ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ ভোট উৎসব ॥ সব প্রস্তুতি শেষ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

আজ ভোট উৎসব ॥ সব প্রস্তুতি শেষ

শাহীন রহমান ॥ দেশের ইতিহাসে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ রবিবার। সারাদেশে ২৯৯ আসনে সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। কোন বিরতি ছাড়াই চারটায় শেষ হবে। এর পরেই ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ শুরু হবে। এদিকে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে ইসির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গোটা নির্বাচনী এলাকা এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। রাতেই ভোট কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে ব্যালট পেপারসহ ভোটের সরঞ্জাম। নির্বাচনে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে কঠোর হস্তে দমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্বে নিয়োজিত সব বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। পাশাপাশি দল-মতের উর্ধে থেকে নির্ভয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শনিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বক্তব্য রাখছিলেন। নির্বাচনী প্রতিযোগিতা যেন সহিংসতায় রূপ না নেয়, সেজন্য অংশগ্রহণকারী দল ও প্রার্থীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তবু সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে। এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ ভোটার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৫ কোটি, ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন। নারী ভোটার রয়েছে ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। এবারে প্রথমবারের মতো ১ কোটি ২৩ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ভোটার তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী ভোটার রয়েছেন ২২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের ভোটের প্রধান নিয়ামক হিসেবে তরুণরাই প্রধান ভূমিকা পালন করবেন। এর বাইরে ভোটারদের বিশাল অংশ রয়েছে নারী। তারাও ভোটের মাঠের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে তরুণ ও নারী ভোটারদের কাছে টানতে নানা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তাদের জন্য উন্নয়নের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা ইশতেহারে ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে এবারের নির্বাচনে দীর্ঘ ১০ বছর পর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবে ক্ষমতাসীন দলের নৌকা এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপির ধানের শীষের মধ্যে। ব্যতিক্রম কিছু ঘটনা বাদ দিলে এই দুই দল ও জোটের প্রার্থীরাই মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন। আগের যে কোন নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচনে ব্যতিক্রম হচ্ছে জোটগত নির্বাচন। ইসির নিবন্ধিত দুই তৃতীয়াংশ রাজনৈতিক দল এবার জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়াও এই জোটের সঙ্গে মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এইচএম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও। অপর দিকে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় রয়েছে। এই জোটের মূল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মাঠে রয়েছে অন্যতম বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। মূলত এই দুই জোটই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন। এই জোটের ড. কামাল ছাড়াও জেএসডির আসম আব্দুর রব, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের কাদের সিদ্দীকী এবং নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাও সক্রিয় রয়েছেন। প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল ॥ এবারের নির্বাচনে ইসির নিবন্ধিত ৩৯ রাজনৈতিক দলই ভোটের মাঠে রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ৭৩৩ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন ১২৮ জন প্রার্থী। কোন দলের কতজন প্রার্থী ॥ এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দলই জোটগত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে আওয়ামী লীগের মহাজোট এবং বিএনপি ও ড. কামালের ঐক্যফ্রন্ট। এর বাইরে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা ভোটের মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। ইসির দেয়া তথ্যমতে, দলগুলোর মধ্যে এলডিপির ৮ প্রার্থী, এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীকে ৪, মহাজেটের শরিক জেপি ১১ জন, এর মধ্যে মহাজোটের সঙ্গে ২ জন, সাম্যবাদী দল ২, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ ৯ জন, (ধানের শীষে ৪), সিপিবি ৭৪, আওয়ামী লীগ ২৬১ (নৌকা ২৭৪), বিএনপি ২৭২ (ধানের শীষ ২৯৭), গণতন্ত্রী পার্টি ৬, ন্যাপ ৯, জাতীয় পার্টি ১৭৬ (মহাজোট ২৫), বিকল্পধারা ২৫ (নৌকা ৩), ওয়ার্কার্স পার্টি ৮ (নৌকা ৫), জাসদ ১২ (নৌকা ৩), জেএসডি ১৯ (ধানের শীষ ৪), জাকের পার্টি ৯০, বাসদ ৪৫, বিজেপি ৩ (ধানের শীষ ১), তরিকত ফেডারেশন ১৭ (নৌকায় ১), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ২৩, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ ৪৮, এনপিপি ৭৯, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ৮ (ধানের শীষ ৩), গণফোরাম ২৭ (ধানের শীষ ৭), গণফ্রন্ট ১৩, পিডিপি ১৪, বাংলাদেশ ন্যাপ ৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১১, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১৮, কল্যাণ পার্টি ২ (ধানের শীষ ১), ইসলামী ঐক্যজোট ২৪, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৫, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২৯৮, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ২৫, জাগপা ৪, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৮, খেলাফত মজলিস ১২ (ধানের শীষ ২), বিএমএল ১, মুক্তিজোট ২, বিএনএফ ৫৭ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ॥ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে সারাদেশে কয়েক স্তরের নিরাপত্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে নিরাপত্তার পাশাপাশি সেনাবাহিনী বিজিবি র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। ইতোমধ্যে নির্বাচনের মাঠে টহল প্রদান অব্যাহত রেখেছে তারা। ইসি কর্মকর্তারা জানান নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। এর মধ্যে ভোট কেন্দ্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রয়েছেন ৬ লাখ ৮ হাজার সদস্য। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর ১ লাখ ২১ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আনসারের সদস্য রয়েছে ৪ লাখ ৪৬ হাজার। প্রথমবারের মতো এবারে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গ্রাম পুলিশকে। এই বাহিনীর ৪১ হাজার সদস্য নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোটের মাঠে নিরাপত্তা রক্ষায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাবাহিনীর ৪১৪ প্লাটুন সদস্য (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন সদস্য)। তারা দেশের ৩৮৯ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছেন। ১৮টি উপজেলায় মোতায়েন করা হয়েছে নৌবাহিনীর ৪৮ প্লাটুন সদস্য। কোস্টগার্ডের সদস্য রয়েছেন ৪২ প্লাটুন। তারা উপকূলীয় এলাকার ১২টি উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছেন। সারাদেশে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে ৯৮৩ প্লাটুন। র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে ৬শ’ প্লাটুন। নির্বাচনের মাঠে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সংখ্যা (র‌্যাব সহ) রয়েছে প্রায় ২ হাজার প্লাটুন। এর বাইরেও সারাদেশে জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের টহল দল নিয়োজিত রয়েছেন। ভোটের মাঠে আচরণবিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচালনায় ১৩২৮ জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আচরণবিধি প্রতিপালন দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ৬৫২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে থাকছেন ৬৭৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনী অপরাধ বিচারের জন্য বিচারিক হাকিম নিয়োজিত করা হয়েছে ৬৪০ জন। নির্বাচনী অপরাধ তদন্তে কাজ করছেন ১২২টি টিম। ভোট কেন্দ্র ॥ এদিক সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সারাদেশে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে ৪০ হাজার ১৮৩টি। এসব কেন্দ্রের প্রতিটিতে প্রধান দায়িত্ব পালন করছেন একজন করে প্রিসাইডিং অফিসার। ভোট গ্রহণের সুবিধার্থে বুথ বা কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি। এসব বুথের দায়িত্বে থাকবেন একজন করে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার। পোলিং বুথে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করছেন ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন পোলিং অফিসার। শনিবার রাতে প্রত্যেক কেন্দ্রে নির্বাচনের ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য সরঞ্জমাদি পৌঁছানো হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইভিএমে ভোট ॥ এবারই প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে এবার ছয়টি আসনের সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় ভোট সম্পন্ন করতে ভোটার এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২১ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৪ জন ভোটার এবার ইভিএমে ভোট দিচ্ছেন। ইভিএমে ভোট নেয়ার জন্য ৮৪৫টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সারাদেশে ৩শ’ আসনের মধ্যে রংপুর-৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২, ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩ এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। পর্যবেক্ষক ॥ ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবারের নির্বাচনের মাঠে দেশের ৮১টি প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯শ’ জন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এর বাইরে ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ হতে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকছেন ৩৮ জন। কূটনৈতিক ও বিদেশী মিশনের কর্মকর্তা রয়েছেন ৬৪ জন। বাংলাদেশের দূতাবাস/হাইকমিশন বা বিদেশী সংস্থার কর্মরত বাংলাদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৬১ জন। নির্বাচনে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরে ২ জন বিভাগীয় কমিশনারকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন ৪৯২ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি ২৩ জন, এডিসি ১০ জনসহ মোট রিটার্নিং এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন ৫৮২ জন। যেভাবে মোবাইলে এসএমএসে জানা যাবে ভোট কেন্দ্র ॥ দেশের সব মহানগর এলাকার ভোটাররা মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস করেই তাদের ভোটকেন্দ্র ও ভোটার নম্বর জেনে নিতে পারবেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়েও অনলাইনে জেনে নেয়া যাবে ভোটকেন্দ্রের তথ্য। এজন্য যে কোন মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস অপশনে গিয়ে চঈ লিখে স্পেস দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখে ১০৫ নম্বরে পাঠাতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর এর জায়গায় স্মার্টকার্ডের ১০ ডিজিট বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর লিখতে হবে। কারো এনআইডিতে ১৩ ডিজিট থাকলে এসএমএস করার সময় ওই নম্বরের আগে জন্মসাল যোগ করতে হবে। অর্থাৎ, এই নম্বর হতে হবে ১৭ ডিজিটের। যেমন- চঈ স্পেস এনআইডি নম্বর লিখে ১০৫ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে জানা যাবে কেন্দ্রের তথ্য। এর বাইরে অনলাইনে পাওয়া যাবে ভোটার কেন্দ্র ও নম্বর। যারা অনলাইনে নিজের ভোটকেন্দ্রের তথ্য জানতে চান, তাদের কমিশনের ওয়েবসাইটের গিয়ে নির্ধারিত ঘরে এনআইডি নম্বর অথবা ভোটার নিবন্ধন ফরমের স্লিপ নম্বর এবং জন্ম তারিখ লিখে ক্যাপচা কোডে দেখানো ইংরেজী হরফ লিখে ক্লিক করলেই জানা যাবে ভোটার এলাকা, ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্র। যেভাবে ফল ঘোষণা করা হবে ॥ এবারের নির্বাচনে তিনভাবে ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে। প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে দলের এজেন্টদের সামনে ভোট গণনা করে প্রতিটি কেন্দ্রেই কেন্দ্র ভিত্তিক ফল ঘোষণা করা হবে। ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং অফিসার লিখিত ফলাফল কেন্দ্রে সংশ্লিষ্টদের সরবরাহ করবেন। পরে এ ফলাফল রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন। রিটার্নিং অফিসাররা তা ইসিতে পাঠাবেন। ইসির ফোয়ারা প্রাঙ্গণে স্থাপিত মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করা হবে। এ চত্বরে ইসির দশটি মনিটরের মাধ্যমে ফলাফল প্রদর্শন করা হবে। গত ৮ নবেম্বর ঘোষণা করা হয় একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল। প্রথম তফসিল অনুযায়ী ২৩ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনঃতফসিলে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এই তফসিল অনুসারে প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন ২৮ নবেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয় ২ ডিসেম্বর। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ৯ ডিসেম্বর। প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ নিয়েই ১০ ডিসেম্বর থেকে ভোটের মাঠে নেমে পড়েন। টানা ১৮টি নির্বাচনী প্রচার শেষে আজ তারা পরীক্ষায় বসছেন। আইন অনুযায়ী গত শুক্রবার থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার। এদিকে আজ নির্বাচনের দিনে যান চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ইসির স্টিকার ছাড়া কোন যান চলাচল নিষিদ্ধ। তবে পত্রিকাবাহী গাড়ি চলাচলে কোন বাধা নিষেধ নেই।
×