ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুনর্নির্বাচনের দাবি নাকচ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১ জানুয়ারি ২০১৯

পুনর্নির্বাচনের দাবি নাকচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ঐক্যফ্রন্ট ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করলেও তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, আমরা যেখানে অনিয়ম পেয়েছি, তাৎক্ষণিকভাবে সেখানেই নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছি। দেশী-বিদেশী কোন গণমাধ্যমে আমরা নির্বাচনে অনিয়ম দেখতে পাইনি। নতুন করে নির্বাচন করব না। যে নির্বাচন করেছি, সেটি নতুন করে করার কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করেন সিইসি। সোমবার বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নির্বাচনের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেড় শতাধিক আসনে আগের রাতেই নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরা হচ্ছে বলে ঐক্যফ্রন্টের দাবি সত্য নয়। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সম্পূর্ণ অসত্য কথা বলেছেন। ভোট চলাকালীন মধ্যাহ্নভোজের বিরতির নামে পরে অনেক কেন্দ্রে আর ভোটই নেয়া হয়নি। সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেয়া হয়নি। নির্বাচনে বিরতি দেয়া আইনের ব্যত্যয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। এমনটি হওয়ার কথা নয়। বিরতিহীনভাবেই ভোট হওয়ার নিয়ম। এ ধরনের অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে দেখব। তিনি বলেন, নির্বাচনে বিজয়ীদের গেজেট প্রকাশে দেরি করা হবে না। নির্বাচন বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আমরা খতিয়ে দেখব। তবে গেজেট প্রকাশ হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফল আসতে আরও ৪/৫ দিন সময় লাগবে। এরপরই আমরা গেজেট প্রকাশ করব। ভোটের নানা অনিয়ম নিয়ে তিনি বলেন, ‘না, ভোট নিয়ে আমরা মোটেও লজ্জিত নই। এটা লজ্জার কোন বিষয় নয়। দু’একটা কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকলে, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব। যে যেভাবেই দেখুক, এই নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইসি সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন সিইসি। নির্বাচনে ভোটের ব্যবধানে তারতম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তো আমাদের দেখার বিষয় না, বিশ্লেষণেরও কিছু নেই। কারণ, ভোট তো আমরা দেইনি। ভোট দিয়েছে জনগণ।’ এর আগে গত রবিবার ভোট গ্রহণ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্ট আহ্বায়ক ড. কামাল বলেন, কোথাও নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে তিনি পুনর্ভোট দাবি জানান। এদিকে একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়েও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এটা কোন নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনের নামে তামাশা করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট কারচুপি করা হয়েছে। তিনি এই নির্বাচন বাতিল করার দাবি জানান। এদিকে নেয়াখালী-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ইসিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সোমবার তিনি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অভিযোগ করে বলেন, এই নির্বাচন জাতির সঙ্গে প্রতারণা এবং সংবিধান লংঘন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে মাসব্যাপী সরকারী দলের লোকজন তা-ব করেছে। অস্ত্র প্রদর্শন করেছে, গোলাগুলি করেছে, বোমাবাজি করেছে। এসবের বিরুদ্ধে কয়েকবার আবেদন জানিয়েও প্রতিকার পাইনি। নির্বাচনের আগের রাতে ডিসিকে ফোন করেছিলাম, তিনি ধরেননি। আমার নির্বাচনী আসনের (নোয়াখালী-১) প্রত্যেকটি কেন্দ্রে রাত আটটা থেকে বোমাবাজি করেছে, সঙ্গে পুলিশও ছিল। সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসতে পারেননি। ব্যালেট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরা হয়েছে। আমার আসনে ১২৯ কেন্দ্রে এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। দু’একটি জায়গায় প্রথমে ঢুকতে দিলেও পরে বের করে দেয়া হয়। ১৫০ জন এজেন্ট, নারী ভোটারসহ অনেকে আহত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ইসি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। নির্বাচন কমিশন সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। এজন্য আমি ইসির বিচার দাবি করছি।
×