ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কতটুকু দিতে পারলাম সেটাই আমার কাছে বিবেচ্য ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮

কতটুকু দিতে পারলাম সেটাই আমার কাছে বিবেচ্য ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়, জাতির পিতার কন্যা হিসেবেই আমি গর্ব অনুভব করি। এই পদটাকে কিভাবে উপভোগ করব সে চিন্তা করি না, মানুষের কল্যাণে নিজেকে কতটুকু নিয়োজিত করতে পারলাম আমার কাছে সেটাই বিবেচ্য। প্রধানমন্ত্রিত্ব, এটা একটা দায়িত্ব পেয়েছি। কাজ করার সুযোগ পাই এর মাধ্যমে। দেশের কল্যাণ করার একটা সুযোগ পাই। সেটাই আমার কাছে বড়। বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে সরকারের মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে একথা বলেন। বিদায়বেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে তিনি সরকারী কর্মচারীদের তাদের দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমি থাকি বা না থাকি, আপনাদের কাছে আবেদন এটাই থাকবে, আপনারা আপনাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। কারণ, আপনারা সরকারী কর্মচারী। আপনাদের বেতন-ভাতা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকাতেই হয়। কাজেই তাদের সেবা করা, কল্যাণ করা আপনাদের দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি কিন্তু নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিন্তা করি না। আমি হচ্ছি বাবার কন্যা ‘ফাদারস ডটার’। সন্তান হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করি। আমি জাতির পিতার কন্যা। আমি আপনাদের কাছে এটুকুই চাইব, আপনারা সব সময় আমাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা হিসেবে একান্ত আপনজন হিসেবেই দেখবেন। সেটাই আমি চাই। সেটাতেই আমি গর্ববোধ করি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়। সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান বলেন, ১০ বছর একটানা থাকায় অনেক কাজ করে যেতে পেরেছি। এখনও বহু কাজ বাকি। সেটাও নির্ভর করে বাংলাদেশের জনগণের ওপর। আগামী ৩০ তারিখে যদি তারা ভোট দেন তাহলে আবার আসতে পারব এবং কাজগুলো শেষ করতে পারব। আর তা না হলে মানুষের ভাগ্য মানুষ বেছে নেবে। এখানে আমার কোন ক্ষোভ বা দুঃখ নেই। কেননা, আমার নিজের জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি একথা সব সময় চিন্তা করি যে, আমার বাবা এদেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তার মনে যে আকাক্সক্ষা ছিল মানুষকে নিয়ে, সেই আকাক্সক্ষা যেন আমি পূরণ করে যেতে পারি। যেন তাঁর আত্মা শান্তি পায়। বাংলাদেশের মানুষ আজ আর কষ্টে নেই, তারা দুবেলা পেট ভরে খেতে পারছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক বেগম নাসরিন আফরোজ, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মুজিবুর রহমান, প্রটোকল অফিসার খুরশীদ আলম, সহকারী পরিচালক মোঃ মকবুল হোসেন অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী পরে তার কার্যালয়ের মেইন গেটের সামনের দেয়ালে স্মৃতিময় ১৯৫২ থেকে ’৭১-এর মুক্তিসংগ্রাম পর্যন্ত বাঙালীর গৌরবের ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি টেরাকোটার ম্যুরাল পরিদর্শন করেন। ছাত্রলীগ নেতা মুহম্মদ আরিফুজ্জামান নুর নবী এই ম্যুরালের ভাস্কর।
×