ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ বাম জোটের

প্রকাশিত: ০২:৪৯, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ বাম জোটের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সব ধরনের ভয়-ভীতি, বাধা উপেক্ষা করে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সরকারের নীল নকশা বানচাল করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। শুক্রবার দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় এ আহ্বান জানান দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। সিপবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে বলেন, বিগত ১০ বছরের দুঃশাসনের ফলে সরকার এখন জনসমর্থনহীন। তাই জনগণের ভোটাধিকারকে সরকার ভয় পায়। সরকার যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই ২০১৪ সালের মতো এবারও খালি মাঠে গোল দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তা না পেরে সরকার এবার সন্ত্রাস, হামলা, হুমকি, গায়ের জোর, রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক শক্তি সবকিছুকে ব্যবহার করে ‘ভোটের আগেই জয়লাভ করার’ আয়োজন করেছে। এ কাজে সরকার সফল হলে আগামী পার্লামেন্ট হয়ে উঠবে জনসমর্থনহীন ‘ভূয়া প্রতিনিধিদের’ পার্লামেন্ট। ফলে গণতন্ত্র আরো বিপন্ন হবে এবং দেশে স্বৈরতান্ত্রিক-এনায়কত্ববাদী-ফ্যাসিবাদী বিপদ বাড়বে। এটি কোনোভাবেই হতে দেয়া যায় না। এজন্য দেশবাসীকে জাগ্রত হতে হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণকে ভোটাধিকার থেকে আবারও বঞ্চিত করার সব আয়োজন ভেস্তে দিতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবেই সরকারের নীল নকশা বানচাল করতে হবে। তার জন্য ‘নিজের ভোট নিজে পাহারা’ দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে। ভোটাধিকার রক্ষায় সমবেতভাবে ও সাহসের সঙ্গে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ‘ভিশন মুক্তিযুদ্ধ ৭১’ বাস্তবায়নে ‘কাস্তে’ মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, গণতন্ত্রকে খর্ব করে ‘এক ভাগ’ মানুষের পকেট ভরার উন্নয়নের বিপরীতে ‘নিরানব্বই ভাগ’ মানুষের শ্রমে ও ঘামে অর্জিত অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুফলকে মানুষের কাছে আনতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিকল্প শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে। শোষণ-বৈষম্যহীন ইনসাফের সমাজ গড়ে তুলতে এবং রুটি-রুজি-অধিকারের জন্য ‘কাস্তে’ মার্কার প্রতিটি ভোট দ্বি-দলীয় ধারার লুটপাটতন্ত্রের কফিনে একেকটি পেরেক ঢুকবে। নেতৃবৃন্দ সিপিবিসহ বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। বাম জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাম জোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, ২৬ ডিসেম্বর সিপিবি’র সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স-এর উপস্থিতিতে বাম জোট মনোনীত নওগাঁ-৪ আসনে কাস্তে প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ডা. ফজলুর রহমানের নির্বাচনী পথসভায় নৌকা মার্কার প্রচার মাইক বাজিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। একই দিন কাস্তে মার্কার নির্বাচনী কর্মী লালবরকে প্রসাদপুর ইউনিয়নের এলেঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়। ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁর জামিন হয়নি। এছাড়া ফেনী, লক্ষীপুর, রাজশাহী সহ বিভিন্ন এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে বলেন, বাম জোটের প্রার্থীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন, ভোটের দিন অবাধ কার্যক্রমের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পাঁয়তারা চলছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, জনমতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যে কোন নীল নকশা বাস্তবায়নের পরিনাম কারো জন্য সুখকর হবে না। তিনি অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নিরপেক্ষ কার্যকরি ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান সকল প্রতিকূলতাকে প্রতিহত করে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে তাঁরা একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারাকে রুখে দিবে।
×