকে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসমুক্ত করার অভিপ্রায়ে গত দশ বছরে যে তৎপরতা চালানো হয়েছে তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার তিনিই করতে পারেন। জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষকরা জয়ী হলে দেশ যে অন্ধকারের রসাতলে ডুবে যাবে, হাওয়া ভবন তৈরি করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যেভাবে চাঁদা ও কমিশন নেয়া হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি ঘটুক, তা কেউ চায়নি। এক দশক ক্ষমতায় থেকে তিনি দেশকে যে স্তরে উন্নীত করেছেন তা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে বিরোধীরাও। দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি, মানুষের বিকাশ যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বহুদূর এগিয়ে যাবে তা এদেশের মানুষের বিশ্বাসবোধে লালিত। কেবলই অন্ধকার, কেবলই কানামাছির জগতে বাংলার মানুষ ফিরে যেতে চায় না। তারা চায় আরও আলো। আলোকে আলোকময় হোক সারাদেশ। তাঁর সরকারের অধীনে যে অবাধ, স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব, তা দেশবাসী আবারও প্রত্যক্ষ করেছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে ত্রিশে ডিসেম্বর দেশবাসী তাই ভোট দিয়েছে নৌকায়। আর চেয়েছে আবারও শেখ হাসিনা। ভুবনজোড়া যার আসনখানি।
×