ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটার উপস্থিতি বেশি হলেই আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট বিপ্লব

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১ জানুয়ারি ২০১৯

ভোটার উপস্থিতি বেশি হলেই আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট বিপ্লব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে যতবারই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় হয়েছে ততবারই ভোটার উপস্থিতিও বেশি হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যতবার আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট বিপ্লব হয়েছে প্রতিবার ভোটার উপস্থিতি ছিল ৮০ ভাগের বেশি। একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনও এর ব্যতিক্রম ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটের পরিসংখ্যান এ বার্তাই দিচ্ছে যে মানুষ যদি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তাহলে তারা সেই প্রার্থীদেরই ভোট দেন যারা একটি সুন্দর দেশ, সুন্দর সমাজ উপহার দিতে পারেন। এক্ষেত্রে মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের বিকল্প কেউ নেই। তাই যখনই মানুষ বেশি ভোট দিতে পারে ফল স্বাভবিকভাবেই যায় আওয়ামী লীগের দিকে। এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মোট ২৫৯ আসনে জয়ী হয়েছে সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট লাভ করেছে ২৮৮ আসন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ২৮৮ আসনে বিজয়ী ছিল। পরিসংখ্যান অনুসারে একাদশতম জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০০৮ সাল নবম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় লাভ করে। সেবার নতুন ভোটাররা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান ঘোষণা করে এবং ভোটে সেই ফল স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। এই নির্বাচনে মোট ভোটারের ৮৭.১৩% ভাগ ভোট প্রদান করে। এটি সর্বোচ্চ ভোটারের অংশগ্রহণের রেকর্ড বাংলাদেশের জন্য। আর একাদশতম জাতীয় নির্বাচন সেই হিসেব অনুসারে দ্বিতীয়। এর আগে ২০০১ সালের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণের অনুপাত ছিল মোট ভোটারের ৭৫.৫৯ ভাগ। বিতর্কিত এই নির্বাচনে মোট ভোটার উপস্থিতি থেকে বেশি ভোট প্রদান দেখানো হয়। ১৯৯৬ সালের বিতর্কিত ও বাতিল নির্বাচনে ভোট দেয় ২৬.৫ শতাংশ ভোটার এবং পরবর্তী নির্বাচন ৭৪.৯৬ ভাগ। অর্থাৎ যতবারই আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৭০ ভাগের বেশি। ১৯৯১ সালে মাত্র ৫৫.৪৫ ভাগ ভোটার নির্বাচনে ভোট প্রদান করে। আরেকটি তথ্য হচ্ছে, অবিভক্ত পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের শেষ নির্বাচনে ১৯৭০ সালে জনপ্রিয় দল হিসেবে ভোট বিপ্লব ঘটায় আওয়ামী লীগ। তৎকালীন সরকার জানায় নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ করে এবং প্রায় ৬৫% ভোট প্রদান করে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মোট ৩০০ আসনের ২৮৮ আসনে বিজয়ী হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. সফিউল আলম ভূঁইয়া বলছিলেন, আসলে বিষয়টি খুব পরিষ্কার। যখন দেশে ভোট দেয়ার ভাল পরিবেশ থাকে নির্বিঘ্নে মানুষ ভোট দিতে পারে তখন বেশি মানুষ ভোট দিতে চলে আসেন। নির্বাচনে ভোটের উপস্থিতির পরিসংখ্যান এ বার্তাই দিচ্ছে যে, মানুষ যদি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তাহলে তারা সেই প্রার্থীদেরই ভোট দেন যারা একটি সুন্দর দেশ, সুন্দর সমাজ উপহার দিতে পারেন। এক্ষেত্রে মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের বিকল্প কেউ নেই। তাই যখনই মানুষ বেশি ভোট দিতে পারে ফল স্বাভবিকভাবেই যায় আওয়ামী লীগের দিকে। আসলে মানুষের সামনে সেই দল আর নেই যারা একটি সুন্দর দেশ দিতে পারে, একটি সুন্দর সমাজ দিতে পারে। মানুষ সুযোগ পেলেই তাই যেখানে বেশি আস্থা পান সেই দলকে সেই প্রার্থীকে ভোট দেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
×