ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিটিশ রানীর বিশেষ সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের বন্ধু জুলিয়ান ফ্রান্সিস

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

ব্রিটিশ রানীর বিশেষ সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের বন্ধু জুলিয়ান ফ্রান্সিস

বিডিনিউজ ॥ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শরণার্থীদের সহায়তায় কাজ করে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু হয়ে ওঠা ব্রিটিশ নাগরিক জুলিয়ান ফ্রান্সিসকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক কার্যালয় (এফসিও)। এফসিওর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্রিটেনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করায় অসামান্য অবদান রাখায় এফসিও ৯৩টি পুরস্কার ঘোষণা করেছে, যা রানীর নববর্ষের সম্মাননা হিসেবে পরিচিত। এই তালিকার ডিপ্লোমেটিক সার্ভিস এ্যান্ড ওভারসিজ নিউ ইয়ার ২০১৯ অনার্স ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছেন জুলিয়ান ফ্রান্সিস। বিদেশে ব্রিটেন এবং ব্রিটিশ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা, ব্রিটিশ নাগরিকদের সুরক্ষা, স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ড, শিশু কল্যাণ, কূটনীতি, শিক্ষা, পরিবেশের সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য, জনসেবা, বিজ্ঞান ও গবেষণা নিরাপত্তা, বিশেষ শিক্ষা প্রয়োজনীয়তা এবং খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা ব্যক্তিদের ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দেয়া হয়। বাংলাদেশে জুলিয়ন ফ্রান্সিসের অবদান প্রসঙ্গে এফসিওর বিবৃতিতে বলা হয়, পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সহায়তায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘বাংলাদেশের সমাজ এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তিনি অতিদরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক মানবিক এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মূল ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। জুলিয়ান ফ্রান্সিস বাংলাদেশে অত্যন্ত সম্মানিত ও পরিচিত ব্যক্তিত্ব এবং তার কর্মকাণ্ডে সত্যিকার অর্থেই যুক্তরাজ্যের স্বার্থ প্রতিফলিত হয়েছে।’ রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শুক্রবার রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে প্রকাশনা ‘দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটি’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বিদেশী বন্ধু জুলিয়ান ফ্রান্সিস। রানীর বিশেষ সম্মাননা পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় জুলিয়ান ফ্রান্সিস বলেন, ‘এটা সত্যিকার অর্থেই অনন্য এক সম্মাননা। একই সঙ্গে আমি আমার অনেক সহকর্মীকে সম্মান জানাতে চাই, যারা বছরের পর বছর অনগ্রসরদের জীবনমান উন্নয়নে আমার ভাবনা এবং কার্যক্রম নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন।’ অর্ধশতাব্দী ধরে এশিয়ায় নানা উন্নয়ন এবং ত্রাণ কার্যক্রমে জড়িত জুলিয়ান ফ্রান্সিস। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশেই তিনি কাজ করেছেন ২৭ বছর। ভারতেও কাজ করেছে ১৫ বছর। ১৯৬৮ সাল থেকে বিহারে অক্সফামের একটি কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করতেন ফ্রান্সিস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশীদের জন্য কাজ শুরু করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবিরে কাজের জন্য ২০১২ সালে বিদেশী বন্ধুর সম্মাননা দেয়া হয় জুলিয়ান ফ্রান্সিসকে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সমর্থনে এবং পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিসহ বিভিন্ন কর্মসূচীতে সক্রিয় জুলিয়ান ফ্রান্সিস এ দেশে বাস করছেন ১৯৯৮ সাল থেকে। এ বছরই তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। গত ২৩ জুলাই জুলিয়ানের হাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
×