ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোহাম্মদ সালাহর মহানুভবতা!

প্রকাশিত: ০৭:২৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

  মোহাম্মদ সালাহর মহানুভবতা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের বিস্ময় তারকা মোহাম্মদ সালাহ। শুধু দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের সৌজন্যেই নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন লিভারপুলের এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড। তবে নিজের আজকের এই অবস্থানের পেছনে সব কৃতিত্ব তার বাবাকেই দিলেন সালাহ। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে অতীতের সেই গল্পটাই শুনালেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সালাহ বলেন, ‘আমি তখন অভিযোগ করতাম। বলতাম, চার ঘণ্টা ভ্রমণ করে অনুশীলনে যেতে পারব না। তখন বাবাই আমাকে সাপোর্ট দিতেন, বলতেন সব কিংবদন্তি খেলোয়াড়ই এভাবে বড় হয়েছে। তার মূল্য সত্যিই অনেক বেশি। আমার ক্যারিয়ারে তিনি যে অবদান রেখেছেন তা কোনদিনই ভুলতে পারব না। এরপরই আমি সিদ্ধান্ত নেই যে, আমাকে অবশ্যই একজন পেশাদার ফুটবলার হতে হবে। সেটা আমার জন্য একটা সুযোগ ছিল, তখনই সিদ্ধান্ত নেই হেলায় এই সুযোগ নষ্ট না করার।’ সেই সালাহই এখন বিশ্ব ফুটবলে খ্যাতির চূড়ায়। সম্প্রতি টানা দ্বিতীয়বারের মতো আফ্রিকার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন। তবে ক্যারিয়ারের শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না সালাহর। মিসরের ঘরোয়া ফুটবলে এল মোকালুন ক্লাবের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছিল তার। ১৪ বছর বয়সে নিজ শহর থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা বাসে চেপে রাজধানী কায়রোর মোকালুন ক্লাবের অনুশীলন মাঠে পৌঁছতেন তিনি। কোন কোনদিন আসা-যাওয়াও পাঁচবার করে ট্রেন বদল করতে হতো তাকে। ২০১০ সালে মিসর অনুর্ধ-২০ দলের জার্সি গায়ে অভিষেক তার। তবে দলে প্রথম পছন্দের লেফট-ব্যাক ছিলেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম, সামর্থ্য ও বাঁ-পায়ের দক্ষতা নিয়ে ক্রমেই নিজেকে আক্রমণভাগের একজন খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলেন সালাহ। আর প্রচারবিমুখ ফুটবলার সালাহকে নিয়ে মিসরের ক্রীড়ালেখক মারওয়ান সাঈদ বলেন, সে খুবই বাস্তববাদী, শান্ত একজন ফুটবলার এবং মানুষ। দেশে বা মিসরের বাইরে বরং সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়েই চলে সে। ২০১২ সালে মিসর থেকে সুইজারল্যান্ডের এফসি বাসেলে পাড়ি দেন সালাহ। ইউরোপে তার প্রথম গুরু বাসেল কোচ মুরাত ইয়াকিন। ২০১৩-১৪ সালে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপপর্বে জোশে মরিনহোর চেলসির বিপক্ষে দুই লেগে জয় দেখে বাসেল। দুই লেগেই গোল পান সালাহ। ২০১৩ সালে ইউয়েফা ইউরোপা লীগে কোয়ার্টার ফাইনালে সালাহর গোলে ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যামের বিপক্ষে জয়ী হয় বাসেল। ওই বছরই ১১ মিলিয়ন পাউন্ডে সালাহকে কিনে নেয় চেলসি। সালাহর দিকে নজর ছিল লিভারপুলেরও। তবে চেলসির জার্সি গায়ে প্রিমিয়ার লীগে মাত্রই ১৩ ম্যাচ খেলার সুযোগ পান মোহাম্মদ সালাহ। পরে টানা দুই মৌসুম সালাহকে ধারে খেলতে পাঠানো হয় ইতালিয়ান ক্লাব ফিওরেন্টিনা ও এএস রোমায়।
×