ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মহাজোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

মহাজোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ জেলার চারটি সংসদীয় আসনে ভোটারদের বিশ্লেষণে এগিয়ে রয়েছে মহাজোটের প্রার্থীরাই। সকলেই আশা করছে ভোটের ফলাফলে নীলফামারীর চারটি আসনই মহাজোটের ঘরে বিজয় নিয়ে আসবে। চারটি আসনেই মহাজোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও ঐক্যফন্ট্রের জামায়াতের প্রার্থী। নীলফামারী-১ ॥ জেলার ডোমার-ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-১ আসন। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার লড়ছেন নৌকা প্রতীকে। অপরদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক সংসদ সদস্য জাফর ইকবাল সিদ্দিকী লড়ছেন লাঙ্গল প্রতীকে। আসনটিতে আট প্রার্থীর মধ্যে এই দুই প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষের রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। এ এলাকার ভোটাররা বলছে, ভোটের লড়াই হবে এই তিনজনের মধ্যে। হারজিৎ হবে অল্প ভোটের ব্যবধানে। প্রচারে লাঙ্গল-নৌকা সরব, অনেকটাই নীরবে এগোচ্ছে ধানের শীষ। নীলফামারী-২ (সদর) ॥ নীলফামারী সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-২ আসন। উত্তরবঙ্গের এ আসন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত, বিএনপির অবস্থান তত দৃঢ় নয়। অতীতের কয়েকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জামায়াতের প্রার্থী। এবারও সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে অনেক স্থানীয় ভোটারের কথায়। বিগত ১০ নির্বাচনের মধ্যে আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রথম, দ্বিতীয়, অষ্টম, নবম ও দশম নির্বাচনে বিজয়ী হয়। পঞ্চম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে আসনটি পায় সিপিবি। জাতীয় পার্টি তৃতীয়, চতুর্থ, সপ্তম নির্বাচনে, বিএনপি ষষ্ঠ নির্বাচনে (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি) আসনটিতে বিজয়ী হয়। আসনটিতে এবার রয়েছেন পাঁচজন প্রার্থী। ভোটাররা জানায়, এবার লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের নৌকা আর ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মনিরুজ্জামান মন্টুর ধানের শীষের মধ্যে। নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) ॥ এই জলঢাকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-৩ আসন। এখানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের হয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনে রয়েছেন মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল। জামায়াতের ঘাঁটি বলে পরিচিত আসনটিতে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের জামায়াতের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য আজিজুল ইসলাম। এলাকার ভোটাররা বলছে, আসনটিতে ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের পক্ষে নির্বাচন করে জাতীয় পার্টির কাজী ফারুক কাদের লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছিলেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৮৮। ২০ দলীয় জোটের পক্ষে জামায়াতের আজিজুল ইসলাম দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ৬৬ হাজার ৮৪৯ ভোট পেয়েছিলেন। সেবার ভোটারসংখ্যা ছিল দুই লাখ ৩৪ হাজার ৭৫২। আসনটি থেকে কিশোরীগঞ্জ উপজেলার তিন ইউনিয়ন নীলফামারী-৪ আসনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর এবার ভোটারসংখ্যা দুই লাখ ৩৬ হাজার ১৬৭। নীলফামারী-৪ ॥ সৈয়দপুর ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে নীলফামারী-৪ আসন গঠিত। এখানে মহাজোটের হয়ে লাঙ্গল প্রতীকে মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহসান আদেলুর রহমান। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে ছিলেন বিএনপির সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার। উচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় সুবিধায় রয়েছেন মহাজোটের প্রার্থী। বিগত ১০ নির্বাচনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ প্রথম ও নবম সংসদে, বিএনপি দ্বিতীয়, ষষ্ঠ (১৫ ফেব্রুয়ারি) ও অষ্টম সংসদে, জাপা তৃতীয়, সপ্তম ও দশম সংসদে, ন্যাপ (মোজাফফর) পঞ্চম সংসদে (আওয়ামী লীগের সমর্থনে) এবং চতুর্থ সংসদে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিনিধিত্ব করেছেন এ আসনে। আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় হুইপ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শওকত চৌধুরী। ভোটাররা বলছে, আসনটির অপর পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কেউ না থাকায় মহাজোট অনেকটাই অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এ আসনের অপর প্রার্থীরা হলেন আব্দুল হাই সরকার (আম), সহিদুল ইসলাম (হাতপাখা), স্বতন্ত্র মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ (সিংহ), অপর স্বতন্ত্র রশিদুল ইসলাম (মোটরগাড়ি)।
×