ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকাই সিনেমা এবং টিভি নাটক ২০১৮

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

ঢাকাই সিনেমা এবং টিভি নাটক ২০১৮

দেখতে দেখতে কালের ¯্রােতে হারিয়ে যেতে চলেছে আরও একটি বছর। ক’দিন বাদে জীবন থেকে মহাকালের গর্ভে তলিয়ে যাবে ২০১৮ নামের বছরটি। ৩৬৫ দিনের বছরটির অসংখ্য স্মৃতি বেঁচে থাকবে অগুনতি মানুষের কাছে। দরজায় ২০১৯। নতুন বছর নতুন সমীকরণ। মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ আনন্দ-বিনোদন। সে ক্ষেত্রে শোবিজ অঙ্গন এবং তারকাদের সারা বছরের সাফল্য ব্যর্থতরা হিসাব মেলাতে গেলে স্বাভাবিকভাবে চলে আসে উল্লেখযোগ্য কাজ বা ঘটনা। ২০১৮ সাল কেমন ছিল সিনেমা-নাটকের জন্য! বিনোদন পাঠকদের এমন আগ্রহের কথা ভেবে চলতি বছরের প্রশংসিত বেশ কিছু নাটক ও ব্যবসা সফল সিনেমা নিয়ে আনন্দকণ্ঠ পাঠকদের জন্য বিশেষ আয়োজন, সালতামামি-২০১৮। লিখেছেনÑ রুহুল আমিন ভূঁইয়া চলচ্চিত্র চলতি বছর ২০১৮ বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে। এ বছর ঢাকাই চলচ্চিত্রে নিরেট ৪৮টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। বছর জুড়ে এসব ছবিতে অভিনয় করেছেন ছোট-বড় অনেক তারকা। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই দর্শক সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন, আবার অনেকে ব্যাপক সমালোচনায় হারিয়ে গেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এবার সিনেমা মুক্তি পেয়েছে কম। তেমনি কমে গেছে সফল ছবির সংখ্যাও। এসব ছবির মধ্যে ব্যবসা সফল হয়েছে মাত্র পাঁচটি ছবি। এগুলো হচ্ছে- ‘পোড়ামন টু’, ‘ভাইজান এলো রে’, ‘সুপার হিরো’, ‘দেবী’ ও ‘দহন’। ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খানের আটটি ছবি। তার মধ্যে সফলতা পেয়েছে মাত্র দুটি ছবি। সুপার হিরো ও ভাইজান এলো রে। ভারতীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজ প্রযোজিত ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি নির্মাণ করেছেন কলকাতার নির্মাতা জয়দীপ মুখার্জি। এতে ভাইজান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান আর নায়িকা হিসেবে আছেন পায়েল সরকার ও শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি। আর ঈদ উপলক্ষে গত ১৬ জুন দেশের ৮০টি সিনেমা হলে মুক্তি পায় আশিকুর রহমান পরিচালিত শাকিব খান ও শবনম বুবলী অভিনীত ছবি ‘সুপার হিরো’। প্রথম সপ্তাহে ছবিটি ৮০ হলে মুক্তি পেলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে ছবিটি মুক্তি পায় শতাধিক হলে। হালের ক্রেজ সিয়াম। ছোট পর্দায় জনপ্রিয়তা পেয়ে বড় পর্দাতেও সফল। ব্যবসা সফল ‘পোড়ামন-২’ দিয়ে অভিষেক হওয়া এ নায়কের ‘দহন’ সিনেমাটিও প্রশংসিত। দুটি ছবিতেই সিয়াম জুটি বেঁধে অভিনয় করেন পূজা চেরির সঙ্গে। তাদের জুটি দর্শক