ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাগত ২০১৯

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ১ জানুয়ারি ২০১৯

স্বাগত ২০১৯

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয় দিয়েই শুরু হলো ২০১৯ সাল। মহাকালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেল একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের আরও একটি বছর। বর্ষ পরিক্রমায় যুক্ত হলো আরেকটি পালক। নতুন একটি বর্ষে পদার্পণ করল। শান্তি, সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনার অপার বারতা নিয়ে শুরু হলো নতুন বছর। স্বাগত খ্রিস্টীয় নববর্ষ ২০১৯। পুরনো বছরটি পেছনে ফেলে সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার দুরন্ত আহ্বানে মানুষ স্বাগত জানায় আগত ভবিষ্যতকে। বিদায়ী বছরের ব্যর্থতাকে সরিয়ে রেখে নতুন বছরে নতুনভাবে শুরু হলো পথচলা। সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব পেছনে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দিন হলো শুরু। পুরনো বছরের সংশয়, সঙ্কট, উদ্বেগ কাটিয়ে উঠে নতুন ভাবনার আশায় নতুন করে দিনযাপন শুরু আজ থেকে। বিশ্ববাসী প্রবেশ করল একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের শেষের আরও এক বছরে। স্বাধীনতার ছেচল্লিশটি বছর পূর্ণ করে বাংলাদেশও পা ফেলল সাতচল্লিশতম বর্ষে। নতুন বছর মানে নবযাত্রা। নতুন আশা এবং নতুন করে পুরনো সমস্যা মোকাবেলা করে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দিনের যাত্রা হলো শুরু। খ্রিস্টীয় নতুন বছরের প্রথম প্রভাতে আমাদের অগণিত পাঠক, লেখক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। নতুন বছর সবার জীবনে শুভ হয়ে দেখা দেবে এটাই কাম্য। বাঙালী জীবনে গ্রেগরিয়ান নববর্ষ পালনের রেওয়াজ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে অনুসৃত হয়ে আসছে বলা যায়। সম্প্রতি তা পরিসরে বেড়েছে। ইংরেজী নববর্ষ হিসেবে বাঙালীর কাছে পরিচিত দিবসটি পালনের ধরন সারা পৃথিবীতে একই রকম। পশ্চিমা বিশ্বে এর আনন্দটা একটু বেশি, পশ্চিমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালীও নতুন আনন্দে মেতে ওঠে তথ্যপ্রযুক্তির এই প্রাগ্রসর যুগে। বহু মানুষ এদিন শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা কার্ড, এসএমএস, ফেসবুক, টুইটার, এ্যাপল এবং ই-মেইলে হাজার হাজার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। পুরনো বছর যেমনই কাটুক, নতুন বছর যেন ভাল কাটে সেই কামনা থাকে সবার মধ্যে। নতুন বছরে, নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন দেখে শান্তি, স্বস্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির। বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদমুক্ত সমাজ, যুদ্ধাপরাধীদেরও শাস্তি হবে, বিনাশ হবে অগণতান্ত্রিক অপশক্তি, জঙ্গীবাদ, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা ও অপরাজনীতি। দেশবাসী প্রত্যাশা করে সমঝোতার সংস্কৃতি রচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অগ্রসর হবে। নিম্নমধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে একাগ্রতার সঙ্গে সবাই কাজ করবে। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি যেন আর মাথাচাড়া দিতে না পারে সে বিষয়ে সকলেই সমান দৃষ্টি রাখবে। জীবনের নিরাপত্তা, সহনীয় দ্রব্যমূল্য এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও এগিয়ে নিতে সবাই মিলে কাজ করা হোক এটাই নববর্ষের প্রত্যয়। দেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে আইনের শাসনের ভিত আরও মজবুত হোক। দেশের সব ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রয়াস বিস্তৃত হোক। বাড়ুক গড় আয়ু। শিক্ষা-দীক্ষায় ঘটুক আরও বিস্তার। যেন কোন মানুষ আর থাকতে না পারে নিরক্ষর। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে নিয়ে যেন আর কেউ কটাক্ষ করতে না পারে। স্বাধীনতার মূল্যবোধ থাকুক অক্ষুণ্ণ। জঙ্গীবাদ নির্মূল হোক দেশ থেকে। সাম্প্রদায়িক শক্তির ঘটুক বিনাশ। নববর্ষের এই শুভলগ্নে সারাদেশের মানুষ সমবেত আনন্দ আয়োজনে উৎফুল্ল নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানায় নববর্ষকে। প্রার্থনা করে সব বাধাবিঘ্ন কেটে গিয়ে পৃথিবীতে উদিত হবে নতুন সূর্য, তারই আলোয় রেঙে উঠুক দেশের সবকিছু। বাংলাদেশ নতুন আশায় বাঁধুক বুক। এগিয়ে যাক সমৃদ্ধি ও উন্নতির পথে। আর এই আশাতেই শুরু হোক পথপরিক্রমা। শান্তি, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য আর দেশের প্রতি অগাধ ভালবাসায় নতুন এক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হোক নতুন বছরের অঙ্গীকার। ২০১৯ সালে উন্মোচিত হোক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। সুস্বাগত ২০১৯।
×