ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ভোট

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

আজ ভোট

আজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ২৯৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থী ১৮৬১ জন। অপরদিকে মোট ভোটদাতার সংখ্যা ১০ কোটি ৪২ লাখের কিছু বেশি। নির্বাচন যে কোন দেশেরই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অংশ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সুনির্দিষ্ট সময়ের ভেতর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সময়ের কাজ সময়ে না করলে নানা প্রশ্ন ও শঙ্কার জন্ম হয়। একটি মহলের দুরভিসন্ধি ছিল দেশে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করা। ফলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে তাদের সুবিধা হয়। কোন অশুভ শক্তি যাতে বেআইনীভাবে ক্ষমতা দখল না করতে পারে সেটির জন্য সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া অতীব জরুরী। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাই হবেন সমগ্র দেশবাসীর নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলই সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করবে। সংসদে বিরোধী দলও তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করবে, এটাই বিধি। আজ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জনমনে স্বস্তি আনবে এবং ভোট প্রদান সত্যিকারের উৎসবে পরিণত হবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের ‘সন্ত্রাসী কর্মকা-’ প্রতিরোধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটের দিন যদি কেউ সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে আসে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার হাতে তাকে তুলে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার, বিএনপি-জামায়াত মিলে ১ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে এবং ৪৪১ জনকে আহত করেছে। আওয়ামী লীগের ১৭০ অফিস-বাড়িঘর তারা ভাংচুর করেছে, ৫৪ স্থানে বোমা হামলা করেছে। পেট্রোলবোমা হামলাও চালানো হয়েছে। ৬৮ স্থাপনা ও যানবাহনে তারা হামলা করেছে। পুলিশের ওপরও তারা হামলা করেছে। তাই আজ ভোটের দিন তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও নাশকতা চালাতে পারে। এবারের নির্বাচনে ভোট বিপ্লব হবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। বিএনপি-জামায়াত ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার নামে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে জাতিকে আশ্বস্ত করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। অপরদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নির্বাচনে নাশকতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব ভোটকেন্দ্র দখলের নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা সংঘবদ্ধভাবে গেরিলা কায়দায় ভোটকেন্দ্র দখলের হুমকি দিয়েছেন। তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট উৎসবকে বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে রয়েছে। পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ব্যাপক সহিংসতা, অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটিয়ে এরই মধ্যে ভীতি সৃষ্টির চক্রান্ত চালাচ্ছে। ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপিয়ে ও নকল বুথ বানিয়ে সিল মারা নকল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর নীলনক্সা করছে।’ এ ছাড়াও বিএনপি-জামায়াতের মদদপুষ্ট একাধিক সংগঠনকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মীকে পর্যবেক্ষক হিসেবে মাঠে নামানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বলাবাহুল্য, বিএনপি-জামায়াতের চরিত্রটাই হলো সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, অস্ত্র চোরাকারবারিসহ নানা অপকর্ম। বিগত নির্বাচনের পর এরা আগুনে পুড়িয়ে শত শত মানুষ মেরেছে। মসজিদে আগুন দিয়েছে, কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। এরা করেনি এমন কোন কাজ নেই। তাই শুধু নির্বাচনের দিনটিতেই নয়, নির্বাচনোত্তর দিনগুলোতেও আশঙ্কা রয়েছে সহিংসতা ও অতর্কিত হামলার। সুতরাং কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই নয়, সাধারণ মানুষকেও সতর্ক থাকতে হবে। সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
×