ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অবসরে যাচ্ছেন সবার প্রিয় ডাঃ আবদুল্লাহ

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

 অবসরে যাচ্ছেন সবার প্রিয় ডাঃ আবদুল্লাহ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ অবসরে যাচ্ছেন আগামী সোমবার। অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আবদুল্লাহ বিএসএমএমইউ-এর তিনবারের নির্বাচিত ডিন, মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান। দীর্ঘদিন মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুনাম কুড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসা শাস্ত্রের বই লিখে সারবিশ্বে চিকিৎসক হিসেবে বাংলাদেশের নামকেও উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। তার লেখা চিকিৎসা শাস্ত্রের বই বিশ্বের নানা দেশে পাঠ্য। অবসরে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমকে ডাঃ এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, জীবনে পুরস্কার সম্মান পেয়েছি অনেক। কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচানোর মতো পুরস্কার আর কিছু হতে পারে না। তাছাড়া, চাকরি থেকে অবসরে গেলেও চিকিৎসা সেবা থেকে অবসরে তো যাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহর শেষ কর্মদিবস ও অবসরে যাওয়া উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের হলরুমে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তরুণ চিকিৎসকদের উদ্দেশে ডাঃ আবদুল্লাহ বলেন, জীবনের জন্য লক্ষ্য বা টার্গেট থাকতে হবে। কারও ক্ষতি করা নয়, বরং ভাল কিছু করার প্রবণতা থাকতে হবে। মানুষের জীবনে কিছু করে যাওয়ার মতো সময় খুব অল্পই পাওয়া যায়। এই সংক্ষিপ্ত জীবনের পরিভ্রমণে ভাল কিছু অর্জন করে তা মানুষের মাঝেই বিতরণ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, জীবনে আশাহত হওয়া চলবে না। আমার জীবন নিয়ে আমি আশাহত নই। আমি একটি সফল জীবন যাপন করেছি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, তরুণ চিকিৎসকদের জন্য তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় সব সময়ই তার অভাব অনুভব করবে। অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহর সহধর্মিনী অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগম বলেন, জীবনে সফল হওয়ার জন্য আত্মবিশ্বাস, টার্গেট, সময়ানুবর্তিতা, স্বার্থহীনতা, একাগ্রতা, চেষ্টা ও আশাবাদী থাকাটা খুবই জরুরী। যা ছিল একজন এবিএম আদুল্লাহর জীবনে। এজন্যই তিনি আজ মানুষের ভালবাসার পাত্র হতে পেরেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, অধ্যাপক ডাঃ সাহানা আখতার রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন এবিএম আব্দুল্লাহর সহধর্মিনী অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল হান্নান, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল্লাহ আল হারুন, এ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ ফরিদ উদ্দিন, অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুর রহিম, অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল জলিল চৌধুরী, বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ। অধ্যাপক ডাঃ আবদুল্লাহ ১৯৭৮ সালে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮৪ সালে সৌদিতে যান চিকিৎসক হিসেবে চাকরি নিয়ে। পাঁচ বছর ছিলেন। লোভনীয় সেই ছেড়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ১৯৯২ সালে লন্ডনে যান। লন্ডনের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান থেকে এমআরসিপি ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি। সেই সময় সুযোগ পান কিছু ভাল হাসপাতালে প্রশিক্ষণের। পাস করার পর বাইরের দেশে না গিয়ে তিনি দেশে চলে আসেন দেশের মানুষকে সেবা করার ব্রত নিয়ে। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৬ সালে চিকিৎসা সেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন একুশে পদক। এছাড়াও চিকিৎসা শাস্ত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি লাভ করেছেন বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক পুরস্কার, বাংলার দর্পণ সম্মাননাসহ আরও অনেক পুরস্কার।
×