ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তার চাদরে সারাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

 নিরাপত্তার চাদরে সারাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি। প্রচার শেষে ভোটের অপেক্ষায় দেশবাসী। শঙ্কামুক্ত ভোটের মাঠ নিশ্চিত করতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পড়ছে রাজধানীসহ পুরো দেশ। শুক্রবার ছুটির দিনেও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কে টহলসহ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্ব বিবেচনা করে অনেক ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার নজরদারি থাকছে। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব কেন্দ্রেই শক্তিশালী সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি করা হবে। যাতে কোন ধরনের ঘটনা না ঘটতে পারে। আর নাশকতামূলক ঘটনা ঘটে গেলেও, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে যাতে গ্রেফতার করা যায়, এ জন্যই এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যদিও ঢাকায় কোন ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। শুক্রবার প্রথমবারের মতো রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় সেনা সদস্যদের ব্যক্তিগত যানবাহনের তল্লাশি করতে দেখা গেছে। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে একটি একটি করে ব্যক্তিগত যানবাহন থামিয়ে তারা কাগজপত্র দেখছিলেন। পাশাপাশি যানবাহনে থাকা মালামালও চেক করেছেন তারা। গত বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিয়মিত সেনা টহলের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩৮৯টি উপজেলায় বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ১৫২৩টি টহল পরিচালনা করেছে। এছাড়া গত ২৪ ডিসেম্বর সেনা মোতায়েনের দিন থেকে শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় চার হাজার টহল কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। টহলের পাশাপাশি সেনাবাহিনী তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। যে কোন প্রয়োজনে সার্বিক সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে সেনাবাহিনী। সরেজমিনে দেখা গেছে, সেনা সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কে বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতেই এমন সর্তকতা। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি অলিতে গলিতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবকে টহল দিতে দেখা গেছে। রাজধানীর উত্তরা থেকে র‌্যাব-১ আশপাশের পুরো এলাকায় টহল দিয়েছে। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রিক যে কোন সহিংসতা ঠেকাতে তারা প্রস্তুত। বিভিন্ন স্থানে টহল ও গোয়ন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আর মতিঝিলে র‌্যাব-৩ নিরাপত্তা মহড়া দিয়েছে। মহড়া শেষে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, র‌্যাব-৩ এর অধীন ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআই আছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মতিঝিলের মতো এলাকাও আছে। র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। যে কোন ধরনের পরিস্থিতিতে তারা প্রস্তুত আছে। নির্বাচনের পরদিন থার্টিফাস্ট নাইট থাকায় এবারের নিরাপত্তা থাকছে অনেক কৌশলী। আর পুরো ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে পুলিশও চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু করেছে। নির্বাচন কেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতেই এমন ব্যবস্থা। গুলশানের কূটনৈতিক পাড়া থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে। যে কোন বিশৃঙ্খলা এড়াতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে। সেই সঙ্গে থাকছে বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের হেলিকপ্টার। ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, ঢাকায় শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে পুলিশের। ঢাকা শহরে ভোটের আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ৪২ লাখ। যার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ১৬টি আসন রয়েছে। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হবে।
×