ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোট-সন্ত্রাসীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন;###;ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫ জেলাবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাস রোধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮

সন্ত্রাস রোধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রচারের শেষদিন বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের আরও পাঁচটি জেলায় নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়ে উন্নতি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আরেকবার দেশ সেবার সুযোগ দেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিজয়ী হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নৌকা মার্কাই একমাত্র উন্নয়ন দেবে, সমৃদ্ধি দেবে। আমি আশা করি, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বাংলার জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে আবার একটি বিজয় নিয়ে আসবে। আমি বিশ্বাস করি, জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেবে এবং আমরা আবার বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করব। নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের ‘সন্ত্রাসী কর্মকা-’ প্রতিরোধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের মানুষকে অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। ভোটের দিন যদি কেউ সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে আসে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার হাতে তাকে তুলে দিতে হবে। সন্ত্রাসী কর্মকা- ঠেকাতে আওয়ামী লীগের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের মানুষ শান্তি চায়। এই নির্বাচনটাও হবে শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। সবার অংশগ্রহণে এ নির্বাচন অর্থবহও হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের নিরাপদে চলাচল করার অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের কোন বিশ্বাস নেই। এরা জানে তারা নির্বাচনে হয়ী হবে না, হেরে যাবে। তাই হেরে যাওয়ার প্রাক্কালে যেকোন রকমের ছোবল মারতে পারে। সেদিকে আপনারা সজাগ থাকবেন। জনগণের জোয়ার আমাদের পক্ষে, ইনশাল্লাহ! আমরা জয়ী হবো। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারের শেষদিন বিকেল তিনটার দিকে ধানম-িতে নিজ বাসভবন সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, পঞ্চগড়, যশোর ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। একই সময় নিজ নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়ার নির্বাচনী জনসভায় টেলিফোনে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এসব জেলার আওয়ামী লীগের সকল প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানালে জেলার সর্বস্তরের মানুষ দু’হাত তুলে এবং স্লোগান দিয়ে ভোট দেয়ারও অঙ্গীকার করেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনমতেই তারা যেন সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে না পারে। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আর আপনারা নিরাপদে থাকবেন। কারণ, ইতোমধ্যে বিএনপি-জামায়াত মিলে ১ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে এবং ৪৪১ জনকে আহত করে। আওয়ামী লীগের ১৭০ অফিস-বাড়িঘর তারা ভাংচুর করেছে, ৫৪ স্থানে বোমা হামলা করেছে। পেট্রোলবোমা হামলাও চালানো হয়েছে। ৬৮ স্থাপনা ও যানবাহনে তারা হামলা করেছে। পুলিশের ওপরও তারা হামলা করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের এই চরিত্রটা বদলাতে হবে। কারণ, এই সন্ত্রাসী কর্মকা- বাংলাদেশের মানুষ কখনও পছন্দ করে না। কখনও পছন্দ করবে না। আমি জানি, বিএনপি-জামায়াতের চরিত্রটাই হলো সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, অস্ত্র চোরাকারবারিসহ নানা অপকর্ম। ’১৩, ’১৪ ও ’১৫ তে এরা আগুনে পুড়িয়ে শত শত মানুষ মেরেছে। মসজিদে আগুন দিয়েছে, কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। এরা করেনি এমন কোন কাজ নেই। বিএনপি-জামায়াত জোটের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা শুধু ধ্বংস করতে জানে। তারা জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছে, বাংলাভাই সৃষ্টি করেছে। এরা শুধু মানুষের ক্ষতি করতে পারে। কাজেই এই ধরনের জঙ্গী, সন্ত্রাসী, যারা দেশের সম্পদ লুটপাট করে, দেশের সম্পদ পাচার করে, এতিমের টাকা আত্মসাত করেÑ এরা বাংলাদেশের মানুষকে কিছু দিতে পারবে না। অতীতেও পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় জঙ্গী দমনে সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে জঙ্গী, সন্ত্রাস, মাদক দূর করে মানুষের জীবনে শান্তি-নিরাপত্তা