ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা একাদশে মুস্তাফিজ

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা একাদশে মুস্তাফিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তিন বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব ঘটেছিল মুস্তাফিজুর রহমানের। সে বছর মাত্র ৯ ওয়ানডে খেলেই ২৬ উইকেট শিকার করেছিলেন। বছর শেষে সারাবিশ্বের ওয়ানডে বোলিংয়ে অবস্থান ৯ নম্বরে হলেও আইসিসির বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। মাঝে দুই দফা বড় ইনজুরি এবং অস্ত্রোপচারের পর অবশ্য ‘কাটার মাস্টার’ নাম পেয়ে যাওয়া মুস্তাফিজের সেই শুরুর ধারটা অনেকখানিই কমে গেছে। তবে এ বছর আবার নতুন করে নিজেকে ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১৮ ওয়ানডে খেলে এ বছর ২৯ উইকেট নিয়ে সর্বাধিক উইকেট শিকারির তালিকায় বিশ্বের মধ্যে ৬ নম্বরে অবস্থান হলেও পেসারদের মধ্যে তার অবস্থান ২ নম্বরে। আর ইকোনমি রেটের দিক থেকে সার্বিকভাবে অবস্থান তিনে। এমন নৈপুণ্যের কারণেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছেন মুস্তাফিজ। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ঘোষিত এই একাদশে শ্রীলঙ্কান পেস অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা ও ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ ছাড়া আর কোন পেসারই নেই। এ বছর ক্রিকেট আঙিনায় উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ওয়ানডেতে আরেকবার দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সে অনেকেই ছাড়িয়ে গেছেন নিজের সেরা অর্জনকে। মুস্তাফিজ বিস্ময়কর কোন কীর্তি না গড়লেও ছিলেন ধারাবাহিক। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) বিবেচনায় তার পুরস্কারও পেয়েছেন বাংলাদেশী পেসার। তাদের নির্বাচিত বর্ষসেরা একাদশে রয়েছেন মুস্তাফিজ। অবশ্য ২০১৮ সাল ছিল স্পিনারদের বছর। বিশেষ করে লেগস্পিনাররা ছিলেন বেশ আলোকিত ও আলোচিত। স্পিনারদের দাপুটে নৈপুণ্যের মাঝেই ধারাবাহিক ছিলেন মুস্তাফিজ। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের মনে ভয় ছড়ানো বাঁহাতি এই পেসার ইকোনমি রেট ধরে রেখে প্রয়োজনের মুহূর্তে উইকেট এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। মুস্তাফিজের বোলিংয়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল মিতব্যয়িতা। এ বছর ১৪৯.৫ ওভার বোলিং করেছেন। ওভারপ্রতি ৪.২০ হারে রান দিয়েছেন মাত্র ৬৩০। তারচেয়ে এ বছর উইকেট শিকারে ওপরে থাকা ৫ বোলারের মধ্যে ইকোনমি রেটে শুধু এগিয়ে দুই আফগানিস্তানের স্পিনার। ১৭ বছর বয়সী অফস্পিনার মুজিব-উর-রহমান মাত্র ৩.৮৪ ইকোনমিতে ২০ ম্যাচে ৩৭ উইকেট নিয়ে বছরের চতুর্থ সেরা উইকেট শিকারি। আর সমান ম্যাচে ৪৮ উইকেট নিয়ে বছরের সেরা উইকেট শিকারি লেগস্পিনার রশিদ খানের ইকোনমি ৩.৮৯। সেরা পাঁচে আছেন শুধু একজন পেসার। জিম্বাবুইয়ের টেন্ডাই চাতারা ১ উইকেট বেশি নিয়েছেন মুস্তাফিজের চেয়ে। সে জন্য ৩ ম্যাচ বেশি খেলেছেন। তিনি ৫.২৩ ইকোনমি ও ২৭.০৩ গড়ে ৩০ উইকেট নিয়েছেন। অর্থাৎ ইকোনমি ও গড়ে বিশ্বে বছরের সেরা ওয়ানডে পেস বোলার মুস্তাফিজ। তার সেরা বোলিং ছিল ৪৩ রানে ৪ উইকেট। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের বর্ষসেরা একাদশে মুস্তাফিজকে রাখার কারণ হিসেবে জানিয়েছে, তার এশিয়া কাপের পারফর্মেন্স। সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৩ রানে ৪ উইকেট নেয়ার পর ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ১০ ওভারে মাত্র ৩৮ রান দিয়ে পেয়েছিলেন ২ উইকেট। মুস্তাফিজের সঙ্গে একাদশে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে আছেন ভারতের বুমরাহ। এ বছর ১৪ ওয়ানডে খেলে সর্বাধিক ১২০২ রান করা কোহলিকে অধিনায়ক করে ঘোষিত একাদশে ওপেনার ভূমিকায় আছেন তার জাতীয় দল সতীর্থ রোহিত শর্মা ও ইংলিশ ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো। রোহিত দ্বিতীয় সর্বাধিক ১০৩০ রান করেছেন ১৯ ওয়ানডেতে। বেয়ারস্টো ২২ ম্যাচে ১০২৫ রান করে তৃতীয় স্থানে। ওয়ান ডাউনে তারা রেখেছে ২৪ ম্যাচে চতুর্থ সর্বাধিক ৯৪৬ রান করা জো রুটকে। চার নম্বরে নামা কোহলির পর আছেন দারুণ একটা বছর কাটানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিমরন হেটমায়ার। তিনি ১৮ ম্যাচে ৭২৭ রান করেছেন। এই একাদশের উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় ইংল্যান্ডের জস বাটলার। ২৩ ম্যাচে ৬৭১ রান করে তিনি বাংলাদেশী উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের চেয়ে পিছিয়ে আছেন ১৬ নম্বরে। মুশফিক ১৯ ম্যাচে ৭৭০ রান করে বছরের ওয়ানডে ব্যাটিংয়ে ১০ নম্বরে। শ্রীলঙ্কান পেস অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরার সঙ্গে দুই স্পিনার হিসেবে একাদশে আছেন আফগান লেগস্পিনার রশিদ খান ও ভারতীয় চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশ ॥ রোহিত শর্মা, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), শিমরন হেটমায়ার, জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), থিসারা পেরেরা, রশিদ খান, কুলদীপ যাদব, মুস্তাফিজুর রহমান, জাসপ্রিত বুমরাহ।
×