ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে দুইদিনেই ৩০৫ রানের লিড স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের

বোল্ট ঝড়ে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮

বোল্ট ঝড়ে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সিরিজের প্রথম টেস্টে নাটকীয় ড্র করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে মাত্র দু’দিনেই কঠিন সমস্যায় পড়েছে সফরকারীরা। বাজে ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ১৭৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সুরাঙ্গা লাকমাল ও লাহিরু কুমারার ভয়াল গতি দেখে টগবগ করেই ফুটছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। বাঁহাতি এ পেসার তার পছন্দনীয় সতীর্থ টিম সাউদিকে নিয়ে রীতিমতো গতির ঝড় তুলেছেন দ্বিতীয়দিন। ৪ উইকেটে ৯৪ রানে থাকা শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস বোল্টের ঝড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে মাত্র ১০৪ রানে। নিজের স্পেলের শেষ ১৫টি বল করে ৪ রান দিয়ে টানা ৬ উইকেট নিয়ে এই ধ্বংসলীলা চালিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী বোল্ট। তার ৬ উইকেটের পাশাপাশি সাউদি নিয়েছেন ৩টি। পরে দ্বিতীয়দিন শেষে জিত র‌্যাভাল ও টম লাথামের জোড়া অর্ধশতকে মাত্র ২ উইকেটে ২৩১ রান তুলেছে কিউইরা। ফলে এখুনি ৩০৫ রানের বিশাল লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল মাঠটি প্রথমদিন নিয়ন্ত্রণ করেছেন পেসাররা। লঙ্কান পেসারদের দাপটে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড যেমন ১৭৮ রানেই গুটিয়ে গেছে প্রথম ইনিংসে, তেমনি সফরকারীরা ব্যাট হাতে নামার পর সাউদির পেসে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। মাত্র ৫১ রানে ৪ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কার ইনিংসে তখন পর্যন্ত সাউদির শিকার ৩টি এবং কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ঝুলিতে ঢুকেছেন এক লঙ্কান ব্যাটসম্যান। তখনও বোল্ট ঝড় শুরু হয়নি, দারুণ বোলিং করলেও তাকে সাউদি কোন সুযোগ দেবেন এমনটাও মনে হয়নি। এরপর অবশ্য প্রথমদিনের বাকিটা সময় নির্বিঘেœ কাটিয়েছেন এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও রোশেন সিলভা। বোল্ট-সাউদি ঝড়ের সামনে দাঁড়িয়ে তারা শ্রীলঙ্কার প্রথমদিন শেষ করেছিলেন ৮৮ রানে ৪ উইকেটে নিয়ে। তখন পর্যন্ত বোল্টের বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ১০-৫-২০-০। দ্বিতীয়দিনের শুরু থেকেই দুই কিউই পেসার চেপে ধরেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু সাফল্য আসতে অপেক্ষা করতে হয়েছে দিনের পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। লঙ্কান ইনিংসের ৩৭তম ওভারের চতুর্থ বলে বোল্ট প্রথম আঘাত হানেন, ফিরিয়ে দেন ৬৩ বলে ২১ রান করা রোশেনকে সাউদির ক্যাচে পরিণত করে। এর আগে পর্যন্ত বোল্টের বোলিং চিত্র ছিল- ১২.৩-৬-২৬-০। এরপর আর বোল্টকে ঠেকাতে পারেননি লঙ্কান কোন ব্যাটসম্যান। সাউদিকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলেও বোল্ট টানা উইকেট তুলে নিয়েছেন। শুধু একপ্রান্তে ম্যাথুস দৃঢ়তা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু বোল্ট পরের ২.৩ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ৪ রান দিয়ে শেষ ৬ ব্যাটসম্যানকেই হজম করেন তার রাক্ষুসে গতি দিয়ে। ৪ উইকেটে ৯৪ রান থেকে যে ১০৪ রানেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ম্যাথুস ৮৮ বলে সর্বোচ্চ ৩৩ রানে ছিলেন অপরাজিত। আর বোল্টের ঝড় শেষ হয় ১৫-৮-৩০-৬ বিশ্লেষণ নিয়ে। এটি তার ক্যারিয়ারের সপ্তমবার ইনিংসে ৫ উইকেটের বেশি শিকার করার ঘটনা। এর মধ্যে চারবারই পেলেন ৬ উইকেট। অকল্যান্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২ রানে ৬ উইকেট ছিল তার আগের ক্যারিয়ারসেরা। এবার নতুন সেরা বোলিং নৈপুণ্য দেখালেন অকল্যান্ডে দুইবার, ওয়েলিংটনে একবার ৬ উইকেট নেয়া বোল্ট। প্রথম ইনিংসেই ৭৪ রানের লিড পাওয়া কিউইরা দ্বিতীয় ইনিংসে নির্ভার হয়ে সাবলীল ব্যাটিং করেছে। দুই ওপেনার র‌্যাভাল ও লাথাম উভয়ে করেছেন ৭৪ রান করে। উদ্বোধনী জুটিতেই এসেছে ১২১ রান। র‌্যাভাল ১৬২ বলে ৮ চারে ৭৪ রানে সাজঘরে ফেরার পর লাথাম থামেননি। তিনি ২১৩ বলে ৮ চারে ৭৪ রানে দিনশেষে অপরাজিত। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে আরও ৬৮ রানের জুটি গড়েছেন। উইলিয়ামসন ৭৫ বলে ৫ চারে ৪৮ রান করার পর কুমারার বলে আউট হয়েছেন। দ্বিতীয়দিন শেষে অসমাপ্ত দ্বিতীয় ইনিংসে কিউইরা ২ উইকেটে ২৩১ রান তুলে এখন এগিয়ে ৩০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। লাথামের সঙ্গে ২৭ বলে ২৫ রান করে ক্রিজে আছেন অভিজ্ঞ রস টেইলর। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ১৭৮/১০; ৫০ ওভার (সাউদি ৬৮, ওয়াটলিং ৪৬; লাকমাল ৫/৫৪, কুমারা ৩/৪৯) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ২৩১/২; ৭৯ ওভার (র‌্যাভাল ৭৪, লাথাম ৭৪*, উইলিয়ামসন ৪৮, টেইলর ২৫*; দিলরুয়ান ১/৫৭, কুমারা ১/৬০)। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস- ১০৪/১০; ৪১ ওভার (ম্যাথুস ৩৩, রোশেন ২১; বোল্ট ৬/৩০, সাউদি ৩/৩৫)। * দ্বিতীয়দিন শেষে
×