ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোহেল রানা

স্মরণ ॥ বিচারপতি কেএম সোবহান

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

 স্মরণ ॥ বিচারপতি কেএম সোবহান

বিচারপতি কে এম সোবহান (কাজী মাহ্বুবুস সোবহান)-এর আজ ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি বারডেম হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে তিনি হাইকোর্টে বিচারপতি নিযুক্ত হন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ছিলেন ১৯৭২ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৮০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। ১৯৮০ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব জার্মানি এবং চেকোস্লোভাকিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালের ১ জুন জে. এরশাদ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের ক্ষমতাবলে দেশে ফেরত এনে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে যোগদানের আদেশ দেন। ১৯৮২ সালের ১৬ জুন জে. এরশাদ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের ক্ষমতাবলে আপীল বিভাগ থেকে অপসারণ করেন। তার জন্ম ২৫ জুলাই, ১৯২৪। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. এলএলবি, লন্ডনের লিনকন্স ইন- ১৯৫২ সালে ব্যারিস্টার-এট-ল‘ ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৫৬ সাল থেকে তিনি হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৫৬-১৯৭১ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা সিটি ল’ কলেজে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নারী পুনর্বাসন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও বিচারপতি কে এম সোবহান দায়িত্বপালন করেন। বাংলাদেশ সোভিয়েত মৈত্রী সমিতি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৮৬-২০০৭ পর্যন্ত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন- যা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রাইটস নামকরণ হয়। তার উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে ১৯৯০ সালে রোমস্থ স্থায়ী পিপল্স ট্রাইব্যুনালের অন্যতম সদস্য ভোপাল গ্যাস কেসে, ১৯৯২ সালে ঐ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম সদস্য হিসাবে ভোপাল গ্যাস কেসের রায় প্রদান, ঐ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম সদস্য হিসেবে ভিয়েতনামের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে এজেন্ট অরেঞ্জ এবং অন্যান্য গ্যাস প্রয়োগের বিচার এবং ভুটান রিফিউজি সমস্যার তদন্তে আন্তর্জাতিক পিপল্স এনকোয়ারি কমিশনের অন্যতম সদস্য। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে পাকিস্তানের ৩টি নির্বাচনে, শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্ট ও আইন সভার নির্বাচনে, ৩ বার নেপালের নির্বাচনে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন ’৭১-এর ঘাতক ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ বিরোধী মানবাধিকার আন্দোলনের পুরোগামী নেতা। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। লেখক : গবেষক
×