দিতে চাই। মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে অভিযান শুরু হয়েছে সেটা অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় এবং তার সুফলটা মানুষ পায়। আগামীতে ক্ষমতায় এলে ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া ও দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের বিদ্যুত খাতের উন্নয়ন, দারিদ্র্যের হার কমানো, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, সারাদেশে ডিজিটাল সুবিধা বিস্তৃত করা, প্রতিটি উপজেলায় সরকারী স্কুল স্থাপন, মিনি স্টেডিয়াম করাসহ নানা উন্নয়নের চিত্র এ সময় তুলে ধরেন। নেতাকর্মীদের নিরাপদে চলাচল করার অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চলবেন। এই জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসীদের কোন বিশ্বাস নেই। এরা যেহেতু জানে তারা নির্বাচনে জয়ী হবে না। তারা হেরে যাবে। তাই হেরে যাওয়ার প্রাক্কালে যেকোন রকমের ছোবল মারতে পারে। সেদিকে আপনারা সজাগ থাকবেন। আর তারা তাদের প্রচার চালাক। যত দল, তারা নির্বিঘেœ প্রচার চালাবে। এতে কেউ কোন বাধা দেবেন না দয়া করে। জনগণের জোয়ার আমাদের পক্ষে। কাজেই আমরা এগিয়ে যাব। ইনশাল্লাহ! আমরাই জয়ী হবো। নৌকা মার্কাই একমাত্র উন্নয়ন দেবে, সমৃদ্ধি দেবে। এরা সন্ত্রাসী, জঙ্গীবাদ ধানের শীষে ভোট চায়। এদের কোনমতেই ভোট দেয়া যাবে না। নৌকা শান্তি দেয়, উন্নয়ন দেয়, নৌকা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কাজেই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে আবার যেন সরকার গঠন করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি। আমি সেটাই দেশবাসীর কাছে চাই। আমাদের স্টাফ রিপোর্টার যশোর থেকে জানান, যশোর টাউন হল ময়দানে আয়োজিত বিশাল মতবিনিময় সভায় ঢাকার সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নিয়ে যশোরবাসীর কাছে নৌকায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। যশোর একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। পদ্মা সেতুর সঙ্গে যশোর পর্যন্ত রেলসংযোগ করে দিচ্ছি। সেটা যশোর থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত যাবে। যশোর-খুলনা রাস্তা চার লেনে উন্নীত হচ্ছে। যশোর বেনাপোল রাস্তার উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তাঘাট, ব্রিজ সার্বিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, গত নির্বাচনে যশোরবাসী ভোট দিয়ে ৬ আসনেই নৌকার প্রার্থীকে জয়যুক্ত করেছিল। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে যশোরবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। নৌকায় ভোট দিলে উন্নয়ন হয়। নৌকায় ভোট দিলে সমৃদ্ধি হয়। নৌকায় ভোট দিলেই দেশ এগিয়ে যায়। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যশোরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করে বহু মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল, ভাংচুর করেছিল। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল বলে রক্ষা করতে পেরেছিলাম। আমরা জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদ দেখতে চাই না। জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান ছিল সেটি অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী এ সময় যশোরের ৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে উপস্থিতি জানান দেন যশোর-১ আসনের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের ডাঃ ইয়াসির উদ্দিন, যশোর-৩ কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৪ রণজিত কুমার রায়, যশোর-৫ স্বপন ভট্টাচার্য্য এবং যশোর-৬ আসনের প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় সেখানে উপস্থিত সবার কাছে জানতে চান নৌকায় ভোট পাব কি না। এসময় হাজার হাজার মানুষ জোরালো কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন ৬টি আসনেই নৌকার প্রার্থীরা বিজয়ী হবে। প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাকর্মীকে উদ্দেশে করে বলেন, আপনার নৌকা মার্কার ভোট দেয়ার আহ্বান পৌঁছে দেবেন। আমি নৌকা মার্কায় ভোট চাই। নৌকা বিজয়ী হলে দেশ এগিয়ে যাবে। বাকি উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করব। আমরা অবশ্যই চাই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এই দুটি উৎসব পালন করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করতে চাই। ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে চাই। ২১০০ সালে আমরা ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন করব। দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এদেশে সুখে বসবাস করতে পারবে। