ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাদিয়া তাবাস্সুম বৃষ্টি

অপূর্ণতার ঝুলি ভরে যাক পূর্ণতায়

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

অপূর্ণতার ঝুলি ভরে যাক পূর্ণতায়

কালের গর্ভে আরও একটি সূর্য অস্ত যাবার লগ্ন উপস্থিত। প্রকৃতি তার আপন নিয়মেই জানান দিচ্ছে নতুন বছর আসছে। একটি বছরের বিদায় ও নতুন বছরের আগমনী সময়ে দাঁড়িয়ে ব্যক্তি, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রত্যেকের স্ব-স্ব অবস্থান থেকে কিছু বিষয় হয়ত বিবেচনা করা উচিত। প্রত্যেকের অবস্থান থেকেই অবশ্যই ২০১৮ সালটি কিছু সফলতার গল্প গাথা, কিছু ব্যর্থতার আক্ষেপ মিলেমিশে আছে। সার্বিকভাবে দেখলে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেরিয়ে আজ বাংলাদেশ নামক ভূখ-টি উন্নয়নশীল দেশের পরিচয় বহন করতে শুরু করেছে। তবে নতুন বছরে এই অবস্থান থেকে এগিয়ে যাবার ধারাবাহিকতাকে আরও প্রসারিত করতে আমাদের প্রয়োজন এ মুহূর্তে কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়ানো এবং নিজেদের ত্রুটিগুলোকে অপারদর্শিতার জায়গা আবিষ্কার করা এবং সঠিক দিকে আগানোর মাধ্যমে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার সঠিক সময় এসেছে। ২০১৮ সালকে বিদায় দেয়ার সঙ্গে একটি প্রশ্ন আমাদের সকলের নিজেদের উদ্দেশ্যে থাকা উচিত, নীতির প্রশ্নে আজও আমরা কতটা আপোসহীন হওয়ার ক্ষমতা রাখি? রণাঙ্গনের বীরসেনারা ৪৬ বছর পূর্বে আমাদের যে স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখ- দিয়ে গেছেন, ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে যে ইতিহাস বাঙালী গৌরবে লেখা আজ আমরা ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালে পদার্পণের লগ্নেও কতটুকুই বা তাদের ঋণ শোধ করতে পেরেছি? এতগুলো বছর ধরে আমরা সততা, শ্রম আর আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁদের চেতনাকে লালন করে হাঁটছি এ কথা অকপটে স্বীকারযোগ্য, কিন্তু সেই কাক্সিক্ষত সৌধে আমরা আজও পৌঁছতে পারিনি। আমাদের দলবদ্ধ মিছিলগুলো শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিসৌধে এসে শেষ হয়, আমরা মহাত্মাদের কাছে নতশিরে বসে থাকি এবং ফিরে আসি কারণ আজও আমরা তাদের ঋণ শোধ করতে পারিনি, এবং সেই ঋণ শোধ হওয়ারও নয়। বর্তমান দৃশ্যেও দেখা যায়, শিক্ষা ও সেবার মতো অত্যন্ত মূল্যবান দুটি খাতে আমরা কিছু দুর্নীতির শিকার হতে দেখি এদেশের মানুষকে যার উদাহরণ ২০১৮ সালও বহন করছে। একটি বছরকে কালের গর্ভে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রত্যেকের জায়গা থেকে নিজেদের ভেতরের পশুত্বকে বিসর্জন দিতে হবে। আমাদের প্রত্যেকেরই সেসব মাঠে-ঘাটে কাজ করে ফসল ফলানো কৃষকের কাছে কিছু ঋণ আছে। আমাদের ঋণ আছে নদীতে মাছ ধরা পরিশ্রমী জেলেদের কাছে ঋণ আছে আমাদের পরিবার ও সমাজের কাছে। আমাদের ঋণ আছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের কাছে। এমন একটি সুন্দর বোধের জন্ম দিক ২০১৯ সাল। দুয়ারে যে নতুন স্বপ্ন ও প্রত্যাশার ঝুলি নিয়ে ২০১৯ সাল কড়া নাড়ছে, সেই নতুন দিনের সূর্য ঘরে ঘরে উদার মানবিক বোধের আলো ছড়িয়ে দিক নতুন সূর্যের আলোয় স্হান করে সংগ্রাম ও নিষ্ঠায় দেশের কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, স্বনির্ভরতার বাতাস এদেশে বইছে আজ, এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে এবং আরও বহুদুর চলতে ২০১৯ সাল হোক নীতির প্রশ্নে আপোসহীন হওয়ার বছর। ২০১৯ সাল হোক সকল মানুষের মাঝে সুন্দর বোধের জন্ম দেয়ার একটি বছর। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় যেন সফলতার রঙিন ফানুস উড়ে আকাশে এই আহ্বান রইল ২০১৯ সালের কাছে। অপূর্ণতার ঝুলি ভরে যাক পূর্ণতায়। বজ্রাপুর রোড, জামালপুর থেকে
×