ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কম্প্রেসার বিস্ফোরণে শ্রমিকের মৃত্যু

শনির আখড়ায় ট্রাক চাপায় দুজনসহ নিহত ৬

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

শনির আখড়ায় ট্রাক চাপায় দুজনসহ নিহত ৬

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কদমতলীর শনির আখড়ায় ট্রাক চাপায় এক বাড়ির মালিকসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। এদিকে একই থানা এলাকায় পৃথকস্থানে কম্প্রেসার বিস্ফোরণ ও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। এ সময় চার শ্রমিক আহত হয়েছে। এছাড়া শাহবাগ থানাধীন পল্টন মোড়ে রাস্তা পারাপারের সময় মালঞ্চ পরিবহনের একটি বাস চাপায় হাসান নামের একজন নিহত হন। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার শান্তপালদিয়া গ্রামে। তিনি মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোডে পরিবার নিয়ে থাকতেন। এদিন সকাল সাতটার দিকে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের কালশী এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাস চাপায় নিহত হন পোশাক শ্রমিক রিপন। তাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার আমিনপুর গ্রামে। রিপনের বাবার নাম ফজর আলী শেখ। বুধবার সকালে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে ট্রাক চাপায় শাহিন নামের এক আনসার সদস্য নিহত হন। বুধবার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর শনির আখড়ার জিয়া সরণিতে ট্রাক চাপায় হারুন-উর রশীদ (৫৫) ও আবুল বাশার (৩০) নামে দু’জন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার ভোর ৫টার দিকে শনির আখড়ার জিয়া সরণিতে ছাপড়া মসজিদের সামনে একটি ট্রাক থেকে ইট নামাছিলেন কয়েক শ্রমিক। নিজ বাড়ির সামনে ইট নামানো শেষে টাকা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন হারুন-অর-রশিদ। এ সময় বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি ট্রাক বেপরোয়াভাবে এসে ওই ইট বহনকারী ট্রাকটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে বাড়ির মালিক হারুন-অর-রশীদ মৃত্যু হয়। পাশের ওই ট্রাকের হেলপার আবুল বাশার গুরুতর আহত হন। পরে আবুল বাশারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ট্রাক চালক হাবিব জানান, ভোরে জিয়া সরণি এলাকায় ইট বোঝাই ট্রাক নিয়ে যান হারুন-অর রশীদের বাড়ির সামনে। পরে তারা ইট নামিয়ে টাকা বুঝে নিচ্ছিলেন হারুন অর রশীদের কাছ থেকে। এ সময় অপর একটি ট্রাক বেপরোয়াভাবে এসে বাড়ির মালিক ও তার ট্রাকের হেলপারকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে বাড়ির মালিক হারুন মারা যান। আর হাসপাতালে নেয়ার পথে হেলপার আবুল বাশারের মৃত্যু হয়। কদমতলী থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, ট্রাকচাপায় নিহত বাশারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর ঘটনাস্থলে নিহত হারুনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক ট্রাকসহ চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কদমতলীতে কম্প্রেসার বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত, আহত ৪ ॥ রাজধানীর কদমতলীতে পৃথকস্থানে কম্প্রেসার বিস্ফোরণ ও বিদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে নাসির (৩৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। এ সময় চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছে। আহতরা হচ্ছে, মোফাজ্জল (৩০), বাবুল (২৮), মাসুম (২০) ও মিঠু (২৩)। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্যামপুরের আলীবহর এলাকায় আলম রাবার ফ্যাক্টরির কম্প্রেসার মেশিনে কাজ করার সময় হঠাৎ বিস্ফোরণে নাসির (৩৫), মোফাজ্জল (৩০) ও বাবুল (২৮) নামে তিন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিরকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত মোফাজ্জল ও বাবুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মোফাজ্জলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতের সহকর্মী হৃদয় হোসেন জানান, সকালে আলম রাবার ফ্যাক্টরির কম্প্রেসার মেশিনে কাজ করছিলেন তারা। এ সময় মেশিনটি হঠাৎ বিস্ফোরণ হলে তারা ছিটকে গিয়ে তাদের তিন সহকর্মী গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেডিক্যাল নিলে ডাক্তার নাসিরকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে একইদিন বিকেলে কদমতলী থানাধীন আলিজান স্টিল মিলে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে মাসুম (২০) ও মিঠু (২৩) নামে দুই শ্রমিক মারাত্মক দগ্ধ হয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডাঃ পার্থ শংকর পাল জানান, মাসুমের শরীরের ৪২ শতাংশ পুড়ে গেছে। আর মিঠুর শরীর সামান্য দগ্ধ হওয়ায় তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। আলিজান স্টিল মিলের কর্মী পলাশ জানান, স্টিলের কাঁচামাল গলানোর পাত্র থেকে গলিত লোহার বুদ বুদ উঠে বৈদ্যুতিক বাতিতে আঘাত করে। পরে এর থেকে বিদ্যুতের তারে আগুন লেগে তা কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে মাসুম ও মিঠু দগ্ধ হন। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কদমতলীকে পৃথক দুইটি কারখানায় দুর্ঘটনায় নাসির নামে শ্রমিক নিহত হয়েছে।
×