ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পকে সমঝোতা বার্তা

পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বৈঠকে আগ্রহী উন

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ১ জানুয়ারি ২০১৯

পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বৈঠকে আগ্রহী উন

স্থগিত পরমাণু আলোচনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমঝোতার বার্তা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। শুক্রবার অনির্ধারিত চ্যানেলের মাধ্যমে কিমের ‘চিঠির মতো’ বার্তাটি ট্রাম্পকে পৌঁছে দেয়া হয়। কূটনীতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দক্ষিণ কোরীয় সংবাদমাধ্যম চোসুন ইলবো। ইয়াহু নিউজ। রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের কার্যালয় বলেছে, কিম সিউলে মুনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয় কোরীয় উপদ্বীপ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে কিম এ বছর আরও আন্তঃকোরীয় বৈঠকে বসতে চান। তবে এ প্রতিবেদনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বা সিউলের মার্কিন দূতাবাস থেকে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মুনের অফিসও চোসুন ইলবোর প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। প্রতিবেদনে ট্রাম্পকে পাঠানো কিমের বার্তার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। তবে এতে বলা হয়েছে, ওই বার্তা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং এর ভাষা ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ বা সমঝোতামূলক। এর আগে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে দেশটির তিন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরপরই পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে তখন এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। এখন দৃশ্যত সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগী চীন। ২০১৭ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্কোন্নয়ন হয়েছে তাদের। গত বছরের জুনে সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। সেখানে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ওপর জোর দেয়া হয়। এদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো বৈঠক অব্যাহত রাখার ইচ্ছার জন্য ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিয়েছে, তবে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার জন্য মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টর সমালোচনা করেছে। এদিকে বাণিজ্যযুদ্ধে গত বছরজুড়ে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের পর এখন চীনের সঙ্গে সম্পর্কে ‘বড় ধরনের অগ্রগতি হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতার বিষয়টিতে চীন যথেষ্ট আমল দিচ্ছে না বলে ট্রাম্প অভিযোগ করলে গত বছরের শুরুর দিকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর এ মাসের শুরুর দিকে দুই দেশই আলোচনার দ্বার খুলতে একে অপরের ওপর নতুন করে শুল্কারোপ করা বন্ধ করতে রাজি হয়। শনিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি করা নিয়ে আলোচনা খুব ভালভাবে এগুচ্ছে বলে জানান তিনি। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো ফোনে প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে ট্রাম্পের আলাপের কথা নিশ্চিত করেছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি দল ট্রাম্পের সঙ্গে যে মতৈক্য হয়েছে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে বলেও শির উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। প্রেসিডেন্ট শি যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ এবং দু’দেশের মধ্যে গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টার প্রশংসা করেছেন। চীনের রাষ্ট্রপরিচালিত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘আশা করি দুই দেশের দল একে অপরের সঙ্গে বৈঠক করবে এবং কঠোর পরিশ্রম করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দু’দেশের জন্য এবং বিশ্বের জন্যও উপযোগী একটি চুক্তিতে পৌঁছার চেষ্টা করবে।’ সবাইকে অবাক করে দিয়ে ট্রাম্পই প্রথম চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপের কথাটি নিশ্চিত করেন। এক টুইটে তিনি লেখেন, ‘চুক্তির বিষয়টি ভালভাবে এগুচ্ছে। চুক্তি হয়ে গেলে তা হবে সামগ্রিক একটি চুক্তি। প্রতিটি ক্ষেত্র, প্রতিটি বিষয় এমনকি প্রতিটি বিতর্কিত ইস্যু আমলে নিয়েই এটি করা হবে।’ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক এর আগে ঝড়ের মধ্য দিয়ে গেছে। কিন্তু দুই দেশের পাশাপাশি বিশ্বে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং শান্তির জন্য দু’য়ের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হওয়া জরুরী।
×