ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান প্রথম টেস্ট শুরু আজ

এই পাকিস্তান পারবে?

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

এই পাকিস্তান পারবে?

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সবসময়ই কঠিন। দ্রুতগতির উইকেটে এখানে তাদের অতীত ইতিহাস সুখকর নয়। বছরের শুরুতে র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল ভারতও ২-১এ টেস্ট হেরে এসেছে। এবার দুর্ধর্ষ প্রোটিয়া পেস আক্রমণের মুখে পাকিস্তান। ডেল স্টেইন, কাগিসো রাবাদার সুইং-বাউন্স সরফরাজ আহমেদদের জন্য হয়ে উঠতে পারে সত্যিকারের অগ্নিপরীক্ষার। দ্বিতীয় হোম ভেন্যু আমিরাতে সদ্যই নিউজিল্যান্ডের কাছে ধরাশায়ী হয় ক্রিকেটের আনপ্রেডিক্টেবল এই দলটি। সেখানে সাদা পোশাকে ব্যাটিং ব্যর্থতাই তাদের ডুবিয়েছে। তার ওপর নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় কখনই সিরিজ জয়ের নজির নেই পাকিস্তানের। তবে স্টেইন, রাবাদা, মোহাম্মদ আমির, হাসান আলিদের নিয়ে দু’দলের পেস বোলিং শক্তিশালী। সেঞ্চুরিয়নে ‘বক্সিং ডে টেস্ট’ দিয়ে আজ শুরু তিন ম্যাচের সিরিজ। ১৯৯৪ থেকে এ পর্যন্ত কখনই দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি পাকিস্তান। সর্বোপরি মুখোমুখি ২৩ টেস্টে জয় মাত্র ৪টিতে। হার ১২। ড্র ৭টি। ২০১৩ সালে আগের সফরে গ্রায়েম স্মিথদের কাছে ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল মিসবাহ উল হকের পাকিস্তান। দলটি এই মহূর্তে আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের সাত নম্বরে, দক্ষিণ আফ্রিকা তিনে। সিরিজে পাকিস্তানকে ৩-০তে হারাতে পারলে ইংল্যান্ডকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে যাবে ডুপ্লেসিসের দল। পাকিস্তান কোচ মিকি আর্থার দলের সাফল্যের মূল নিয়ামক হিসেবে ব্যাটনম্যানদের বড় রান সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন, ‘একটি বিষয় আমরা ভালমতোই জানি যে আমাদের সহজেই ২০ উইকেট নেবার ক্ষমতা আছে। কিন্তু আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো স্কোরবোর্ডে ৩৫০-৪০০ রান যোগ করা’ বলেন তিনি। দুই দলেরই বোলিং বিভাগ দলকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকান ভারনন ফিল্যান্ডার ও পাকিস্তানী উঠতি তারকা মোহাম্মদ আব্বাসের ইনজুরিতে উভয় দলই কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছে। ফিল্যান্ডারের আঙ্গুলে চোট লেগেছে, আব্বাস কাঁধের ইনজুরি। যদিও মোহাম্মদ আমির, হাসান আলি ও শাহীন আফ্রিদীকে নিয়ে সাজানো পাকিস্তানী পেস আক্রমণ নিয়ে গর্ব করাই যায়। তাদের সঙ্গে আছেন লেগস্পিনার ইয়াসির শাহ। এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে নেই ফাস্ট বোলার লুঙ্গি এনগিদি। দীর্ঘদিনের হাঁটুর ইনজুরিতে তিনি দলের বাইরে রয়েছেন। স্বাগতিকদের জন্য স্বস্তির বিষয় হচ্ছে সাম্প্রতি টি২০ টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞ ডেল স্টেইন আবারও ছন্দে ফিরেছেন। আর মাত্র একটি উইকেট পেলেই দেশের শীর্ষ উইকেট শিকারি হিসেবে নিজেকে আসীন করবেন স্টেইন। আরও রয়েছেন কাগিসো রাবাদা। তৃতীয় পেসার হিসেবে ডুয়ানে অলিভারকে নিয়ে স্বস্তিতে প্রোটিয়ারা। টি২০ লীগে তিনি সর্বোচ্চ উইকেট দখল করেছেন। আমিরাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজের দুটি ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানী ইনিংসে ধস নেমেছিল। কিন্তু হারিস সোহেল, বাবর আজম, আজহার আলি ও আসাদ শফিক ঐ একই সিরিজে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এবি ডি ভিলিয়ার্সের অবসরের পর কিছুটা হলেও তারা পিছিয়ে পড়েছে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডিন এলগার ও এইডেন মার্করাম ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত মৌসুমে জয়ী হোম সিরিজে ধারাবাহিক পারফর্ম করেছে। কিন্তু এবারের মৌসুমে এখনও ফর্ম ফিরে পাননি। ৩৫ বছর বয়সী হাশিম আমলা বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছেন। ২০১৭ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করার পর ১০ টেস্টে আমলা মাত্র চারটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। এই ম্যাচগুলোতে তার ব্যাটিং গড় ছিল ২৩.৩৬’রও নীচে। অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিস ও উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কক মোটামুটি ফর্মে রয়েছেন। কিন্তু থেনিস ডি ব্রুয়েন ও টেম্বা বাভুমা যথাক্রমে পিঠ ও হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে সম্প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজি ম্যাচগুলোতে খেলেননি।
×