ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেলবোর্ন টেস্ট

অধিনায়ক কোহলির রেকর্ড ওলট পালট করা এক জয়

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

অধিনায়ক কোহলির রেকর্ড ওলট পালট করা এক জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চতুর্থদিনে ভারত আর জয়ের মাঝখানে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন প্যাট কামিন্স। শেষদিনে সে লড়াই আর দীর্ঘ হয়নি। মাত্র ২৭ বলের ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়ার শেষ দুই উইকেট তুলে নিয়ে মেলবোর্ন টেস্টে ১৩৭ রানের বড় জয় পেয়েছে সফরকারীরা। কামিন্স ৬৩ আর নাথান লেয়ন ফিরেছেন ৭ রান করে। ৩৯৯ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে নামা অসিদের ইনিংস গুটিয়ে গেছে ২৬১ রানে। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১৫১। ভারত ৪৪৩/৭ ডিক্লেঃ ও ১০৬/৮ ডিক্লেঃ। ৬ ও ৩ মোট ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। তবে নেতৃত্বের সাফল্যে গ্রেট সৌরভ গাঙ্গুলীকে ছুঁয়ে আলোচনায় সুপার কোহলি। দারুণ এ জয়ে চার ম্যাচের বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ‘নাম্বার ওয়ান’ ভারত। ৩ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার সিডনিতে শুরু সিরিজ নির্ধারণী চতুর্থ ও শেষ টেস্ট। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রবিবার পঞ্চম ও শেষদিনে বৃষ্টিতে ভেসে যায় প্রথম সেশন। দ্বিতীয় সেশনে খেলা শুরু হলে মাত্র ৩ রান যোগ করতেই অলআউট ৮ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া। আগেরদিন অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ গড়া কামিন্সকে (৬৩) ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন বুমরাহ। পরের ওভারে লেয়নকে (৭) ফিরিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন ইশান্ত শর্মা। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুটি টেস্ট জিতল ভারত। সেবার পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে হেরে গিয়েছিল সফরকারীরা। মেলবোর্নে জিতে ভারতের হয়ে ‘অধিনায়ক’ হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলীর দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি ১১ টেস্ট জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করলেন কোহলি। দারুণভাবে ২০১৮ সাল শেষ করল তার দল ভারতও। আগামী বছর তদের সামনে অপেক্ষা করছে আরও বড় প্রাপ্তির হাতছানি, প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয়। আগের ১১ সফরে তিনবার সিরিজ ড্র করতে পেরেছিল ভারত যার শেষটি ২০০৩-০৪ মৌসুমে। ২০১৪ সালে ভারতের টেস্ট দলের নেতৃত্বভার পান কোহলি। প্রতিপক্ষের মাঠে এ পর্যন্ত ২৪ ম্যাচে দেশের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। মেলবোর্নে তুলে নেয়া জয়টা ‘অধিনায়ক’ হিসেবে প্রতিপক্ষের মাটিতে তার ১১তম জয়। আর এতেই উঠে এসেছে সৌরভ প্রসঙ্গ। ২০০০ থেকে ২০০৫- এই সময়ে ভারতের নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে সৌরভও ১১ টেস্ট জিতেছিলেন। ভারতের অধিনায়ক হয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে সর্বোচ্চ টেস্ট জয়ের রেকর্ডটি এতদিন সৌরভের একার দখলে ছিল। মেলবোর্নে জিতে পূর্বসূরির সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন কোহলি। তবে এই ১১ টেস্ট জিততে সৌরভের (২৮ ম্যাচ) চেয়ে কম ম্যাচ (২৪ ম্যাচ) লাগল কোহলির। ভারতের এ দুই অধিনায়কই প্রতিপক্ষের মাঠে ন্যূনতম ১০টি করে টেস্ট জিতেছেন। মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো কিংবদন্তি ক্যাপ্টেনও এই তালিকায় দু’জনের পেছনে। কোহলি একটি জায়গায় টেক্কা দিয়েছেন তার বাকি সব পূর্বসূরিকে। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াÑ এই চার দেশে ১৩ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ৪টিতে জয় তুলে নিয়েছেন কোহলি। ধোনি ২৩ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৩ জয় তুলে নিয়ে দ্বিতীয়। কোহলির মতো আর কোন ভারতীয় অধিনায়কই এই চার দেশে এত জয়ের মুখ দেখেননি। সুপার উইলোবাজের অপেক্ষা এবার ইতিহাস গড়ার। সিডনির শেষ ম্যাচ জিতে প্রথম ভারতীয় ‘অধিনায়ক’ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয়ের হাতছানি কোহলির সামনে। স্কোর ॥ ভারত প্রথম ইনিংস ॥ ৪৪৩/৭ ডিক্লেঃ (১৬৯.৪ ওভার; বিহারি ৮, আগারওয়াল ৭৬, পুজারা ১০৬, কোহলি ৮২, রাহানে ৩৪, রোহিত ৬৩*, পন্থ ৩৯, জাদেজা ৪; স্টার্ক ২/৮৭, হ্যাজলউড ১/৮৬, লেয়ন ১/১১০, কামিন্স ৩/৫১, মার্শ ০/৫১, ফিঞ্চ ০/৮) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ১০৬/৮ ডিক্লেঃ (৩৭.৩ ওভার; বিহারি ১৩, পুজারা ০, কোহলি ০, রোহিত ৫, আগারওয়াল ৪২, পন্থ ৩৩, জাদেজা ৫, শামি ০*; স্টার্ক ০/১১, হ্যাজলউড ২/২২, লেয়ন ০/৪০, কামিন্স ৬/২৭)। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ॥ ১৫১/১০ (৬৬.৫ ওভার; হ্যারিস ২২, ফিঞ্চ ৮, খাজা ২১, শন মার্শ ১৯, হেড ২০, মিচেল মার্শ ৯, পেইন ২২, কামিন্স ১৭, স্টার্ক ৭*, লেয়ন ০, হ্যাজলউড ০; ইশান্ত ১/৪১, বুমরাহ ৬/৩৩, জাদেজা ২/৪৫, শামি ১/২৭, বিহারি ০/১) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ২৬১/১০ (৮৯.৩ ওভার; হ্যারিস ১৩, ফিঞ্চ ৩, খাজা ৩৩, শন মার্শ ৪৪, হেড ৩৪, মিচেল মার্শ ১০, পেইন ২৬, কামিন্স ৬৩, স্টার্ক ১৮, লেয়ন ৭, হ্যাজলউড ০* ; ইশান্ত ২/৪০, বুমরাহ ৩/৫৩, জাদেজা ৩/৮২, শামি ২/৭১, বিহারি ০/৭)। ফল ॥ ভারত ১৩৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)। সিরিজ ॥ চার টেস্ট সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে।
×