খুব ভালভাবেই গ্রহণ করেছেন। তাই বলা যায় ছোট পর্দা থেকে রুপালি পর্দায় এসেই সাফল্য লাভ করেন সিয়াম আহমেদ। আসছে নতুন বছর মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত তৃতীয় ছবি ‘ফাগুন হাওয়ায়’। তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধার ভূমিকায় অভিনয় করছেন সিয়াম। ছবিতে প্রথমবারের মতো তিশার সঙ্গে জুটি হয়েছেন। বছরের শেষ দিকে এসে সাহিত্যনির্ভর ব্যবসা সফল ছবি পেয়েছে ঢালিউড। সিনেমার নাম ‘দেবী’। হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ছবিটি সাড়া ফেলে দেয় পুরো দেশে। দেশের বাইরেও ছবিটি নিয়ে হইচই পড়ে যায় প্রবাসী বাঙালীদের মধ্যে। এর আগে এ ধরনের ছবি এতটা ব্যবসায়িক সফলতা পেয়েছে, এমন উদাহরণ নেই। এই ছবিটি প্রযোজনা করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। এটাই তার প্রথম প্রযোজিত ছবি। আর প্রথম প্রযোজনায় সফলতা পেয়েছেন তিনি। সেই সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি দ্বিতীয় ছবি প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছবির নাম রাখা হয়েছে ‘ফুড়ুৎ’। ২০১৮ সালে যে কয়টি সিনেমা মুক্তি পায়। যদিও বেশিরভাগ ছবি হলে দর্শক টানতে পারেনি। অনেক চলচ্চিত্র মুক্তি পেলেও পাঁচটি সিনেমা ছাড়া ব্যবসা সফল হয়নি কোনটাই। তবে ২০১৯ সালে হয়ত ঢাকাই সিনেমা ঘুরে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশা সবার। টেলিভিশন ভাল-মন্দ মিলিয়ে আরও একটি বছর শেষ হতে চলছে। বিচার বিশ্লেষণ তো একটু করতেই হয়। সে হিসেবে গত বছরের চেয়ে ভাল মানের নাটকের সংখ্যাও বেড়েছে, রয়েছে সমালোচনাও। বলার অপেক্ষা রাখে না, টিভি নাটকের উৎসবটা এখন ইউটিউবকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। তবে এবারের নাটক টেলিফিল্মগুলোতে গত বছরের চেয়ে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তেমনি চলতি বছরের দর্শকপ্রিয় নাটকের নাম উল্লেখ করা হলো। নাজমুল রনির ‘জীবনের দিন-রাত’ ও ‘নাটকীয় উপসংহার’। শিহাব শাহীনের ‘বাস স্টাপ’, ‘আদিত্যের মৌনতা’, ‘তুমি যদি বল’, ‘এই শহরে কেউ নেই’, ‘বিনি সুতোর টান’, ‘শেষ পর্যন্ত’ ও ‘কিছু দুঃখ সবারই থাকে’। মাবরুর রশিদ বান্নার ‘ছেলেটা বেয়াদব’, ‘এবার তোরা মানুষ হ’, ‘নিয়তি’, ‘হোম টিউটার’, ‘কতদিন পরে দেখা হলো’, ‘চশমায় লেগে থাকা ভালোবাসা’, ‘মানুষ’, ‘বোন’, ‘লালাই’, ‘আমি তোমার হবো’, ‘ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা’, মাহমুদুর রহমান হিমির ‘প্রিয় তুমি’ সাজ্জাদ সুমনের ‘কলুর বলদ’, ‘কলুর বলদ-২’, ‘দ্বৈরথ’, ‘বৃষ্টি ভেজার দিন’, ‘মানিক চিপা’ ও ‘ক্লাসলেস মোখলেস’। হানিফ সংকেতের ‘বিশ্বাসের নিঃশ্বাস নাই’ ও ‘শেষ অশেষের গল্প’। মাসুদ সেজানের ‘চরিত্র : স্ত্রী’, সাগর জাহানের ‘ফ্যান্টাস্টিক ফ্যাটম্যান’, ‘কথা রেখেছিলাম’, ‘মাধবীলতা’, ‘মাখন মিয়ার শিক্ষিত