ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের ঘোষণা জাপানের

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের ঘোষণা জাপানের

জাপান আগামী বছরের জুলাই থেকে ফের বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশটি আন্তর্জাতিক তিমি কমিশন (আইডব্লিউসি) থেকেও নিজেদের সরিয়ে নেবে বলে জানিয়েছে। বিশ্বের বেশির ভাগ অঞ্চলে বিপন্ন হয়ে পড়া তিমির বাণিজ্যিক শিকার শুরুর এ ঘোষণা আন্তর্জাতিক পরিম-লে ব্যাপক সমালোচনার কারণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি। বিলুপ্তির পথে থাকা তিমির বেশ কয়েকটি প্রজাতি বাঁচাতে ১৯৮৬ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যিক তিমি শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইডব্লিউসি। ১৯৫১ সাল থেকে সংস্থাটির সদস্য জাপান এখন বলছে, তিমি খাওয়া তাদের সংস্কৃতির অংশ। জাপান দীর্ঘদিন ধরে ‘বৈজ্ঞানিক গবেষণা’র নামে বছরে ২শ’ থেকে ১২শ’ তিমি শিকারের সুযোগ পেয়ে আসছিল, শিকার করা তিমির মাংসও বিক্রি করতে পারত তারা। এ কর্মসূচী নিয়ে সংরক্ষণবাদীদের তীব্র সমালোচনাও ছিল। দেশটি যে ফের বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের পথে যাবে তা অনুমিতই ছিল। কিন্তু এ পদক্ষেপ সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান ও তিমির নানা প্রজাতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসবে বলে শঙ্কা প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার। বুধবারের এ ঘোষণার ফলে জাপান আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে মিঙ্কি তিমিসহ আইডব্লিউসি যেসব প্রজাতির সংরক্ষণে কাজ করছে সেগুলোও অবাধে শিকার করতে পারবে। দেশটির সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিহিদে সুগা বলেন, তারা জাপানের নিয়ন্ত্রণে থাকা সমুদ্রসীমা ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বাণিজ্যিক তিমি শিকার সীমাবদ্ধ রাখবেন। এর ফলে এ্যান্টার্কটিকা ও দক্ষিণ গোলার্ধের জলসীমায় তিমি শিকার বন্ধ করবে জাপান, আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করার আগেই এ প্রত্যাশাকে স্বাগত জানিয়েছে সংরক্ষণবাদী গোষ্ঠীগুলো। এক বিবৃতিতে জাপানের সরকার জানিয়েছে, আইডব্লিউসি নিজেদের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ‘টেকসই বাণিজ্যিক তিমি শিকারে সহযোগিতার’ প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে তৎপর নয়। সংস্থাটি কেবল তিমির সংখ্যা সংরক্ষণেই মনোযোগী বলেও অভিযোগ তাদের। জাপানের উপকূলীয় বিভিন্ন সম্প্রদায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তিমি শিকার করে আসছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটিতে মাংসের আকাল দেখা দিলে তিমির মাংসের চাহিদাও বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবশ্য এ চাহিদা অনেকটাই কমে এসেছে। জাপানের সংবাদমাধ্যম আসাহি বলছে, এখন দেশটিতে যে পরিমাণ মাংস বিক্রি হয় তার মাত্র শূন্য দশমিক এক শতাংশ আসে তিমি থেকে। জাপানে ফের বাণিজ্যিক তিমি শিকারের ঘোষণায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস পেইন ও পরিবেশ মন্ত্রী মেলিসা প্রাইস এক যুক্ত বিবৃতিতে টোকিওর সিদ্ধান্তে ‘গভীর হতাশা’ জানিয়েছেন। ‘অস্ট্রেলিয়া সব ধরনের বাণিজ্যিক ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনে তিমি শিকারের বিরোধিতা করে যাবে,’ বলেছেন তারা। দেশের ভেতরেও এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে জাপানের সরকার। সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে গ্রিনপিস জাপান। আগামী বছরের জুনে জাপানে হতে যাওয়া শিল্পোন্নত দেশগুলোর জি-২০ সম্মেলনে টোকিও এ সিদ্ধান্তের কারণে অন্য দেশগুলোর কড়া সমালোচনার ঝুঁকিতে পড়ল বলেও মন্তব্য তাদের।
×