ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্ভয়ে ভোট দিন ॥ সেনাপ্রধান

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্ভয়ে ভোট দিন ॥ সেনাপ্রধান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে সারাদেশে সেনাবাহিনীর ৫০ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আরও সেনাসদস্য মোতায়েনের জন্য স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ শনিবার রাজধানীর আজিমপুর কমিউনিটি সেন্টারে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। জেনারেল আজিজ বলেন, আমরা পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি টিম হিসেবে একই সঙ্গে কাজ করছি। কাউকে যেন কেউ ভয়ভীতি দেখাতে না পারে সেজন্য আমরা কাজ করব। আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। জনগণের মধ্যে যাতে কোন ভয়ভীতি কাজ না করে সেজন্য টহল ও নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দিন শেষে আমরা সুন্দর ও সুষ্ঠু একটা নির্বাচন চাই। আমি প্রত্যেক ডিভিশনে ও বিভিন্ন জেলায় গিয়েছি। প্রত্যেক জায়গায় আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, এসপি, ডিসি, কোথাও কোথাও রিটার্নিং কর্মকর্তাও ছিলেন। এছাড়া বিজিবি-র‌্যাবসহ অন্য প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সেনাবাহিনী সদস্যসহ অন্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি গত পাঁচদিন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেছি। অত্যন্ত চমৎকার পরিবেশ দেখেছি। কোথাও হুমকি আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করেছি। সীমান্ত এলাকার বিষয়ে তিনি বলেন, সেসব এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছি, যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। এছাড়া আমাদের দেশের সংখ্যালঘু ও নিরীহরা যাতে ভোটকেন্দ্রে নিরাপদে যেতে পারেন সেজন্য সেনা সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় টহলে যাচ্ছে। সেনাপ্রধান বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি যারা নির্বাচনে হেরে যায়, তারা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চালায় নির্যাতন করে। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্ক। সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে বলব, আমিও এ দেশের সাধারণ একজন নাগরিক। গত ৫ থেকে ৭ দিন সারাদেশ ঘুরে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, গত ৪৭ বছরে এত সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন আমি দেখিনি। নির্বাচনে কিছু না কিছু সহিংসতা হয়। এবারও যে একদম হয়নি তা নয়। তবে এর সংখ্যা অনেক কম। সব ভোটারকে নির্ভয়ে ভোট প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি আমরা আশপাশেই থাকব। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করব যেন কেউ অরাজকতা করতে না পারে। সেটিই আমাদের লক্ষ্য থাকবে। সেনাপ্রধান বলেন, কোন ধরনের সংঘাত, কারও মধ্যে ভয়ভীতি এগুলো যাতে কেউ ঘটাতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়ক হিসাবে কাজ করব। শনিবার থেকে আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। এতদিন আমরা যেটা করেছি এখন থেকে আরও বেশি কিছু করা হবে। জনগণের মধ্যে যেন ভয়ভীতি তৈরি না হয়, সেই আস্থাটা দিতে পারি সেজন্য পেট্রলের সংখ্যা বাড়িয়ে দেব। অন্যান্য সংখ্যার জিনিসও বাড়িয়ে দেব। দিন শেষে আমরা যেটা চাই যে, সুন্দর একটা নির্বাচন সম্পন্ন হোক। ভোটাররা যেন নিরাপদ ও নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন-আপনারা সেটাই করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি বিশেষ করে ঢাকার বাইরের ভোটারদের। এলাকা ভাগ করে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি, কোথাও পুলিশ, কোথাও র‌্যাব, কোথাও বিজিবি সেনাবাহিনী যাচ্ছে। যেহেতু অনগ্রাউন্ড পুলিশের পরই সেনাবাহিনীর সংখ্যা আছে। সারাদেশে আমাদের ৫০ হাজারের উপরে সেনা সদস্য মোতায়েন আছে। তারা কনটিনিউয়াস টহল দিচ্ছে। প্রত্যেকটা ক্যান্টনমেন্টে পর্যাপ্ত সেনা সদস্যকে স্ট্যান্ডবাই রেখেছি। শনিবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে যেন স্বল্প সময়ে পাঠাতে পারি সেজন্য আগে থেকেই নির্দেশ দেয়া আছে। ভোটারদের উদ্দেশে জেনারেল আজিজ বলেন, আমি জনগণের জন্য না, ভোটারদের জন্য বলব, আপনারা নির্ভয়ে ভোট দিতে যাবেন। আপনার ভোটটা দেবেন। আমরা আশপাশেই থাকব। শুধু আমরাই না, অন্যান্য ল’ ইনফোর্স এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে আশপাশেই থাকব। নির্ভয়ে ভোট দিতে যাবেন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব, কেউ কোন অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে। আমরা নিরাপত্তা দেব।
×