বউটা’, ‘নীল গ্রহ’, ‘মাহিনের রূপবান বিয়ে’ ও ‘মাছের দেশের মানুষ’। সালাউদ্দিন লাভলুর ‘চিরকুমারের শপথ’, আবু হায়াত মাহমুদের ‘পলিসি কাসেম’, ইমরাউল রাফাতের ‘গোপনে’, গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘গলির মাস্টার মিয়া ভাই’, অনিমেষ আইচের ‘ছায়াগাছ’, সুমন আনোয়ারের ‘জুনিয়র আর্টিস্ট লতিফ’ ও ‘সাদাফুল’। এস এ হক অলিকের ‘আহারে একটুসখানি প্রেম’ ও ‘আমি তোমার হবো’। জাহিদ হাসানের ‘মি. জ্যাক্স রিটার্ন’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘বীথির বানান ভুল’, হিমেল আশরাফের ‘ওগো বধূ সুন্দরী’, ‘শাড়ি’ ও ‘সব গল্প রূপকথা নয়’। চয়নিকা চৌধুরী ‘চাঁদের আলো’, ‘তোমার আমার কথা’, ‘গল্পটি হতেও পারত ভালোবাসার’ ও ‘তোমার আমার কথা’। মাহমুদ দিদারের ‘সিনেমা সিনেমা খেলা’, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘আয়েশা’, আরিফ রহমানের ‘হিটলারের মৃত্যু চাই’, আজাদ কালামের ‘যমজ ১০’, জাকারিয়া সৌখিনের ‘উগান্ডা মাসুদ’, মাহিদুল মাহিমের ‘রং বদল’, ‘বেঁচে থাকুক আমাদের ভালোবাসা’ ও হেলফুল সাইফুল। মেহেদী হাসান জনির ‘নেগেটিভ পজেটিভ’ ও ‘চুপকথা’। ইমরুল রাফাতের ‘পাশাপাশি’, বি. ইউ শুভর ‘হঠাৎ একদিন’, কাজল আরেফিন অমির ‘মেয়ে’ ও ‘পাসপোর্ট’। সোহেল রানা ইমনের ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’, মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘বুকের বাঁ পাশে’ ও ‘শোক হোক শক্তি’। জাহিদ হাসানের ‘যে মাসে সুখ থাকে’, গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘সুগন্ধি বোর্ডিং ও তুমি’। শামস করিমের ‘লক্ষ্মী ছেলে’, মুরসালিন শুভর ‘তোমাকে চাই’ এ ‘শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের স্বার্থে।’ শাফায়েত মরসুর রানার ‘সব মিথ্যে সত্যি নয়’ ও ‘আমার নাম মানুষ’। আলমগীর রুম্মানের ‘গুলজার’, ইমেল হোকের ‘নাইট ওয়াচম্যান’, তানিম পারভেজের ‘নীরার নীল আকাশ।’ জাকারিয়া সৌখিনের ‘জলসাঘর’, আরএইচ সোহেলের ‘সোনা বৌ’। জাহিদুর রহমানের ‘জীবন বাবুর চিঠি’, সাইদুর রহমানের ‘মিঠাই মন্ডা’, রেদওয়ান রনির ‘ঝরা পাতার দিন’, আরিফ খানের ‘যাত্রাপথের গল্প’, আকাশ রঞ্জনের ‘অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ’, আবুল হায়াতের ‘আপোস’, তুহিন হোসেনের ‘লাটিম লাটিম প্রেম’ ও ‘কতটা পথ পেরোলে।’ সিদ্দিকুর রহমানের ‘মেইড ইন ফরেন-৩’, হাবিব শাকিলের সিনেমা জীবন, আশফাক নিপুণের ‘চলছে চলবে, ‘লায়লা তুমি কি আমাকে মিস কর?’, ‘সোনালি ডানার চিল’, ও ‘ফেরার পথ নেই’। তানিয়া আহমেদের ‘বাবার জুতা’, আবরার আতহারের ‘কলি ২.০’, মাহমুদুর রহমানের ‘তোমার অপেক্ষায়’, শামীম জামানের ‘দরদী মজনু’, দীপু হাজরা ‘ভাগের মা’, আদিবাসী মিজানের ‘এ প্লাস’ ও ‘হাই প্রেশার-২’। নাজমুুল হক বাপ্পীর ‘অপেক্ষা’। নাটকগুলো দর্শকের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
×