ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াতের প্রার্থীরা ভোটে থাকতে পারবে কিনা শুনানি আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

জামায়াতের প্রার্থীরা ভোটে থাকতে পারবে কিনা শুনানি আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিবন্ধন হারানো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতা ধানের শীষ প্রতীকে এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে বলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী নাটোর-৪ আসনের আব্দুল আজিজ, গাইবান্ধা-৪ আসনের ফারুক কবির এবং নরসিংদী-৩ আসনের মঞ্জুর এলাহীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে হাইকোর্ট। অন্যদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠানের (চিত্রনায়ক ফারুক) প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে ফারুকের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকল না। জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতের করা রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। নিবন্ধন হারানো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতা ধানের শীষ প্রতীকে এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে বলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি দাখিল করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। আদালত রিট আবেদনটি শুনানির জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন বলে তিনি জানান। এর আগে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ চারজন নিবন্ধন হারানো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ নেতাকে ধানের শীষ প্রতীকে ও স্বতন্ত্র তিনজনের নির্বাচনে সুযোগ দেয়ার বৈধতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জানান। কিন্তু সে আবেদনের ওপর কোন সাড়া না পেয়ে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির, সেক্রেটারি জেনারেল ও মনোনীত ২৫ প্রার্থীসহ মোট ২৯ জনকে বিবাদী করা হয়। প্রার্থীরা হলেন-দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ এ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ ডাঃ শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডাঃ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের, চট্টগ্রাম ১৫- আ ন ম শামসুল ইসলাম এবং কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ। এছাড়া স্বতন্ত্র তিন প্রার্থী হলেন- পাবনা-১ ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, চট্টগ্রাম-১৬ জহিরুল ইসলাম এবং চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ নুরুল ইসলাম বুলবুল। ওই রিটের শুনানি নিয়ে জামায়াতের মোট ২৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশনে করা রিটকারীদের আবেদন ৩ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের পর গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর ২৫ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। যেহেতু নির্বাচন কমিশন তাদের প্রার্থিতা অনুমোদনসহ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে, সেহেতু এ পর্যায়ে এসে আইনগতভাবে তাদের প্রার্থিতা বাতিলের কোন সুযোগ নেই। বিএনপির তিনজনের প্রার্থিতা বািতল ॥ উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী নাটোর-৪ আসনের আব্দুল আজিজ, গাইবান্ধা-৪ আসনের ফারুক কবির এবং নরসিংদী-৩ আসনের মঞ্জুর এলাহীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে হাইকোর্ট। পৃথক পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। ফারুকের বিরুদ্ধের দায়ের করা পার্থের রিট খারিজ ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠানের (চিত্রনায়ক ফারুক) প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে চিত্রনায়ক ফারুকের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকল না। বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন দ্বৈত বেঞ্চ রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন। ঋণ খেলাপী হওয়ার পরও নির্বাচন কমিশনে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি দায়ের করেছিলেন একই আসেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থের আইনজীবী সাজেদ শামীম। রিট আবেদনে ফারুকের মনোনয়ন স্থগিতের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত কেন বে-আইনী ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়। মিল্লাতের দায়ের করা রিট খারিজ ॥ জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। খারিজ হয়েছে ধানের শীষ প্রতীকে চেয়ে করা তার ছেলে শাহাদৎ বিন জামানের রিটও। পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবুল কালাম আজাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম। রশিদুজ্জামান মিল্লাতের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দল্লাহ আল মামুন। শাহাদৎ বিন জামানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
×