ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন উৎসব হলেও এখন সর্বত্র ভীতিকর পরিস্থিতি ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচন উৎসব হলেও এখন সর্বত্র ভীতিকর পরিস্থিতি ॥ ফখরুল

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৯ ডিসেম্বর ॥ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনী পরিবেশ একেবারেই শূন্য হয়ে গেছে, নির্বাচন একটি উৎসব হলেও কোথাও উৎসবের পরিবেশ নেই। কয়েকদিন আগে এলাকায় এসেছিলাম তখন কিছুটা হাসি ছিল এখন এসে দেখি সে হাসিটাও নেই একেবারে তা মিলিয়ে গেছে, ভয় পেয়ে গেছে সবাই। কারণটা হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে গ্রেফতার, মামলা দিয়ে ত্রাস সৃষ্ট করা হয়েছে। সব জায়গায় একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়েছে, সারাদেশ থেকে খবর আসছে কোথাও দাঁড়ানো যাচ্ছে না। নেতাকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের নাম ধরে ধরে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কোথাও পোলিং এজেন্ট দেয়া যাচ্ছে না। ১০ বছর পর অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচন হচ্ছে, এখানে আনন্দময় পরিবেশ থাকার কথা ছিল, এই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে এটা সহায়ক নয়, এ রকমটি কেউ আশা করিনি। তারপরও আমরা ভোটে আছি। কারণ আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চাই। কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মা-বোনদের সঙ্গে নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে ভোট পাহারা দিতে হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম শনিবার দুপুরে দলীয় নেতাকর্মীদের আটকের বিষয়ে এবং সুষ্ঠু পরিবেশের দাবি জানাতে ঠাকুরগাঁও জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দলের নেতাকর্মীদের বিবেদের বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, এটা সরকারের কুটচাল, একেবারে ভিত্তিহীন অভিযোগ। এগুলো কোনটাই সঠিক নয়। সাইবার ক্রাফের মাধ্যমে অপপ্রচার করা হচ্ছে, তারপরও বিএনপি নির্বাচনে আছে থাকবে। তিনি বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থী নেতাকর্মীরা কোথাও দাঁড়াতে পারছে না, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে ধরা হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য পরীক্ষা, বিএনপি কোথাও দাঁড়াতে পারছে না এটা বিএনপির জন্য কোন পরীক্ষা নয়, বিএনপি দাঁড়াতে পারছে না মানে প্রধান প্রতিপক্ষ দাঁড়াতে পারছে না, নির্বাচনে বিএনপি টিকলে গণতন্ত্র টিকবে বিএনপি না টিকলে বিএনপি টিকবে না। আসলে সরকার পুরো বিষয়টা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, তারা তাদের মতো করে নির্বাচনটা করতে চায়। মির্জা ফখরুল বলেন, বহু জায়গায় আমাদের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করতে পারছি না, তারপরও আমরা নির্বাচনে আছি তার একটি মাত্র কারণ আমরা গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে চাই, আমরা জনগণের শক্তির ওপর বিশ^াস করি, আমরা বিশ^াস করি জনগণ সবকিছু বদলে দিয়েছে এবারও জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে পুরো পরিস্থিতি বদলে দেবে। তার যে আশা সেটা তারা পূরণ করবে। শুক্রবার রাতে ঠাকুরগাঁওয়ে যে ১৪ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মী। আমি এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও এসপিকে জানিয়েছি। এরপরেও কিন্তু আমাদের সাধারণ ভোটার কেউ হতাশ হয়ে পড়বে না। আমারা আশা করি যদি ভাল পরিস্থিতি থাকে তাহলে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাবে। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমানসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ছিলেন। নির্বাচনের নামে প্রহসন ছাড়া কিছুই নয় ॥ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এর কোন অস্তিত্ব নেই। আজকের এই পরিস্থিতিতে কোন ক্রমেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন বাদ দেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। মির্জা ফখরুল শনিবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ে তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আমরা বলতে চাই নির্বাচনের নামে প্রহসন করে লাভ কি। জনগণকে কষ্ট দিয়ে লাভ কি। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হয়রানি করার অর্থ হয় না। মির্জা ফখরুল বলেন, বলে দিলেই হয় উনারা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবেন। রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন। গণতন্ত্র যদি না থাকে এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। মানুষের ন্যূনতম অধিকারগুলো যদি না থাকে তবে গণতন্ত্র চলতে পারে না। নির্বাচন যেদিকে যচ্ছে অর্থহীন হয়ে পড়ছে।
×