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব, এটাই আমাদের অঙ্গীকার। জাতির কাছে আমরা নৌকায় ভোট চাই। যশোরবাসীর কাছে ভোট চাই। নিজস্ব সংবাদদাতা ইফতেখারুল অনুপম টাঙ্গাইল থেকে জানান, টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নিয়ে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আটটি আসনেই নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার জন্য টাঙ্গাইলবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনের দলীয় প্রার্থী ড. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের তানভীর হাসান ছোট মনির, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আতাউর রহমান খান, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটু, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের প্রার্থী একাব্বর হোসেন, টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের প্রার্থী এ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাদের বিজয়ী করার জন্য টাঙ্গাইলবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। অন্যদিকে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে জাতীয় পার্টি তথা মহাজোটের প্রার্থী শহীদউল্লাহ আল মুনিরের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি এই আসনের বর্তমান এমপি ছানোয়ার হোসেনকে উদ্দেশে করে বলেন, তুমি বসে আছ কেন? এসে নৌকা মার্কায় ভোট চাও। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী জনসভায় দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে সেগুলো বাস্তবায়ন করেছি এবং অনেক বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। কাজেই আমি দেশবাসীকে বলব উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের আরেকটিবার দেশসেবার সুযোগ করে দিতে। নিজস্ব সংবাদদাতা কৃষ্ণ ভৌমিক পাবনা থেকে জানান, জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সরকারী এডওয়ার্ড কলেজ মাঠের জনসমাবেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পাবনাবাসীর কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, নৌকায় ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়। আর ধানের শীষে ভোট দিলে দুর্নীতি, লুটপাট, অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রবাজি, জঙ্গীবাদ, মানি লন্ডারিং সৃষ্টি হয়। তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে দেশে অবাধ, সুুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্যই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপ আহ্বান করেছিলেন। তার আত্মবিশ^াস আছে তার দুই শাসনামলে তিনি দেশের জন্য যে উন্নয়ন করেছেন তাতে জনগণ নৌকা মার্কাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে আবারও ক্ষমতায় আনবে। তিনি তার শাসনামলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, জনগণ আর অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তিনি আগামী দিনের উন্নয়ন পরিকল্পনাসহ চলমান মেগা প্রকল্পগুলো শেষ করার জন্য পুনরায় নৌকা মার্কা প্রতীককে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। এ সমাবেশে পাবনা-১ আসনের প্রার্থী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, পাবনা-২ আসনের আহম্মদ ফিরোজ কবির ও পাবনা-৫ আসনের প্রার্থী গোলাম ফারুক প্রিন্সকে পরিচয় করে দিয়ে এবং নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকা পাবনা-৩ আসনের প্রার্থী এ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন এবং পাবনা-৪ আসনের প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীককে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পাবনা-৫ আসনের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী গোলাম ফারুক প্রিন্স ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল। কুমিল্লা থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লা টাউন হল মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নিয়ে কুমিল্লাবাসীকে আওয়ামী লীগের সকল প্রার্থীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গত ১০ বছরের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়, দেশ এগিয়ে যায়। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিন, আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেব। এ সময় দলের সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারসহ অন্যান্য আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলের সর্বস্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মী, সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্স উপলক্ষে নৌকা মার্কার স্লোগানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী টাউন হলে সমবেত হন। এসময় নৌকার পক্ষে এক উৎসব আমেজের সৃষ্টি হয়, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।
×